বড়দিন এসে গেল। তাই ক্রিসমাস বুড়োর কাছে ছোটদের আবদার তো থাকেই। কখনও তা উপহারের। কখনও তা বেড়াতে যাওয়ার। ‘অ্যাডভেঞ্চার অফ জোজো’ তেমনই একটা জঙ্গল বেড়ানোর ছবি। চাঁদের পাহাড়ের শংকরের মতোই বেপরোয়া ঘুরতে বেরিয়ে পড়ারও। আর বেআইনি পশুশিকারিদের শায়েস্তা করার।
এর আগে এসভিএফ-এর ব্যানারেই ‘চাঁদের পাহাড়’ ছবি হয়। বাঙালির আবহমান রোমান্টিসিজমের এই উপন্যাসকে নিয়ে ছবি করা সম্পর্কেও নানা সমালোচনাও হয়। এবারেও একই ব্যানার। একই জঙ্গল। এবং ছোটদের ছবি। তাই একটা আশঙ্কা ছিলই। তবে রাজ চক্রবর্তী একেবারে নিরাশ করেননি।
কেন দেখবেন এই ছবি? উত্তর, ছোটরা বড়দিনের ছুটি কাটাবে, তাই। আর কোনও দাবি নেই এই ছবির। স্রেফ নিখাদ অ্যাডভেঞ্চার। বরং বাঙালিদের প্রবাদ হয়ে গিয়েছে, শিশুরা আর বই পড়ে না। মাঠে খেলে না। আইপ্যাডে খেলে। আর ডিপ্রেসড হয়। তাই প্রতি স্কুলে একটা কাউন্সেলিং সেল রাখা। এই ছবি সেই অসুখ থেকে খানিক মুক্তি দেয়। সদানন্দের খুদে জগৎ ফিরিয়ে দেয় বললেও ভুল হয় না। এটুকুই।
ছোটদের অভিনয় দাগ কাটে।
আরও পড়ুন: মুভি রিভিউ: কৃত্রিম হিরোগিরিতে ছবি ‘জিরো’ হয়েই থেকে গেল
আরও পড়ুন: মুম্বইতে জমজমাট পার্টি, দেখুন প্রিয়ঙ্কা-নিকের রিসেপশনের অ্যালবাম
জোজো ছুটিতে অরুণাচল প্রদেশে আত্মীয়দের বাড়ি যাবে। সেখানে তার আলাপ হবে তার দাদা আর স্থানীয় বন্ধুদের সঙ্গে। স্থানীয় বন্ধুরা জঙ্গলের মানুষ। তারাই জানাবে জোজোকে, বন গরম। চেনাবে জঙ্গল। চেনাবে চোরাশিকারিদের। যারা দুষ্টু লোক। যারা বাঘ বা শিশু বা স্থানীয়দের খুন করতেও পিছপা হয়না, পয়সার জন্য। জোজোর বইয়ে পড়া রূপকথা ভেঙে যাবে। ছোট্ট জোজো বড় হবে। এবং প্রতিশোধ নেবে। তাকে সাহায্য করবে তার আত্মীয়-বন্ধুরা। এবং বন্যপ্রাণ স্বয়ং। জোজো দুষ্টু লোকেদের হারাতে পারবে? জানতে আপনার শিশুকে নিয়ে যান হলে।
এ ছবি ভাল লাগে দেখনদারি নেই তাই। স্রেফ সরল জার্নি আছে। তবে পাশাপাশি কিছু প্রশ্নও আসে মনে। একটা ছোট্ট শিশুর মুখে অত ভারী সংলাপ? সত্যিই কিছু জায়গায় বেমানান লাগে। অবাক লাগে ভাবতে, আমরা এখন কত উন্নত প্রযুক্তির ভিএফএক্স দেখছি। আর এ ছবির ভিএফএক্স কত সাধারণ! মিউজিক, ভিএফএক্স নিয়ে কি আরও ভাবা যেত না? আরও কি ভাবা যেত না প্লট নিয়ে? ছোটদের ছবি তো কম হয়নি বাংলা ভাষায়। ‘বাড়ি থেকে পালিয়ে’ বা ‘পথের পাঁচালী’, কম তো বিস্ময় লুকিয়ে নেই আমাদের সংস্কৃতির ভাঁড়ারে! আর একটু কি যত্ন নেওয়া যেত না?
তবু বলব, ছোটদের অভিনয় বিশেষ ভাবে দাগ কাটে। ভাল লাগে পদ্মনাভ দাশগুপ্তের অভিনয়। এবং লোকেশনের জঙ্গল দেখে তো হারিয়েই গেলাম কিছু সময়ের জন্য। এন্ড স্ক্রোল কখন যে চলে এল বুঝতেই পারিনি!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy