শ্বাসকষ্ট, একটানা কাশি, কাশির সঙ্গে রক্তপাত, বুকে ব্যথা না হওয়া পর্যন্ত ফুসফুস নিয়ে চিন্তিত হন না অনেকেই। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই অচেনা কিছু উপসর্গ আগে থেকেই শরীরে দেখা দেয়। সেগুলি উপেক্ষা করে করে শেষ মুহূর্তে গিয়ে নড়েচড়ে বসেন অনেকে। কেবল তা-ই নয়, দীর্ঘ দিনের কাশি বা কাশির সঙ্গে রক্ত পড়াকেও অনেকে যক্ষ্মা বা সিওপিডি ভেবে ভুল করেন। ক্যানসার চিকিৎসক সন্দীপ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতে, সব ক্ষেত্রে এই উপসর্গগুলি যক্ষ্মা বা সিওপিডি না-ও হতে পারে। এই ভুল করার ফলেই ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে স্টেজ ৪-এ গিয়ে ফুসফুসের ক্যানসার ধরা পড়ে। তাই চিকিৎসক বলছেন, যদি ২-৩ সপ্তাহ পরেও দেখা যায়, কাশি কমছে না, তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কোন কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক হতে হবে? ছবি: সংগৃহীত।
তবে এই চেনা উপসর্গগুলি ছাড়াও এমন তিনটি উপসর্গ রয়েছে, যা বার বার অবহেলা করে ফেলেন রোগীরা। ফলে চিকিৎসায় দেরি হয়ে যায়।
কী সেই লক্ষণগুলি?
গলার স্বর পরিবর্তন: গলার স্বর খসখসে হয়ে যাওয়া বা গলা ভেঙে যাওয়াকে অবহেলা করা উচিত নয়। অনেকেই ভাবেন, গলা ভেঙেছে মানেই ঠান্ডা লেগেছে। কিন্তু কেবল ঠান্ডা লাগলে গলার স্বর পরিবর্তন হয় না, ফুসফুসের ক্যানসারেরও লক্ষণ এটি। ফুসফুসের ক্যানসার যখন হয়, লিম্ফ নোড তখন সেই স্নায়ুটিকে অকেজো করে দেয়, যে স্নায়ু স্বরযন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করে। যার কারণে গলার স্বর ভেঙে যায়।
ওজন কমে যাওয়া: কোনও ডায়েট বা ব্যায়াম না করেই ওজন কমে যাচ্ছে বলে খুশি হচ্ছেন? অনেক ক্ষেত্রে বড় কোনও অসুখের কারণেও শরীরের ওজন হ্রাস পেতে পারে। ক্যানসার কোষের বাড়বৃদ্ধির কারণে খিদে কমে যায়, পুষ্টিশোষণের ক্ষমতা হ্রাস পায়। এর ফলে ওজন হ্রাস পেতে থাকে শরীরের।
খাওয়ায় অরুচি: ক্যানসারের কোষগুলি বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন তৈরি করে শরীরে। এই প্রোটিনগুলি মস্তিষ্কের সেই অংশকে প্রভাবিত করে, যেটি খিদে পাওয়ার অনুভূতিকে নিয়ন্ত্রণ করে। সে কারণে খাওয়ায় স্পৃহা কমে যাওয়ার লক্ষণ দেখা যায় ক্যানসারে। কেবল ফুসফুসের ক্যানসার নয়, যে কোনও ক্যানসারেই এই লক্ষণ দেখা যায়।