Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Gym Workout

জিম শুরুর ডায়েট

রোজ জিমে শারীরচর্চা করলে আহারও হতে হবে সুষম। না হলেই বাড়বে বিপদ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৪ ০৭:০৮
Share: Save:

ওজন কমানোর জন্য বা পেশিগঠনের জন্য অনেকে জিমে যান। কিন্তু জিম শুরু করার পাশাপাশি ডায়েটে কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে প্রোটিনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। অনেকে পুরো খাবারের পরিমাণই হুট করে কমিয়ে দেন। তা কতটা স্বাস্থ্যকর? পরে কঠিন অসুখের শিকার হয়ে পড়বেন না তো? জিম জয়েন করলে বা নিয়মিত জিম করলে কী ধরনের খাবার খাবেন, জেনে নিন।

কী কী সমস্যা হতে পারে?

পুষ্টিবিদ কোয়েল পালচৌধুরী বলছেন, “জিম শুরু করেই খাবার কমিয়ে দ্রুত রোগা হওয়ার প্রবণতা অনেকের মধ্যেই দেখা যায়। তখন অনেকেই খাবারে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমিয়ে প্রোটিন বাড়িয়ে দেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, শর্করা, প্রোটিন, ফ্যাট মিলে মেটাবলিক পাথওয়েটা চলে। সেই জায়গাটা নষ্ট করে ফেললে অতিরিক্ত ফ্যাট মোবিলাইজ় হবে না, তা শরীরেই জমা হবে। ফলে সেন্ট্রাল ওবেসিটি বাড়বে। এতে এনার্জিও কমে যায়। তা থেকে শরীর ক্যাটাবলিক স্টেটে চলে যায়। জিম করার সময়ে ভুল ডায়েট অনেক মানুষকেই ক্যাটাবলিক স্টেটে পাঠিয়ে দেয়। এমন অনেক রোগীকে আমরা পাই। ফলে পরবর্তীতে এঁদের শরীরে অন্য কোনও রোগ বাসা বাঁধলে তার সঙ্গে লড়াই করার শক্তি থাকে না।”

তা ছাড়া অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণের ফলে কিডনির উপরেও চাপ পড়তে পারে। কোয়েলের কথায়, “অনেকেই জিম সাপ্লিমেন্ট নেন। বেশির ভাগ প্রোটিন। এতে কিডনির উপরে ভীষণ চাপ পড়ে। তা থেকে কিডনি স্টোন হয়, কিডনি ফেলিয়োরের আশঙ্কাও থাকে। এই কারণে কমবয়সি ছেলেমেয়েদের মধ্যে এখন কিডনি স্টোন বেশি দেখা যাচ্ছে।” তাই প্রোটিনের পরিমাণও নির্দিষ্ট হবে।

অনেকে আবার জিম জয়েন করার সঙ্গে কিটো ডায়েট, ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং চালিয়ে যান। এই ডায়েট সকলের শরীরে সহ্য না-ও হতে পারে।

তাই কী ধরনের ব্যায়াম করছেন, ওজন কমানোর জন্য নাকি পেশিগঠনের জন্য... সেটা বুঝে পুষ্টিবিদের পরামর্শে ডায়েট পরিকল্পনা করুন। এতে শরীর সার্বিক ভাবে সুস্থ ও সুঠাম থাকবে।

কী কী খাবেন?

  • মনে রাখতে হবে, জিমে যাওয়ার আগে প্রোটিন নিতে পারেন। সে সময়ে এক গ্লাস ছাতুর শরবত বা স্প্রাউট স্যালাড বা এক মুঠো ড্রাই ফ্রুটস খেতে পারেন। জিম থেকে ফিরে সুষম আহার করুন। এতে যে এনার্জিটা ক্ষয় হবে, সেটা আবার ফিরে পাবেন। চিকেন স্যালাড, চিকেন সুপ খেতে পারেন। এতে কোনও ভাবে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা হাইপারটেনশনের ভয় থাকবে না। কোয়েলের কথায়, “একনাগাড়ে অনেকক্ষণ শারীরচর্চা করলে রক্তচাপ ও ব্লাড সুগার লেভেল ওঠানামা করে। কিন্তু সেখানে মেডিক্যাল সাপোর্ট সবসময়ে কাছাকাছি থাকে না। তাই ব্যালান্সড ডায়েটের সঙ্গ খুব জরুরি।”
  • স্ন্যাকসে বুঝে খান। ছাতুর সঙ্গে আমন্ড গুঁড়ো করে মিশিয়ে রাখতে পারেন। সেটা দিয়ে শরবত করে খেলেন। ছাতু, কলা মাখাও খেতে পারেন। চিঁড়েভাজা একটু পেঁয়াজ কুচি দিয়ে খেতে পারেন। ছানা বা দুটো ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন। তবে দিনে ১০-১২টা ডিম সিদ্ধ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে বলে পরামর্শ কোয়েলের।
  • জিম থেকে ফিরে ভেজিটেবল সুপ বা চিকেন সুপ খেতে পারেন। আর রাতে সিরিয়াল খাবেন কিনা সেটা আপনার ডায়েট চার্টের উপর নির্ভর করবে।
  • স্প্রাউট স্যালাড, ডাল বাটা দিয়ে ছিল্লা, মুগ সিদ্ধ খেতে পারেন।
  • পাতিলেবুর রস দিয়ে লেবু জল বানিয়ে খেতে পারেন রোজ।

মনে রাখবেন

  • আগে হয়তো ২-৩ হাতা ভাত খেতেন, জিম শুরু করে হঠাৎ ১ হাতা ভাত খেতে শুরু করলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে।
  • শুধু প্রোটিন নয়, শরীরের জন্য ভিটামিনস ও মিনারেলসও সমান জরুরি। তাই সুষম আহার করুন।
  • এক মাসে ৬-৭ কেজি ওজন কমানো স্বাস্থ্যকর নয়। কোয়েল বলছেন, মাসে ৪ কেজি ওজন কমতে পারে, তার বেশি নয়।

জিম জয়েন করার আগে হোল বডি রুটিন চেকআপ করে নিন। সেই অনুযায়ী পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে ডায়েট প্ল্যান করুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Diet chart
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE