আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্ত ভাল না খারাপ, সে নিয়ে নানা মুনির নানা মত। দোষ-গুণ যা-ই থাকুন না কেন, চিকিৎসাবিজ্ঞানের জগতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কিন্তু বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলছে। সে নতুন ওষুধ আবিষ্কার করা হোক বা বিরল রোগের চিকিৎসাই হোক। ক্যানসার চিহ্নিত করতেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকেই কাজে লাগাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। কারণ, শরীরে ক্যানসার বাসা বাঁধছে কি না, তার আগাম পরীক্ষাগুলি খুব জটিল। নির্ভুল তথ্য যে আসবে, তা-ও নিশ্চিত করে বলা যায় না। কিন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত অ্যালগরিদ্মের ভুল হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। তাই ফুসফুসের ক্যানসার শনাক্ত করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত নতুন এক পদ্ধতি তৈরি করে ফেলেছেন গবেষকেরা।
ভারত-সহ ২০টি দেশে প্রায় ৫০ লক্ষ ক্যানসার রোগীর ফুসফুসের টিউমার নির্ভুল ভাবে শনাক্ত করা গিয়েছে ওই পদ্ধতিতে, এমনটাই দাবি গবেষকদের। ব্রিটিশ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি অ্যাস্ট্রোজেনেকা ও ভারতীয় কোম্পানি কিওর ডট এআই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত এমন এক অ্যালগোরিদ্ম তৈরি করেছে, যা গোড়াতেই ফুসফুসের ক্যানসার ধরতে পারবে। এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, লাতিন আমেরিকার দেশগুলিতে ইতিমধ্যেই এই প্রযুক্তির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে। তাতে ক্যানসার সঠিক ভাবে ধরা গিয়েছে বলেই দাবি গবেষকদের।
আরও পড়ুন:
নতুন প্রযুক্তির নাম ‘কিউএক্সআর’, যা ফুসফুসের কোষের অনিয়মিত বিভাজন চিহ্নিত করতে পারে। ফুসফুসে যদি টিউমার তৈরি হয়, তা হলে সেটিতে ক্যানসার কোষের বিভাজন হচ্ছে কি না, তা-ও ধরা যাবে এই প্রযুক্তিতে। ক্যানসার আক্রান্ত কোষের প্রাথমিক ‘ডিএনএ’ সংক্রান্ত যে পরিবর্তন, তা সহজেই ধরে ফেলতে পারে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এবং ৯৮ শতাংশ ক্ষেত্রেই তা নির্ভুল।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, এআই প্রযুক্তি দিয়ে ক্যানসারের স্ক্রিনিং আরও দ্রুত ও কম খরচে করা সম্ভব। প্রত্যন্ত এলাকায় যেখানে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালের অভাব, চিকিৎসক পাওয়াও কঠিন, সেখানে আগামী দিনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে কোনও কম্পিউটার ব্যবহার করেই রোগ বিশ্লেষণ, নির্ধারণ ও চিকিৎসার নানা পথ নির্ণয় করা সম্ভব হবে। এই অ্যালগরিদ্মে এত রকম ডেটা ভরে দেওয়া হয়েছে যে, তা ফুসফুসের যে কোনও বিরল রোগও ধরতে পারবে। প্রযুক্তিটি খুব তাড়াতাড়ি হাসপাতালগুলিতে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে।