এখানে পুলিশের চাকরি বলতে আইপিএস থেকে একেবারে নিচুতলার সাধারণ পুলিশকর্মী এমনকি হাল আমলের সিভিক ভলান্টিয়ার পর্যন্ত সকলকে বোঝনো হচ্ছে। অর্থাৎ পুলিশ সার্ভিসে যারা যোগ দিতে চান, তাদের জন্মছকে কী ধরনের গ্রহবিন্যাস থাকলে, এই কাজের পক্ষে বিশেষ উপযোগী তা দেখে নেওয়া যাক।
সাধারণত পুলিশের চাকরি করতে গেলে যে গ্রহটির প্রধান সহযোগিতা চাই, তার নাম হল মঙ্গল। মঙ্গল মানে সাহস, বীরত্ব, অপরকে রক্ষা করা, বিপদ দেখলে নিজে থেকে এগিয়ে আসা। মঙ্গলের আর একটা প্রধান গুণ অপরকে ডমিনেট করা। পুলিশের চাকরিতে যা অত্যন্ত জরুরি। যার জন্মকুণ্ডলীতে মঙ্গল শুভ ভাবে থাকে, তার মধ্যে এই সব মঙ্গলগত গুণাবলী থাকবেই। তাই জন্মছকে মঙ্গল শুভ ও বলশালী থাকলে তার পুলিশ বা সেনায় চাকরির সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
দ্বিতীয় যে গ্রহটি মঙ্গলকে সহযোগিতা করে থাকে তা হল শনি মহারাজ। শনি মানেই শৃঙ্খলা, নিয়মনিষ্ঠা, বিচার, বিবেচনা, কোনও বিশেষ কাজের জন্য নিজেকে গড়ে তোলা। শনি মানে আগে ভেবে পরে কাজ করা। সবার অধিকার সুরক্ষিত করা, গণতন্ত্রকে রক্ষা করা। তাই জন্মছকে শনি যতই শুভ থাকবে ততই পুলিশের উপর তলার চাকরি সম্ভব হবে। আইপিএস জাতীয় পরীক্ষায় কঠোর পড়াশোনা ও অনুশীলন করে সফল হতে হয়। তাই এখানে শনি মহারাজের বিশেষ সাহায্য দরকার।
এ বার পুলিশে যোগ দিতে গেলে জ্যোতিষ মতে যে সাতটি শর্ত রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করা হল—
(১) প্রথম হচ্ছে লগ্ন ভাব। এই লগ্ন ভাব যতই বলশালী থাকবে ততই পুলিশের চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। কারণ লগ্ন মানে স্বাস্থ্য। বলশালী লগ্ন ভাব বা লগ্নপতি মানে একটা বলিষ্ঠ স্বাস্থ্যোজ্জ্বল উদ্দীপ্ত চেহারা যা সবাইকে আকৃষ্ঠ করে থাকে। এ বার সেই লগ্ন ভাব বা লগ্নপতির সঙ্গে কোনওক্রমে মঙ্গল যদি যুক্ত হয়, তবে সোনায় সোহাগা। দেখা গিয়েছে, যারাই পুলিশে চাকরি করেন, তাঁদের হয় রাশিচক্রে বা নবাংশ চক্রে লগ্ন বা লগ্নপতির সঙ্গে মঙ্গল যুক্ত থাকে। এখানে মঙ্গল থাকলে দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন বোঝায়। লগ্নের গোপনে অবস্থান করেছে জন্মান্তরের প্রবণতা যা জাতক/জাতিকাকে পুলিশের চাকরিতে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
(২) জন্মকুণ্ডলীতে তৃতীয় ভাব ও তৃতীয় পতি, বিশেষ বলশালী ও শুভ অবস্থায় থাকতে হবে যদি পুলিশের চাকরি করতে হয়। তৃতীয় ভাব থেকে আমরা জানতে পারি, সাহস ও বীরত্ব কতটা জন্মছকে আছে। মন বা আত্মার শক্তি জন্ম থেকে কতটা পেয়েছি আর কতটা অর্জন করতে হবে। জ্যোতিষ মতে এটা জাতকের নিজস্বতা বা পুরুষকার। কোনও জাতকের তৃতীয় ভাব ও ভাবপতি বলশালী হলে পুলিশের চাকরি করার সময় যারা ওই জাতকের কাছে আসবে তাদের মনে হবে, হ্যাঁ, জাঁদরেল পুলিশ অফিসারের কাছে এসেছি। যারা তার কাছে আশ্রয় নেবে তারা ভিতরে ভিতরে একটা নিশ্চয়তা অনুভব করবে।
(৩) ষষ্ঠ ভাব ও ভাবপতিকে অবশ্যই শুভ হতে হবে এবং এই ভাবে অবস্থিত গ্রহকে বিশেষ বিচার করতে হবে। কারণ ষষ্ঠ ভাব থেকে বোঝা যাবে কোন পরিবেশে একজন পুলিশ অফিসারকে কাজ করতে হবে। সোজা কথায় কার সঙ্গে লড়াইটা চলবে— চোর, ডাকাত না রাজনৈতিক দাদাগিরি। এই ভাবের বলশালী হওয়ার উপর নির্ভর করে সরকারি চাকরি আর চাকরির পরিবেশ।
(৪) অষ্টম ভাব ও অষ্টম পতিকে শুভ হতে হবে, কারণ এই ভাব গোপনীয়তা বোঝায়। পুলিশকে কাজ করতে হয় সমস্ত রকম বেআইনি কাজকর্মের বিরুদ্ধে। যার সঙ্গে অষ্টম ভাব বা ভাব পতি জড়িয়ে থাকে। অষ্টম ভাব ও ভাবপতি মানে অপরাধ। আর পুলিসের চাকরি তো দুনিয়ার যত অপরাধ নিয়েই। যে দিন থেকে চাকরিতে ঢুকবে আর যে দিন অবসর নেবে এই কাজ তাঁকে নিরন্তর করে যেতে হবে। তাই অষ্টম ভাব বা ভাবপতি লগ্নের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি না করে তা হলে পুলিশের চাকরি হবে কী করে? তাই যত ভাল অফিসার আছে, তাদের অবশ্যই অষ্টম ভাব ও লগ্ন ভাবের একটা সম্পর্ক থেকেই থাকে।
(ক্রমশ)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy