Advertisement
১৯ মার্চ ২০২৪

সচেতন করতে শর্ট ফিল্ম ‘শেষ উৎসব’

সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘আপলোড’ করা তো বটেই সচেতনতা বাড়াতে স্কুল, কলেজেও ছবিটি দেখানোর ব্যবস্থা করার কথা ভাবছেন বিশ্বজিৎবাবু।

শর্ট ফিল্মটির একটি দৃশ্য।

শর্ট ফিল্মটির একটি দৃশ্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দিনহাটা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৮ ০০:৩৮
Share: Save:

হেলমেট না পরে মোটরবাইক চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় দুই পরিচিতের মৃত্যু হয়েছে। সেই শোক ভুলতে পারছিলেন না দিনহাটার বাসিন্দা, স্কুল শিক্ষক বিশ্বজিৎ সাহা। আর কেউ যাতে এমন ভাবে দুর্ঘটনায় না পড়ে, তাই সচেতনতা বাড়াতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে কিছু একটা করার তাগিদ জমছিল মনে মনে। সেই উদ্যোগেই তৈরি হয়েছে শর্টফ্লিম ‘শেষ উৎসব’। রবিবার ছবিটির আনুষ্ঠানিক শুভমুক্তি হবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘আপলোড’ করা তো বটেই সচেতনতা বাড়াতে স্কুল, কলেজেও ছবিটি দেখানোর ব্যবস্থা করার কথা ভাবছেন বিশ্বজিৎবাবু। পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন পথ নিরাপত্তা নিয়ে করা কর্মসূচিতে শর্টফিল্মটি দেখানোর ব্যবস্থা করার ব্যাপারে। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “একটু সচেতনতা, সতর্কতা থাকলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা অনেক কম থাকে। ওই খামতিতেই দু’বছরের মধ্যে আমার এক বন্ধু ও এলাকার পরিচিত ঘনিষ্ঠ ভাইকে মোটর বাইক দুর্ঘটনায় হারাতে হয়েছে। তাই ব্যক্তিগত উদ্যোগে সচেতনতা বাড়াতে শর্ট ফিল্মটি তৈরি করেছি। পুলিশের অনুষ্ঠান থেকে স্কুল, কলেজ— যত বেশি জায়গায় দেখান যায় সেই ব্যাপারে চেষ্টা করছি।”

সরকারি , বেসরকারি উদ্যোগে পথ নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে নানা কর্মসূচি হচ্ছে। তা হলে শর্ট ফিল্ম তৈরি করা কেন? বিশ্বজিৎবাবুর যুক্তি, ‘‘সেটা হচ্ছে আমিও মানছি। কিন্তু এক জন নাগরিক হিসেবেও তো কিছু সামাজিক দায়িত্ব থাকে। তা ছাড়া স্থানীয় স্তরে ওই ভাবনায় খুব বেশি শর্ট ফিল্ম হয়েছে বলে জানা নেই। কিন্তু পর্দায় দেখা, শোনার রেশটাই যে সহজে মনে গেঁথে যায়।’’

প্রায় ১৭ মিনিটের ওই ছবির নাম ‘শেষ উৎসব’। হেলমেট না পড়ে বাইক চালানোর জেরে দুর্ঘটনায় পড়ে এক যুবকের মৃত্যু ও তার পরে পরিবারের দুর্দশা নিয়ে ছবির কাহিনি এগিয়েছে। বাইক চালানোর সময় মোবাইল ব্যবহারে দুর্ঘটনার আশঙ্কা, গতি বাড়িয়ে চালানোর বিপদও দেখানো হয়েছে। ছবির মূল চরিত্র উৎসবের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বিশ্বজিৎবাবু। তাঁর স্ত্রী চরিত্রেও রয়েছেন বিশ্বজিৎবাবুরই ঘরনী পারিজাত দেবী। তিনি বলেন, “পরিচিতের মৃত্যুর ঘটনাটা বাড়িতে ও প্রায়ই বলত। মন খারাপ করে বসে থাকত অনেক সময়। তাই নিজেকেও ওর ভাবনায় সামিল করতে চেয়েছি।”

ছবিটির নির্দেশনা করেছেন প্রীতম দত্ত। দিনহাটার বিভিন্ন এলাকায় শ্যুটিং হয়েছে। বিশ্বজিৎবাবু যে স্কুলে চাকরি করেন, তাঁদের অনেকেই ওই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। এক শিক্ষকের কথায়, আগেও নাবালিকা বিয়ে বন্ধে শর্ট ফিল্ম করেন তিনি। দিনহাটার এসডিপিও কুন্তল বন্দোপাধ্যায় বলেন, “স্কুলের তরফেই বিষয়টি শুনেছি। সচেতনতা বাড়ানোর কাজে ছবিটি ব্যবহার করা যায় কিনা, সেটাই দেখতে হবে।” আগামী রবিবার দিনহাটার নৃপেন্দ্র নারায়ণ স্মৃতি সদনে শর্ট ফিল্মটি মুক্তির প্রস্তুতি তুঙ্গে। এক বাসিন্দার কথায়, পেশার বাইরে গিয়ে এমন ভাবনাটাই বড়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE