গরমের দিনে নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে ফ্রিজে ডিম রাখেন সকলেই। কিন্তু বছরের অন্য সময়? গরমের দাপট কমেছে। এর পর আসবে শীতকাল। এই সময় কি ঘরের তাপমাত্রায় ডিম রাখা চলে?
অনেকেই বলবেন, খুব গরম না থাকলে ঘরের তাপমাত্রায় ৩-৪ দিন ডিম ঠিকই থাকে। তা ছাড়া, বাজারে তো ডিম ফ্রিজে রাখা হয় না! তবে ‘ফ্রন্টিয়ার্স ইন মাইক্রোবায়োলজি’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র থেকে জানা যাচ্ছে, ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ডিম কয়েক দিন রাখলে দ্রুত গতিতে সালমোনেল্লা টাইফিমুরিয়াম নামে ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। সে কারণে, কোন তাপমাত্রায় ডিম সংরক্ষণ করা হচ্ছে তা গুরুত্বপূর্ণ।
ডিম কি তবে ফ্রিজে রাখা ভাল?
বিশ্বের একাধিক দেশে ফ্রিজে ডিম রাখা বাধ্যতামূলক। আমেরিকা-সহ বেশ কিছু দেশে ডিমের খোসা পরিষ্কার করেই বিক্রি হয়। খোসায় নানা রকম ব্যাক্টেরিয়া বাসা বাঁধে। খোসা পরিষ্কার করলে সেগুলি নষ্ট হয়। তবে ডিমের খোসার উপর যে কিউটিকলের আস্তরণ থাকে, পরিষ্কারের সময় সেটি নষ্ট হলে ব্যাক্টেরিয়ার হানা দেওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। ফ্রিজে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার কম তাপমাত্রায় রাখলে সেই ঝুঁকি কমে। আমেরিকার কৃষি দফতর সতর্ক করছে, ডিম ফ্রিজ থেকে বার করে ২ ঘণ্টার বেশি ঘরের তাপমাত্রায় রাখলে ব্যাক্টেরিয়ার বাড়বাড়ন্তের সম্ভাবনা বাড়ে।
নিয়ম সর্বত্র এক নয়
ভারত-সহ এশিয়ার বহু দেশে ডিম আলদা ভাবে পরিষ্কার করে বিক্রি করা হয় না। এর কিউটিকল স্তরটিও নষ্ট হয় না। সে ক্ষেত্রে ঠান্ডা, অন্ধকার স্থানে ডিম কয়েক দিন রাখা যেতে পারে। তবে সবটাই নির্ভর করছে তাপমাত্রার উপরে। ঝুঁকি এড়াতে চাইলে অবশ্য ডিম ফ্রিজে রাখাই ভাল। এতে অনেক দিন পর্যন্ত ডিম ভাল থাকে। সুপার মার্কেট বা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর থেকে ঠান্ডা ডিম কিনে আনলে সেটি বাড়ি ফিরে দ্রুত ফ্রিজে ভরে দেওয়াই ভাল। তাপমাত্রার তারতম্য ঘটলে ব্যাক্টেরিয়ার বাড়বৃদ্ধি হতে পারে।
কয়েকটি বিষয় জেনে রাখা ভাল
ফ্রিজে ৩-৫ সপ্তাহ প্যাক করা ডিম ভাল থাকে।
সেদ্ধ করা ডিম বায়ু নিরোধক কৌটোয় রাখলে এক সপ্তাহ ভাল থাকে।
প্রচণ্ড গরম না থাকলে বাজার থেকে কেনা ডিম ঘরের তাপমাত্রায় ১-২ সপ্তাহ পর্যন্ত রাখা যেতে পারে।