গত কয়েক দিন ধরেই শিরোনামে অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী মমতাশঙ্কর। ছোটপর্দার একটি জনপ্রিয় নাচের অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘চণ্ডালিকা’-র আধুনিক উপস্থাপন নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। সে বিষয়ে নিজের বক্তব্য রেখেছেন তিনি। তার পর সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি কিছু কথা জানিয়েছেন ঋতুস্রাব এবং সে সংক্রান্ত সচেতনতা-প্রচার নিয়েও। তাতেই বিতর্কের ঝড়।
আরও পড়ুন:
মমতাশঙ্কর জানিয়েছেন, স্যানিটারি ন্যাপকিন এনে দেওয়ার কথা কিংবা ঋতুস্রাব সংক্রান্ত আলোচনা ছেলেদের সঙ্গে করতে পারবেন না। শুধু তা-ই নয়, অভিনেত্রী প্রশ্ন তোলেন, “স্যানিটারি ন্যাপকিনের বিজ্ঞাপনে লাল রং ঢেলে বোঝানোর কোনও প্রয়োজন আছে ঋতুস্রাব কী বা কেমন?”
তার পর থেকেই কটাক্ষে জর্জরিত তিনি। তাঁর মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বহু তারকা। এ বার মমতাশঙ্করের এই মন্তব্যের বিরোধিতা করেও যেন পাশে দাঁড়ালেন সুদীপা চট্টোপাধ্যায়।
মমতার মন্তব্যের পর তাঁকে যে ক্রমাগত আক্রমণ করা হচ্ছে তাতে মনখারাপ সুদীপার। এমনকি তারকাদের নিয়ে সমালোচনা করা জেন জ়ি-দের (যাঁদের জন্ম ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে) একটা পরম তৃপ্তির জায়গা হয়ে উঠেছে বলেই দাবি করছেন সুদীপা। তাই তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘রাজনীতিবিদেরা রোজ কত শত বাজে বলে যাচ্ছেন। কই, তাঁদের নিয়ে তো এত লেখা আর এ রকম হচ্ছে না? কে মাথার দিব্যি দিয়েছে তারকাদের সব সময়ে ঠিক কথা বলতে হবে ?’’
মমতাশঙ্করের সঙ্গে সুদীপার দীর্ঘ দিনের ব্যক্তিগত পরিচয়। তিনি ভাল মানুষ, সাদামাঠা মানুষ, এমন সব সমালোচনায় নিশ্চয়ই কষ্ট পান— ধারণা সুদীপার। তাই অভিনেত্রীর পক্ষ নিয়ে সুদীপা লেখেন, ‘‘ওই স্যানিটারি ন্যাপকিনের বিজ্ঞাপন দেখতে আমার মা-ও পছন্দ করতেন না। তাঁকে আমরা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বোঝাতে চেষ্টা করতে পারি। কিন্তু, এ ভাবে আক্রমণ করাটা বোধহয় ঠিক নয়। আমি ওঁর কথা সমর্থন করছি না, তবে তোমাদের আক্রমণত্মাক ভাবটিকেও সমর্থন করতে পারছি না। সবার আগে আমরা ভারতীয়। ভারতের সভ্যতার একটা ইতিহাস রয়েছে। ‘গ্লোবাল’ হতে গিয়ে সেটাকে বিসর্জন দিতে পারব না।’’ এখানেই থেমে যাননি সুদীপা তিনি আরও লেখেন, ‘‘মমতাশঙ্কর একজন বড় শিল্পী। আমাদের দেশের মাথা উঁচু করেছেন এক বার নয়, বহু বার। তোমরা সবাই কে কী করেছ ভাই, যে তোমার কথা শুনতে হবে?”
তাঁকে নিয়ে শত সমালোচনা হলেও নিজের বক্তব্যে অনড় মমতাশঙ্কর বলেন, “আমি আমার মত জানিয়েছি। আমি কোনও দিন ছেলের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে পারব না। বিশেষ দিনগুলোয় কখনও ওদের বলতে পারিনি, আমায় স্যানিটারি ন্যাপকিন এনে দাও।” পাল্টা প্রশ্নও করেছেন তিনি, “নারীর এই বিশেষ দিনগুলোর কথা পুরুষও জানে। তা বলে ঢ্যাঁড়া পেটাতে হবে কেন? পুরুষের সঙ্গেই বা আলোচনা করতে হবে কেন! ওঁদেরও বিশেষ কিছু শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়া আছে। সেগুলো কি ওঁরা আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেন?”