‘শ্রী যন্ত্র’ ভগবতী ত্রিপুরাসুন্দরীর যন্ত্র। কথিত যে, ভগবান শ্রী দত্তাত্রেয় এই যন্ত্রের সাধনা করে দৈব ক্ষমতার অধিকারী হয়েছিলেন। অতীত কাহিনী যাই হোক না কেন, যে কোনও মানুষের কামনা পূর্তির ক্ষেত্রে শ্রী যন্ত্র যে শক্তির অনন্ত আকর, সে বিষয়ে বিন্দুমাত্র দ্বিমত নেই। তবে প্রতি যন্ত্রের প্রয়োগ বা উপাসনার পূর্বে সেই যন্ত্র সম্বন্ধে সর্বিক জ্ঞান থাকাটা জরুরী। শ্রী যন্ত্র সম্বন্ধেও এ কথা সত্য। ‘শ্রী’ শব্দের মধ্যে লক্ষ্মীর ভাবই পরিস্ফুট। ‘শ্রী’ শব্দ উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে মানসপটে যেন লক্ষ্মীদেবীর মূর্তিই উদ্ভাসিত হয়। সাধারণ ভাবে ‘শ্রী’ শব্দের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠত্ব বোঝায়।
বরিষ্ঠ, পূজনীয়, শ্রেষ্ট মানুষদের নামের পূর্বে ‘শ্রী’ ব্যবহারের রীতি প্রচলিত। সরস্বতী, বুদ্ধি, ত্রিবর্গ ধন, বিভূতি, শোভা প্রভৃতি অর্থেও ‘শ্রী’ শব্দের ব্যবহার হয়। সুতরাং বিভিন্ন ক্ষেত্রে ‘শ্রী’ শব্দের ব্যবহার বিভিন্ন অর্থ প্রদান করলেও ‘শ্রী’ শব্দ প্রধানত লক্ষ্মীদেবীকেই নির্দেশ করে। শাস্ত্রে আছে, ‘হে ভগবতী। আপনার নামই ‘শ্রী’– এই সম্বোধন করে লক্ষ্মীকেই সম্বোধিত করা হয়েছিল। ভগবতী লক্ষ্মীর দ্বাদশ কিংবা একশত আট বা সহস্র নামই উচ্চারণ করা হোক না কেন, সব নামেই ‘শ্রী’ শব্দের প্রাধান্য। সুতরাং সাধারণ ভাবে ‘শ্রী’ নামে দেবী লক্ষ্মীই প্রসিদ্ধা। কিন্তু হরিতায়ন সংহিতা, ব্রক্ষ্মাণ্ড পুরাণানুসারে, ‘শ্রী’ শব্দে মহাত্রিপুরাসুন্দরীকে বোঝাচ্ছে। এখন তা হলে স্বাভাবিক প্রশ্ন এই যে, ‘শ্রী’ শব্দ দ্বারা লক্ষ্মী কী রূপে অভিহিতা হচ্ছেন? পৌরাণিক সমাধান এই যে প্রকৃতপক্ষে চিরজীবন ধরে লক্ষ্মী ত্রিপুরাসুন্দরীর আরাধনা করে তাঁর নিকট হতে যে সব বরপ্রাপ্ত হয়েছিলেন, তার একটি হল, তিনি ‘শ্রী’ নামে প্রসিদ্ধ হবেন। এই কারণে ‘শ্রী’ শব্দে লক্ষ্মীকেই বোঝায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy