Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

শীতের আমেজে নাটকে মজবে মেদিনীপুর

আজ, শনিবার উত্সবের সূচনা হবে মেদিনীপুর কলেজের বিবেকানন্দ হলে। প্রথম দিনে থাকছে নিশানের নিবেদন কবিগুরুর ‘রক্তকবরী’।

মহড়া: নাটকের প্রস্তুতি। মেদিনীপুরে। নিজস্ব চিত্র

মহড়া: নাটকের প্রস্তুতি। মেদিনীপুরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৫৩
Share: Save:

নাট্য উত্সবের আসর বসছে শীতের মেদিনীপুরে। আয়োজক ভারতীয় গণসংস্কৃতি সঙ্ঘের ‘নিশান’। সংগঠনের ৫০ বছর পূর্তিকে সামনে রেখেই এই উত্সবের আয়োজন।

তিনদিন ব্যাপী নাট্য উত্সব শুরু হবে আজ, শনিবার। তিনদিনে মোট চারটি নাটক মঞ্চস্থ হবে। প্রস্তুতি একেবারে শেষ পর্যায়ে। অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে একটি উল্লেখযোগ্য নাম নিশান। বহু নজরকাড়া প্রযোজনা উপহার দিয়েছে এই সাংস্কৃতিক সংগঠন। একঝাঁক তরুণ-তরুণী এই প্রযোজনার সম্পদ। উদ্যোক্তাদের পক্ষে পার্থ মুখোপাধ্যায় বলছিলেন, “বেশ কয়েক বছর ধরেই শহরে নাটকের খরা। তার মধ্যেও ধারাবাহিক ভাবে কাজ করে চলেছে নিশান। উপহার দিয়েছে নিত্য-নতুন নাটক।’’

আজ, শনিবার উত্সবের সূচনা হবে মেদিনীপুর কলেজের বিবেকানন্দ হলে। প্রথম দিনে থাকছে নিশানের নিবেদন কবিগুরুর ‘রক্তকবরী’। কাল, রবিবার উত্সবের দ্বিতীয় দিনে থাকছে কলকাতার থিয়েটার ওয়ার্কার্সের নিবেদনে পার্থ মুখোপাধ্যায়ের নাটক ‘নিষিদ্ধ সময়ের বর্ণমালা’। নির্দেশিনায় অশোক ঘোষ। দ্বিতীয় দিনের উত্সবও মেদিনীপুর কলেজের বিবেকানন্দ হলে হবে। পরশু, সোমবার উত্সবের তৃতীয় দিনের নাটক মঞ্চস্থ হবে বিদ্যাসাগর হলে। সে দিন থাকছে গড়বেতার আমরা নবীনের নিবেদনে বাদল সরকারের নাটক ‘শেষ নেই’। নির্দেশনা দেবাশিস পলমলের। ওই দিন আরও একটি নাটক মঞ্চস্থ হবে। ঝাড়গ্রামের কথাকৃতির নিবেদনে রবীন্দ্রনাথ অনুপ্রাণিত দেবলীনা দাশগুপ্তের নাটক ‘নদী ও ঘাটের কথা’। নির্দেশনা কুন্তল পালের।

শহরের এক নাট্যপ্রেমীর মতে, এখন নাটকের চর্চা কমেছে। নতুন প্রজন্মের মধ্যে নাটক নিয়ে তেমন আগ্রহ নেই। নাটকের আঙ্গিক, প্রেক্ষাপট সবই বদলে গিয়েছে। অথচ জেলাতে এখনও অভিনয় নির্ভর নাটক হয়, শুধু সংলাপ নির্ভর নাটকের চর্চা বাড়েনি। তাও স্পট লাইটের আলো যতটা উজ্জ্বল থাকে, নতুন প্রজন্মের উত্সাহে ততটা ঔজ্জ্বল্য থাকে না। ‘রক্তকবরী’ নাটকে অভিনয় করবেন মেদিনীপুরের অসীম বসু। অসীমবাবু পেশায় ব্যাঙ্ককর্মী। নাটক তাঁর নেশা। অসীমবাবু বলছিলেন, “সংস্কৃতির বিকাশের ধারা অব্যাহত রাখতেই নাটককে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।’’

শহর মেদিনীপুরে যে নাটক নিয়ে কোনও দিন মাতামাতি ছিল না তা নয়। একটা সময় ছিল যখন নাটকের হলে ভিড় উপচে পড়ত। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতেন নাট্যমোদীরা।

এখন অবশ্য সে সব অতীত। নাটকের সঙ্গে যুক্ত সকলেই মানছেন, হারিয়ে যাওয়া সুদিন ফেরানো একটা বড় চ্যালেঞ্জ। শহরের এক নাট্যপ্রেমীর কথায়, “নতুন প্রজন্ম নাটক নিয়ে একেবারেই আগ্রহী নয়। আমরা যাঁরা ধারাবাহিক ভাবে নাটকের সঙ্গে যুক্ত রয়েছি, তাঁরা এটা ভাল বুঝতে পারছি।’’ এক সময় নাট্যচার্য্য শিশির ভাদুড়ি মেদিনীপুরে থাকতেন। ছোটবাজারের একটি বাড়িতে থাকতেন তিনি। সে সব এখন শুধুই ইতিহাস।

শহরে নাটকের সুদিন ফেরে কি না তা সময়ই বলবে। তবে আপাতত তিনদিনের জন্য নাট্য উত্সবে মাতবে মেদিনীপুর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

drama festival Event
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE