Advertisement
E-Paper

উবের উবাচ

ড্রাইভারের মর্জির উপর ভরসা করতে হবে না। দরকার নেই গলা ফাটিয়ে ডাকারও। স্মার্টফোন থাকলে পা বাড়ালেই ট্যাক্সি। লিখছেন অরিজিৎ চক্রবর্তীফার্স্ট ডে। সেকেন্ড শো। রাত ৮.২৫। সেক্টর ফাইভের অফিস থেকে ৮টায় বেরোলেই হবে। রিলিজের প্রথম দিনেই বান্ধবীকে ‘হাঙ্গার গেমস্’ দেখালে বাড়তি কিছু ‘মার্কস’ও জুটে যেতে পারে। এ পর্যন্ত হিসেব ঠিকই ছিল। কিন্তু সিনেমা হল থেকে বেরিয়ে টের পেলেন হিসেবে ভুল করে ফেলেছেন। ঘড়ির ডায়ালে তখন রাত ১১.০৫। সিগনালের আলো দপদপ করছে। আর সিটি সেন্টারের সামনের সেকেন্ড ক্রস রোড একদম সুনসান। অটো দূর অস্ত, একটা ট্যাক্সিরও দেখা নেই।

শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:০৫

ফার্স্ট ডে। সেকেন্ড শো। রাত ৮.২৫।

সেক্টর ফাইভের অফিস থেকে ৮টায় বেরোলেই হবে।

রিলিজের প্রথম দিনেই বান্ধবীকে ‘হাঙ্গার গেমস্’ দেখালে বাড়তি কিছু ‘মার্কস’ও জুটে যেতে পারে।

এ পর্যন্ত হিসেব ঠিকই ছিল। কিন্তু সিনেমা হল থেকে বেরিয়ে টের পেলেন হিসেবে ভুল করে ফেলেছেন।

ঘড়ির ডায়ালে তখন রাত ১১.০৫। সিগনালের আলো দপদপ করছে। আর সিটি সেন্টারের সামনের সেকেন্ড ক্রস রোড একদম সুনসান। অটো দূর অস্ত, একটা ট্যাক্সিরও দেখা নেই।

‘উফ্, যদি পিৎজার মতো ফোন করে ট্যাক্সি পাওয়া যেত!’

ভুক্তভোগী মাত্রেই জানেন, এমনটা মাঝেমাঝেই মনে হয় সকলের। শুধু তো আর রাতে ট্যাক্সি পাওয়ার সমস্যা নয়। দিনেও যে ট্যাক্সি পেলেই তা যাবে, তারও তো কোনও নিশ্চয়তা নেই। ট্যাক্সি আর আপনার পথ সর্বদাই উল্টো দিকে বেঁকে যায়। আর স্ট্রাইক তো লেগেই আছে।

উবের (Uber)

কলকাতা থেকে প্রায় সাড়ে বারো হাজার কিলোমিটার দূরে সান ফ্রানসিসকোতেও একই সমস্যার ভুগতেন ট্র্যাভিস কালানিভ। সেখানেও বৃষ্টিতে ট্যাক্সির দেখা পাওয়া আর ঈশ্বরের দেখা পাওয়া সমার্থক! তার সঙ্গে রয়েছে ট্যাক্সি চালকের ‘মর্জি’। ট্যাক্সি বিভ্রাটে নাজেহাল দুই বন্ধু মিলে তাই বানিয়ে ফেললেন একটা স্মার্টফোন অ্যাপ। উবের। যেখানেই থাকুন না কেন, এই অ্যাপ আপনার কাছে ট্যাক্সি পাঠিয়ে দেবে। বিনিয়োগ নিয়ে ভাবতে হয়নি ট্র্যাভিসদের। জনপ্রিয়তা নিয়েও না। মার্চ ২০০৯-এ শুরু করে এই পাঁচ বছরে ২০০টা শহরে চালু আছে উবের। কলকাতাও তার মধ্যে পড়ে।

কী ভাবে কাজ করে: প্রথমে উবের অ্যাপটা ইন্সটল করতে হবে। যে কোনও স্মার্টফোনেই এই অ্যাপ মিলবে বিনাপয়সায়। এ বার পেমেন্টের একটা ব্যবস্থা করে দিতে হবে। অ্যাপের মধ্যেই সে ব্যবস্থা আছে। আপনাকে একটা প্রিপেড কার্ড দিয়ে রাখতে হবে। যা ভাড়া হবে, তা সেই প্রিপেড কার্ড থেকেই কাটা যাবে। কোথাও কারওকে কোনও ক্যাশ দিতে হবে না। এ বার যেখানেই থাকুন না কেন, অ্যাপটা ওপেন করলেই জিপিএসে আপনার লোকেশন দেখাবে। সেখানেই ট্যাক্সি ডেকে নিতে পারবেন। অন্য কোথায়ও ডেকে নিতে পারবেন। তখনই বলে দিতে হবে গন্তব্য। ড্রাইভারের নাম-ফোন নম্বর সহ অ্যাপেই দেখে নিতে পারবেন ঠিক কোথায়, কত সময় পর ট্যাক্সি আপনার কাছে এসে পৌছবে।

লাগবে কত: কলকাতায় এই মুহূর্তে দু’রকমের উবের চালু আছে। উবের গো আর উবের এক্স। উবের গো-তে ২০ টাকা বেস ফেয়ারের সঙ্গে কিলোমিটার প্রতি ৯ টাকা এবং প্রতি মিনিট ১ টাকা হিসেবে ভাড়া গুনতে হবে। আর উবের এক্সে ৪০ টাকা বেস ফেয়ারের সঙ্গে কিলোমিটার প্রতি ১২ টাকা এবং প্রতি মিনিট ১ টাকা হিসেবে ভাড়া হবে।

সন্ধের ট্রাফিকে মধ্য কলকাতা থেকে সাউথ সিটি যাওয়ার জন্য খরচ হবে ২২০ টাকার কাছাকাছি।

তবে উবের শুধুমাত্র ‘পয়েন্ট টু পয়েন্ট’ যাতায়াতের জন্য। অর্থাৎ, কোনও নির্দিষ্ট জায়গা থেকে আপনার গন্তব্যে পৌঁছে দেবে উবের। আপনি কোথাও একে দাঁড় করিয়ে রাখতে পারবেন না। কিন্তু কোথায় যাওয়া-আসার জন্য গাড়ির দরকার হলে?

বুক মাই ক্যাব (BookMyCab)

সেই চাহিদাটা সহজেই মিটিয়ে দেবে বুক মাই ক্যাব-এর মতো অ্যাপ। এই বিয়ের মরসুমে নেমন্তন্ন রক্ষা করতে বা পিকনিকে যেতে ঘণ্টাখানেকের জন্য গাড়ির দরকার কার না হয়? এমন সব সময় আপনার মুশকিল আসানের নামই হল— বুক মাই ক্যাব। দরকার মতো চার ঘণ্টা, আট ঘণ্টা কী দশ ঘণ্টার প্যাকেজ নিতে পারেন। কাজ মিটে গেলে সময় অথবা দূরত্বের হিসেবে টাকা মিটিয়ে দিলেই হবে। এমনকী বাড়ি থেকে এয়ারপোর্ট বা রেল স্টেশনে কিংবা এয়ারপোর্ট বা স্টেশন থেকে বাড়ি ফেরার সময়ও ডেকে নিতে পারেন বুক মাই ক্যাব। রাত একটা হোক কী ভোর চারটে— যখনই চাইবেন পেয়ে যাবেন এদের গাড়ি।

লাগবে কত: ঘণ্টা বা কিলোমিটার যেটা বেশি হবে সেই হিসেবে টাকা দিতে হবে। মোটামুটি ৪ ঘণ্টা (বা ৪০ কিমি)-র জন্য পড়বে ৯৫০ টাকা। ৮ ঘণ্টার জন্য ১৫৫০ টাকা।

সওয়ারি (Savaari)

এ তো গেল এক দিনের জন্য। কিন্তু কয়েক দিনের জন্য গাড়ির দরকার পড়লে? আর দু’-একদিনের জন্য গাড়ির দরকার কারই বা না পড়ে? শীত তো এসেই গেল। আর শীত আসা মানেই নলেন গুড়ের সঙ্গে পিকনিক আর সপ্তাহ শেষে বকখালিও স্বাভাবিক। তার জন্যই সওয়ারি। যখন দরকার তখনই চেয়ে নিতে পারেন গাড়ি। নিজের চাহিদা অনুযায়ী সিডান থেকে এসইউভি সবই পেয়ে যাবেন সওয়ারিতে। ড্রাইভারের নিয়ে চিন্তা নেই, সে সব সামলাবে সওয়ারিই।

লাগবে কত: এক দিনের জন্য টাটা ইন্ডিকা পড়বে পাঁচ হাজারের কাছাকাছি। ইনোভা পেয়ে যাবেন সাড়ে ছ’হাজারের মধ্যে। দিন প্রতি ২৫০ কিলোমিটার ব্যবহার করতে পারবেন। এর বেশি ব্যবহারে বেশি টাকা লাগবে।

পরের বার ট্যাক্সি ডাকার জন্য আর গলা বাড়াতে হবে না, পকেট থেকে স্মার্টফোন বের করলেই হবে।

arijit chakraborty kuber ubach
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy