শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন সঙ্গীতশিল্পী সবিতা চৌধুরী। বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। বুধবার রাত দু’টো নাগাদ কলকাতার বাইপাসে, মেয়ে অন্তরা চৌধুরীর বাড়িতে তাঁর জীবনাবসান হয়।
মৃত্যুর বেশ কয়েক দিন আগে থেকে সঙ্গীত শিল্পী অন্তরা চৌধুরীর কাছেই ছিলেন সবিতা। পারিবারিক সূত্রের খবর, জানুয়ারি মাসে সবিতা দেবীর ফুসফুস ও থাইরয়েডে ক্যানসার ধরা পড়ে। প্রথমে চিকিৎসার জন্য তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় মুম্বই। ১৯ মে ফের তাঁকে কলকাতায় আনা হয়। তার পর থেকে তাঁর ইচ্ছেয়, বাড়িতেই চলছিল চিকিৎসা। বৃহস্পতিবারই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
সবিতা চৌধুরীর মৃত্যুতে বাংলার সঙ্গীত জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটারে জানান, শিল্পীর মৃত্যুতে তিনি গভীর ভাবে শোকাহত। শিল্পীর পরিবারের প্রতি সমবেদনাও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
১৯৪৫ সালে জন্ম। প্রথমে ভারতীয় গণনাট্য সঙ্ঘের সদস্য ছিলেন সবিতা। পরে বম্বে ইয়ুথ কয়্যারে গান গাইতে এসে আলাপ সলিল চৌধুরীর সঙ্গে। সেখান থেকে প্রেম, তার পর বিয়ে। তবে শুধু সুরকার সলিল চৌধুরীর স্ত্রী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন না সবিতা। গায়িকা হিসেবে সঙ্গীতজগতে নিজের আলাদা জায়গা তৈরি করে নিয়েছিলেন তিনি।
সবিতাদেবীর গাওয়া প্রথম গান স্বামী সলিল চৌধুরীরই সুরে, ‘মরি হায় গো হায়’। পরে তাঁর গাওয়া আরও অনেক আধুনিক গান কয়েক দশক ধরে জনপ্রিয় হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে ‘ও ঝর ঝর ঝর্না’, ‘বিশ্বপিতা তুমি হে প্রভু’, ‘ঝিলমিল ঝাউয়ের বনে ঝিকিমিকি’, ‘মনোবীনায় এখনই বুঝি’— ইত্যাদি।
সলিল-সবিতার চার সন্তান, অন্তরা, সঞ্চারী, সুকান্ত ও সঞ্জয়। কিছু দিন আগেই জার্মানি থেকে কলকাতায় এসে মাকে দেখে গিয়েছেন সঞ্চারী। বৃহস্পতিবার খবর পেয়ে আমেরিকা থেকে রওনা হয়েছেন বড় ছেলে সুকান্ত। মুম্বই থেকে কলকাতায় এসেছেন সঞ্জয়। এ দিন দুপুর তিনটেয় সবিতা চৌধুরীর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় রবীন্দ্র সদনে। সেখানে সঙ্গীত জগতের তারকারা উপস্থিত ছিলেন শ্রদ্ধা জানাতে।