ঐন্দ্রিলা-বিক্রমের অনস্ক্রিন রসায়ন যতটা গভীর, অফস্ক্রিনেও তাঁরা একে-অপরের সবচেয়ে কাছের বন্ধু। কিন্তু কয়েক মাস ধরে ইন্ডাস্ট্রির অনেকের কাছেই এই চেনা গল্পটা যেন একটু অন্য রকম ঠেকছে! দু’জনের বন্ধুত্বের শিকড় আরও গভীরে প্রবেশ করেছে। আর তাতেই নাকি নড়েচড়ে বসেছেন ঐন্দ্রিলার দীর্ঘ দিনের বয়ফ্রেন্ড অঙ্কুশ!
ঐন্দ্রিলা-বিক্রম বেশ কয়েক বছর পরে আবার জুটি বেঁধেছেন ‘ফাগুন বউ’-এ। প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে এই ধারাবাহিকের সেটে মাঝেমধ্যেই চলে আসেন অঙ্কুশ। প্রথম দিকে ব্যাপারটাকে কেউ বিশেষ পাত্তা দেননি। কিন্তু কোনও কিছু যখন ‘স্বাভাবিক’-এর চেয়ে ‘অতিরিক্ত’ হয়ে যায়, চোখে পড়ে তখনই। বিষয়টা নিয়ে ইদানীং সেটে চলছে বেশ কানাকানি। ঐন্দ্রিলাকে চোখেচোখে রাখতেই নাকি নায়কের এ হেন ‘গেস্ট অ্যাপিয়ারেন্স’। এ ব্যাপারে ঐন্দ্রিলাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বললেন, ‘‘আমরা অঙ্কুশকে ডেকে পাঠাই বলেই ও আমাদের সেটে আসে। আর শুটিংয়ের ফাঁকে তিন জনে একসঙ্গে আড্ডা মারি।’’ একই প্রশ্ন বিক্রমকে করা হলে তিনি হেসে বললেন, ‘‘আমাদের বন্ধুত্বের বয়স কম করে ন’বছর। সেই ‘সাত পাকে বাঁধা’ ধারাবাহিকে কাজ করার সময় থেকেই। এত বছর পরে আমাদের সম্পর্ক নিয়ে অঙ্কুশ দুশ্চিন্তা করছে, ব্যাপারটা আমাদের তিন জনের কাছেই বেশ মজার।’’
মাস কয়েক আগে ‘ফাগুন বউ’-এর কলাকুশলী আউটডোর শুটিংয়ে গিয়েছিলেন কালিম্পংয়ে। সেই সময় অঙ্কুশ তাঁর পরিবারের সকলকে নিয়ে সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন। ঐন্দ্রিলার কথায়, ‘‘সেটা তো আমার কাছে দারুণ সারপ্রাইজ় ছিল! শুটিং শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বিক্রমের অনুরোধেই আমি ওখানে থেকে গিয়েছিলাম। তার পর হঠাৎই দেখি অঙ্কুশ ওর বাবা-মা আর সেই সঙ্গে আমার ফ্যামিলিরও কয়েক জনকে নিয়ে কালিম্পংয়ে চলে এসেছে। আসলে সেটা আমার জন্মদিন ছিল।’’
অবশ্য ইন্ডাস্ট্রির গুজব, গার্লফ্রেন্ডকে সারপ্রাইজ় দেওয়ার নামে তাঁকে চোখে-চোখে রাখাটাই উদ্দেশ্য অঙ্কুশের! ঐন্দ্রিলাকে সে কথা জিজ্ঞেস করায় তাঁর সোজাসাপ্টা জবাব, ‘‘অঙ্কুশ আমার কাছে কখনও সন্দেহ প্রকাশ করেনি। অতএব ও নিজেই এটা ভাল বলতে পারবে।’’ তবে শোনা যায়, অঙ্কুশের নাকি গার্লফ্রেন্ডের ফোন চেক করার পুরনো অভ্যেস রয়েছে।
যাই হোক, এই ঘটনার কিছু আগে অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলার সম্পর্ক বেশ তিক্ত হয়েছিল তৃতীয় আর এক নায়িকার কারণে। ‘ফিদা’ ছবির শুটিংয়ের সময়ে সে ছবির নায়ক যশের সঙ্গে দেখা করতে যেতেন অঙ্কুশ। সেখানেই নতুন নায়িকা সঞ্জনার সঙ্গে অঙ্কুশের আলাপ এবং তাঁদের বন্ধুত্ব নাকি সেট ছাড়িয়ে বেশ কিছু দূর এগিয়েছিল। মোবাইলে সঞ্জনার সঙ্গে অঙ্কুশের একটি চ্যাট পড়ে ঐন্দ্রিলা প্রচণ্ড রেগেও যান! যদিও অঙ্কুশের কথায়, ‘‘আমি সঞ্জনাকে শুধু ‘হাই’ পাঠিয়েছিলাম। ঐন্দ্রিলা বেশি রি-অ্যাক্ট করে ফেলেছিল। আর ওকে রাগানোর পিছনে কয়েক জনের হাতও ছিল।’’
প্রশ্ন উঠেছে সেখান থেকেই। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের এই দোলাচলে কি ঐন্দ্রিলা কোনও ভাবে বিক্রমের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েছেন?
ভালবাসায় মান-অভিমানের পালা চলেই। কিন্তু সমস্যা হয় সন্দেহ দানা বাঁধলে। আর তখন যদি আকস্মিক প্রবেশ ঘটে তৃতীয় ব্যক্তির? তবে যা রটে, তার সব কি আর সত্যি হয়! এই ফেব্রুয়ারিতেই তো অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা বিয়ে করবেন বলে শোনা গিয়েছিল। এ ব্যাপারে অঙ্কুশ স্পষ্টবক্তা, ‘‘আমার পরিবারের তরফ থেকে কথা হয়েছিল, কিন্তু সেটা শেষ পর্যন্ত আর বিয়ে অবধি গড়ায়নি।’’ আবার নায়িকার কথায়, ‘‘বিক্রমের সঙ্গে প্রেম আর অঙ্কুশের সঙ্গে বিয়ের খবর একই সঙ্গে কী করে রটে!’’ বিক্রম অবশ্য মজা করে বললেন, ‘‘আমি এপ্রিলেই ঐন্দ্রিলাকে বিয়ে করতে চলেছি। এ বার দেখি কী খবর হয়!’’
আসলে বন্ধুত্ব ছাড়া যেমন প্রেম পরিণতি পায় না, তেমনই কখনও কখনও বন্ধুত্বের গণ্ডি অতিক্রম করে প্রেমও দরজায় কড়া নাড়তে পারে। ঐন্দ্রিলার কথায়, ‘‘আমরা তিন জনই খুব ভাল বন্ধু। আবার তিন জন পরস্পরকে খুব ভালওবাসি। সেখানে কোনও শর্ত নেই। তা নিঃস্বার্থ, নিখাদ।’’
শেষ পর্যন্ত অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা-বিক্রমের সম্পর্ক কোন খাতে বয়, তার উত্তর সময়ই দেবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy