১৬ জানুয়ারির সেই রাত আজও সইফ আলি খানের স্মৃতিতে টাটকা। আর ছ’দিন কাটলেই তাঁর উপর ঘটে যাওয়া হামলার এক মাস পূর্তি। পুলিশকে বয়ান দেওয়া ছাড়া সংবাদমাধ্যমে সে ভাবেও মুখ খোলেননি তিনি বা করিনা। তাই নিয়ে অনেক জল্পনা। অবশেষে তাঁর উপরে হামলার পরে বাড়ির বাকিদের কী হয়েছিল, তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে জানালেন অভিনেতা। নবাব-পুত্রের কথায়, “সারা শরীর থেকে রক্ত ঝরছে, দেখে তৈমুর প্রচণ্ড ভয় পেয়ে গিয়েছিল। আমাকেই আঁকড়ে অসহায়ের মতো জিজ্ঞাসা করেছিল, ‘বাবা, তুমি কি মরে যাবে?’”
একই অবস্থা করিনারও। মধ্যরাতে নিজের বাড়িতে হামলা। স্বামী গুরুতর আহত। কী করে তাঁকে বাঁচাবেন, কিছুতেই বুঝতে পারছিলেন না তিনি। অভিনেত্রী শেষে নাকি চিৎকার করে আশপাশের সকলকে ডাকছিলেন। যদি কেউ এসে সইফকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু পড়শিরা নাকি ঘুমে অচৈতন্য! কেউ করিনার ডাক শুনতে পাননি। পরিবারের সকলকে আতঙ্কিত দেখে শেষে হাল ধরেন সইফ। তিনি করিনা-তৈমুরকে আশ্বস্ত করে বলেন, “তোমরা চিন্তা কোরো না। ঠিক আছি। আমি মরব না!” ইব্রাহিম-সারা আলি খানের কথাও বলেন। জানান, ওঁরাও সে রাতে তাঁর পাশে ছিলেন। শেষে এক বন্ধু আর বছর ছয়েয়েকের তৈমুর সেই রাতে অটোয় করে লীলাবতী হাসপাতালে নিয়ে যান গুরুতর আহত সইফকে।
পাশাপাশি ‘তশন’ অভিনেতা ১৬ জানুয়ারির রাতে কী কী ঘটেছিল তাঁর বর্ণনাও দিয়েছেন।
সইফের কথায়, “সে দিন সন্ধ্যায় করিনা বান্ধবীদের সঙ্গে পার্টিতে গিয়েছিল। পরের দিন ভোরে আমার একটি কাজ ছিল। তাই আমি যাইনি। বেবো বাড়িতে ফেরার পর আমরা কিছু ক্ষণ গল্প করি। তার পর ঘুমোতে যাই। কিছু ক্ষণ পরে জেহ্-র দেখভালকারী গীতা এসে আমাদের ঘুম থেকে তোলেন। বলেন, এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি ছুরি হাতে জেহ্কে ধরে রয়েছে। আমার কাছে টাকা চাইছে! ঘড়িতে রাত তখন দুটো।” আচমকা ঘুম ভাঙায় নিজেকে ধাতস্থ করতে কিছুটা সময় লেগেছিল অভিনেতার। তার পরেই করিনাকে নিয়ে ছোট ছেলের ঘরের দিকে দৌড়ন তিনি।
আরও পড়ুন:
সেখানে গিয়ে দেখেন, আনুমানিক বছর তিরিশের এক ব্যক্তি হাতে ছুরি বা করাত জাতীয় কিছু অস্ত্র জেহ্-র দিকে তাক করে রয়েছেন। বিছানায় লাঠির মতো কিছু একটা রাখা। ছেলেকে ওই অবস্থায় দেখে কাণ্ডজ্ঞান খুইয়ে বসেন সইফ। আগুপিছু না ভেবেই ঝাঁপিয়ে পড়েন আততায়ীর উপরে। বাধা পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন হামলাকারী। ধ্বস্তাধ্বস্তির মধ্যেই ছুরি দিয়ে কোপাতে থাকেন সইফকে। যার জেরে অভিনেতার শরীরে এত ক্ষত! ছুরির এক একটি আঘাত সইফ সে রাতে মুখ বুজে সহ্য করেছেন স্রেফ সন্তান, পরিবারকে বাঁচাতে।