Advertisement
E-Paper

নেইমারের সঙ্গে পাল্লা দিন

না, ওঁদের মতো হতে হবে না। আপনি আপনার মতো করেই আয়ত্ত করতে পারেন ওদের শারীরিক দক্ষতা। পরামর্শ ফিটনেস এক্সপার্ট চিন্ময় রায়-এর।মাঠে অবিশ্বাস্য স্কিল। সেই স্কিলের ধারাবাহিকতার জন্য দুর্দান্ত ফিটনেস। সঙ্গে শরীরী দক্ষতা। ব্রাজিল বিশ্বকাপে এই সব ফুটবলারকে দেখে কেউ বিস্ময়ে বলে উঠবেন: ‘উফ্, রবেনের কী দারুণ স্পিড!’ কেউ মুগ্ধ হবেন মেসির চটপটে ভাবে। নেইমার রোগাপটকা শরীর নিয়ে পরের পর বিপক্ষের ফুটবলারকে গতি-বুদ্ধি দিয়ে ধোঁকা দেন।

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৪ ০০:০০

মাঠে অবিশ্বাস্য স্কিল। সেই স্কিলের ধারাবাহিকতার জন্য দুর্দান্ত ফিটনেস। সঙ্গে শরীরী দক্ষতা। ব্রাজিল বিশ্বকাপে এই সব ফুটবলারকে দেখে কেউ বিস্ময়ে বলে উঠবেন: ‘উফ্, রবেনের কী দারুণ স্পিড!’ কেউ মুগ্ধ হবেন মেসির চটপটে ভাবে। নেইমার রোগাপটকা শরীর নিয়ে পরের পর বিপক্ষের ফুটবলারকে গতি-বুদ্ধি দিয়ে ধোঁকা দেন।

অনেকেরই কৌতূহল, এঁরা এত ফিট থাকেন কী ভাবে! আমরা কি এঁদের দশ ভাগের এক ভাগও হতে পারি না!

কী সেই রহস্য

পেশিবহুল শরীর জোগান দেয় শক্তি। পায়ের জোর আর উচ্চতা সেই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে শরীরকে এগিয়ে নিয়ে যায়। বল নিয়ে অবিশ্বাস্য গতিতে ছুটতে পারেন মেসি-নেইমাররা। পেশির আস্ফালন ছাড়াই এই ফুটবলারদের গতি সহজাত। বাকিটা এসেছে আধুনিক স্পিড-এজিলিটি ট্রেনিং থেকে।

আপনিও দৌড়ন

মেসি-নেইমারদের দেখে নিশ্চয়ই ভাবছেন চেষ্টা করবেন কি না? আপনার যদিও ১১ সেকেন্ডে ১০০ মিটার ছোটার দরকার নেই। দৌড়ের জোর বাড়াতে জায়গা থাকলে ৪০-৮০ মিটার সাধ্যমতো জোরে ছুটুন। ৩-৪ মিনিট বিশ্রাম নিন। রিপিট করুন ৬-৮ বার। জোগাড় করতে পারেন ৮-১২ ইঞ্চির হার্ডলও। ২০ মিটার দূরত্বে হার্ডল টপকে দৌড়ন। কখনও হার্ডলের মধ্যে জিগজ্যাগ করে ছুটুন। স্কোয়াট, লাঞ্জ, ডেডলিফ্ট, গুডমর্নিং-এর মতো পায়ের ব্যায়াম করুন সপ্তাহে ২-৩ দিন।

শক্তি মে ভক্তি

বিজ্ঞানের ভাষায় দ্রুততার সঙ্গে বল (ফোর্স) প্রয়োগ করাকে বলে শক্তি। বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ শক্তি-নির্ভর ফুটবল খেলে। এই শক্তিই ৮৩ কেজি ওজন আর ৫ ফুট ৯ ইঞ্চির রুনিকে ডিফেন্ডারদের ধাক্কা সহ্য করে স্রেফ শরীরের জোরে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে।

ফুটবলার যখন আপনিও

গতি বাড়াতে

জায়গা থাকলে ৪০-৮০ মিটার যত জোরে পারেন, ছুটুন। ৩-৪ মিনিট বিশ্রাম নিন। রিপিট করুন ৮-১০ বার।
করতে পারেন এজিলিটি ট্রেনিংও। স্কোয়াট, লাঞ্জ, ডেডলিফ্ট, গুড মর্নিং-এর মতো পায়ের ব্যায়াম করুন সপ্তাহে ২-৩ দিন।

শক্তি বাড়াতে

পাওয়ার ক্লিন, ক্লিন অ্যান্ড প্রেস, এক হাতে স্ন্যাচ-এর মতো ট্রেনিং সপ্তাহে ২ দিন করুন।
সঙ্গে কোর পেশির জোর বাড়াতে রোজ দিন প্ল্যাঙ্ক, সাইড প্ল্যাঙ্ক, এক পায়ে ডায়নামিক ব্রিজ করতেই হবে।

দম বাড়াতে

মাসে একদিন ৩০ মিনিট টানা ছুটতে পারেন। ভাল হয় ২০-৩০ মিটার দূরত্বে ১-২ মিনিট
দ্রুত যাওয়া আসা করা, যার নাম শাটল রান। ২-৩ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে ১০ বার রিপিট করুন।

পাওয়ার ট্রেনিং

প্রি-সিজনে বেশির ভাগ দলই ওজন নিয়ে সপ্তাহে কম করে ৪-৫টা পাওয়ার ট্রেনিং সেশন করবেই। প্লায়োমেট্রিক্স, মানে হার্ডলের ওপর দিয়ে লাফ, ১২ ইঞ্চি উঁচু বক্সে লাফিয়ে ওঠানামা হল অন্যতম ট্রেনিং। এ সবের ফল স্প্রিং-এর মতো লাফিয়ে ওঠা বা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর ৩০-৪০ গজের দূরপাল্লার শট, যার জোর দেখে মনে হয় এ যন্ত্র না মানুষ। জামা খুললেই রোনাল্ডোর সিক্স প্যাক্স দেখেছেন নিশ্চয়ই।

ওর শক্তির উত্‌সমুখ শরীরের মাঝের অংশের গভীরের পেশি। কোমরে বেল্ট বেঁধে ওজন টানা (পাওয়ার ড্র্যাগ), পাওয়ার ক্লিন, বক্স জাম্প ইত্যাদি পাওয়ার ট্রেনিং রোনাল্ডোর কাছে জলভাত।

সেয়ানে সেয়ানে টক্কর হয়। জার্মানির বাস্তিয়েন সোয়েনস্টাইগার বা ব্রাজিলের হাল্ক চেহারা আর নড়াচড়া দিয়ে বুঝিয়ে দেয় ফুটবল মাঠে সবাই শক্তের ভক্ত।

আপনিও শক্তপোক্ত হোন

মাঝারি ভারী থেকে ভারী ডাম্বেল বা বার্বেল নিয়ে পাওয়ার ক্লিন, ক্লিন অ্যান্ড প্রেস অনুশীলন করুন। এগুলো তখনই করবেন যখন স্কোয়াট, লাঞ্জ বা বেঞ্চপ্রেস আপনার পুরোপুরি রপ্ত হয়ে যাবে। না হলে ফর্ম বা টেকনিকের গণ্ডগোল হয়ে চোট লাগতে পারে। সপ্তাহে দু’দিন এই ট্রেনিং করতে হবে। ৪টে করে সেট করবেন। রিপিট করবেন ৬ বার। সঙ্গে কোর পেশির জোর বাড়াতে রোজ করুন প্ল্যাঙ্ক, এক পায়ে সাইড প্ল্যাঙ্ক, এক পায়ে ডায়নামিক ব্রিজ-এর মতো ওয়ার্কআউট।

এত দম কোত্থেকে

স্পেনের আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা টানা ৯০ মিনিট একই দক্ষতার সঙ্গে খেলতে পারেন। ফুসফুসে অক্সিজেন ধারণ ক্ষমতা চূড়ান্ত হলে তবেই এমনটা করা যায়। কখনও পাহাড়ে হাই অলটিটিউড ট্রেনিং, কখনও সমুদ্রের পাড়ে বালিতে দৌড়বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দলগুলোতে এমন ট্রেনিং হয় প্রতি সিজনেই। ব্রাজিলের ডেভিড লুজ রক্ষণের আর জার্মানির টমাস মুলার ফরোয়ার্ডের খেলোয়াড়। এঁরা সারাক্ষণ ওঠানামা করেন। এত দমের রহস্য শুধু দৌড় নয়। নিয়মিত মাঝারি ওজন নিয়ে গোটা শরীরের, বিশেষ করে পায়ের ব্যায়াম করাটাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আপনি আপনার মতো

মাসে একদিন ৩০ মিনিট ছুটতে পারেন। বরং বিরতি নিয়ে কার্ডিও করুন। বড় মাঠ বা পার্কে গোল হয়ে ১ মিনিট মাঝারি স্পিডে ছুটুন। অথবা ২০ মিটারের দূরত্ব বানিয়ে ১-২ মিনিট দ্রুত যাওয়া-আসা করুন। এটাকে বলে শাটল রান। কিছুটা কেন, ফুটবলারদের মতো অনেকটাই করে ফেলতে পারবেন।

শুধু ট্রেনিং করলেই হবে না। ভাল মতো প্রোটিনের জোগান দরকার। বিদেশিরা চিকেন, বিফ, পর্ক, পোল্ট্রি সবই খায়। সঙ্গে দুধ, কাজু, দালিয়া, ভুট্টা। খাবার ব্যাপারটা মাথায় রাখতেই হবে।

মেসি, নেইমারদের ওজন নিয়ে ব্যায়াম বা ট্রেনিংয়ের ইতিহাস যথেষ্টই লম্বা। আপনারা দেরিতে শুরু করলে ধীরে চলুন। বেশি কঠিন ব্যায়াম বা ট্রেনিং করতে যাবেন না কখনওই। আপনি তো আর মাঝমাঠের খেলোয়াড় নন!

আনাচে কানাচে

মেঘবালিকা: রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। ক্যামেরা হাতে বৃষ্টির অপেক্ষায়...ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল।

সাজাব যতনে: চেতন ভগতকে মেক আপ টিপস জ্যাকেলিন ফার্নান্ডেজের।

chinmoy roy fitness tips
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy