ইন্ডাস্ট্রিতে বন্ধু নেই
বন্ধুত্ব পালনের দিন হয় না। কিন্তু প্রিয় বন্ধুর সংজ্ঞাও সকলের কাছে এক নয়। আবীর চট্টোপাধ্যায়কে আমরা টলিউডের পার্টিতে অন্য সেলেবদের সঙ্গে গল্পগাছা করতে দেখি। একে অপরের বাড়িতে যাতায়াতও করেন। কিন্তু প্রিয় বন্ধু কে, জিজ্ঞেস করায় জানালেন, টলিউডের কেউ নয়।
আবীর বললেন, ‘‘আমার মতে, একটা বয়সের পর কাছের বন্ধু পাওয়া মুশকিল। আমার বেস্টফ্রেন্ড স্কুলের সময়েই হয়েছে।’’ আর রুদ্রনীল, পরমব্রত, ঋত্বিক... এঁরা? আবীরের কথায়, ‘‘সহকর্মী, কমরেড বলতে পারেন। আসলে আমি খুব ইন্ট্রোভার্ট। হইহই করে আড্ডা দিচ্ছি মানেই সে আমার কাছের বন্ধু হয়ে যাবে না। আমার কাছের বন্ধুরা ইন্ডাস্ট্রির বাইরের।’’ জানালেন, ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে সাধারণত আড্ডা দেন অরিন্দম শীল, অভিজিৎ গুহর সঙ্গে।
আবীর, পরমব্রতদের সঙ্গে গল্পগাছা করতে ভালবাসেন রাইমা সেন। কিন্তু তাঁর বেস্টফ্রেন্ডও স্কুলেরই। ফ্রেন্ডশিপ ডে পালন করেন? ‘‘ধুস! ভ্যালেন্টাইনস ডে সেলিব্রেট করলাম না কোনও
দিন, তো ফ্রেন্ডশিপ ডে,’’ সহাস্য জবাব রাইমার!
স্কুলের প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে এখনও যোগাযোগ রেখেছেন প্রিয়ঙ্কা সরকারও। মনে করেন, ইন্ডাস্ট্রিতে কেউ কারও বন্ধু হতে পারে না— এই ট্যাবুর কারণেই অনেকে সলিড বন্ধুত্ব করতে পারেন না। বললেন, ‘‘কাজের সূত্রে অনেকে বন্ধু হয়। আমার যেমন জয়া, সায়নী, সোহিনী...’’
সহকর্মীরাই তো বন্ধু
ফ্রেন্ডশিপ ডে নিয়ে যিশু সেনগুপ্তকে জিজ্ঞেস করতেই হেসে বললেন, ‘‘আমার মেয়ে এখন এগুলো নিয়ে মাতামাতি করে। এই বয়সে আর এই দিনগুলো পালন করি না।’’
তবে যিশুর কাছে বন্ধুত্ব শব্দটা খুব দামি। বন্ধুর তালিকাও লম্বা। বললেন, ‘‘আমি একটা নাম বলতে পারব না। বাকি সকলে প্রচণ্ড মারবে! সৃজিত যেমন ভীষণ কাছের বন্ধু। ও একদম পরিবারের মতো। এ ছাড়া রুদ্রনীল, রাহুল, ইন্দ্রাশিস আছে। স্কুল-কলেজের অনেক বন্ধু আছে।’’ দেখা যাচ্ছে, ইন্ডাস্ট্রি থেকেই যিশুর অনেক বন্ধু। ‘‘যাদের সঙ্গে প্রত্যেক দিন বাঁচি, যারা আমার বিপদে পাশে থাকে, তারাই তো বন্ধু,’’ জবাব দিলেন যিশু।

যিশু সেনগুপ্ত ও মিমি চক্রবর্তী।
মিমি চক্রবর্তী আর নুসরত জাহান যে ‘বেস্ট বাডিজ়’ সেটা সকলেই জানেন।
মিমির কথায়, ‘‘নুসরত আর আমার বন্ধুত্বটা পিয়োর। আমাদের ঝগড়া হয়। মিটেও যায়। ওর কাছ থেকে কিছু লুকোই না।’’ ইন্ডাস্ট্রিতে বন্ধু বেশি, না ইন্ডাস্ট্রির বাইরে? ‘‘আমার বন্ধু কমই। কারণ আমি ঘরকুনো। তবে ইন্ডাস্ট্রির ভিতরে-বাইরে পাঁচ-ছ’জন আছে, যাদের সঙ্গে কানেকশনটা খুব স্ট্রং,’’ বললেন মিমি।
অভিনেত্রী সোহিনী সরকার আবার ফ্রেন্ডশিপ ডে উদ্যাপন করার পক্ষপাতী। বলছিলেন, ‘‘আমি তো খাওয়াদাওয়া করার, হুল্লোড় করার ছুতো খুঁজতে থাকি। হাতের কাছে এ রকম দিন থাকলে ছাড়ব কেন!’’
সোহিনীর কাছের বন্ধুবান্ধব বলতে সব স্কুল-কলেজেরই। তাঁদের সঙ্গেই সব কিছু শেয়ার করেন। তবে এটাও জানালেন, যাঁদের সঙ্গে তিনি কাজ করেন, তাঁরাও এখন তাঁর বন্ধু। ‘‘একসঙ্গে কাজ করতে করতে বন্ধুত্ব হয়ে যাওয়াটাই তো স্বাভাবিক, তাই না?’’ মন্তব্য তাঁর।