প্রশ্নটা যতটুকু ছিল, উত্তরটাও সেইটুকু বলে শেষ করলেই ভাল হতো! তা না করে নিজের পরামর্শ দিতে গিয়ে টুইটারে মহা হেনস্থা হতে হল বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেট্টিকে।
আইসিএসই পাঠ্যক্রমে সম্প্রতি জে কে রোলিংয়ের হ্যারি পটার সিরিজ থেকে শুরু করে টিনটিন, অ্যাসটেরিক্স — সবই অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছিল বোর্ড। তৃতীয় শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণির স্কুলপড়ুয়াদের পড়ানো হবে এই সব বই। সাধারণ ছাত্রছাত্রী থেকে শিক্ষাবিদ এবং অভিভাবক, অনেকেই বোর্ডের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন।
শিল্পা শেট্টিকেও প্রশ্ন করা হয়েছিল এই সূত্রে। তিনিও বাকিদের মতো এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। কিন্তু সেখানেই থামেননি। তিনি বলেন, ‘‘লর্ড অব দ্য রিঙ্গস বা হ্যারি পটার পড়লে বাচ্চাদের কল্পনার জগৎ সমৃদ্ধ হবে। সৃষ্টিশীলতাও বাড়াতে সাহায্য করবে এই সব বই।’’ তার পরেই তাঁর সংযোজন, ‘‘জর্জ অরওয়েলের ‘অ্যানিমাল ফার্ম’-ও পাঠ্যক্রমে রাখা যেতে পারে। এই বই থেকে বাচ্চারা শিখতে পারে কী ভাবে পশুপাখিকে ভালবাসতে হয় এবং যত্ন নিতে হয়!’’ একটি ইংরেজি দৈনিকের কাছে এই মন্তব্য করেছিলেন শিল্পা। তা প্রকাশিত হওয়ার পর পরেই টুইটারে ঝড় ওঠে।
পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়ন-স্তালিন জমানার ইতিহাসের উপরে ভিত্তি করে ১৯৪৫ সালে জর্জ অরওয়েল লেখেন ‘অ্যানিমাল ফার্ম’। শিল্পা শেট্টির ‘অভিনব’ মন্তব্য শুনে টুইটারে প্রশ্ন উঠেছে, এই নভেলা নিয়ে কতটুকু জানেন তিনি। কারণ বইটি সম্পর্কে তাঁর মন্তব্যে ‘ভুল’ নয়, অজ্ঞতাই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে!
শিল্পাশেট্টিরিভিউজ হ্যাশট্যাগে টুইটারে এর পরে শুরু হয় আলোচনা। ‘অ্যানিমাল ফার্ম’ নিয়ে শিল্পার মন্তব্য শোনার পরে কেউ লিখছেন, ‘ফিফটি শেডস অব গ্রে’ ছবি রং করার দারুণ বই। বাচ্চারা এটা পছন্দ করবে!’’ কারও ব্যঙ্গ, ‘‘হোমার সিম্পসনে সেই উক্তি মনে পড়ে যাচ্ছে। ‘টু কিল আ মকিংবার্ড’ বইটা মকিংবার্ড মারার ক্ষেত্রে কোনও উপযোগী পরামর্শ দেয়নি আমায়!’’ কেউ লিখছেন, ‘ইনভিজিবল ম্যান’ হচ্ছে আরবিআই গভর্নর উর্জিত পটেলকে নিয়ে লেখা। টুইটারে এমন ঠাট্টার তোড়ে শিল্পা চুপ।
সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে সেলিব্রিটিদের নিয়ে সমালোচনা-হাসাহাসি অবশ্য নতুন নয়। এর আগে এমন বিদ্রুপের শিকার হতে হয়েছে বলিউডের আর এক অভিনেত্রী সোনম কপূরকেও।
গত বছর সেপ্টেম্বরে বৃহন্মুম্বই পুরসভা মাংসে নিষেধাজ্ঞা চাপানোয় বিভিন্ন মহলে আপত্তি উঠেছিল। সেই সময় মুখ খুলেছিলেন সোনমও। কিন্তু অসহিষ্ণুতা নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি টুইটারে লিখেছিলেন, ‘‘আমাদের দেশ তৃতীয় বিশ্বেই রয়ে যাবে। কিছু অসহিষ্ণু, নারীবিদ্বেষী, সঙ্কীর্ণ মানুষের জন্য।’’ গোটা বিষয়টিতে নারীবিদ্বেষের কী খুঁজে পেয়েছিলেন সোনম তার কোনও ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। তবে টুইটারে তাঁর মন্তব্য নিয়ে আপত্তি ওঠায় তিনি শিল্পার মতো চুপ করে থাকেননি। পাল্টা জবাব দিয়ে লড়াই চালিয়ে যান টুইটার-আমোদীদের সঙ্গে।