Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
জনাদেশ ’১৪

দিল্লি হারিয়ে আপের মুখরক্ষা পঞ্জাবে

যেখান থেকে উদয়, সেখানেই অস্ত। খাতা খুলেছিল গত বছর দিল্লি বিধানসভা ভোটের অপ্রত্যাশিত ফলাফলে। তার জোরেই সবার নজর কেড়ে নিয়েছিল অরবিন্দ কেজরীবালের আম আদমি পার্টি। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন অরবিন্দ নিজে। এ বার লোকসভা ভোটে সেই দিল্লিতেই ছিটেফোঁটা অস্তিত্বও টিকিয়ে রাখতে পারল না আপ।

ছবি: পিটিআই

ছবি: পিটিআই

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৪ ০৩:৩৩
Share: Save:

যেখান থেকে উদয়, সেখানেই অস্ত।

খাতা খুলেছিল গত বছর দিল্লি বিধানসভা ভোটের অপ্রত্যাশিত ফলাফলে। তার জোরেই সবার নজর কেড়ে নিয়েছিল অরবিন্দ কেজরীবালের আম আদমি পার্টি। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন অরবিন্দ নিজে। এ বার লোকসভা ভোটে সেই দিল্লিতেই ছিটেফোঁটা অস্তিত্বও টিকিয়ে রাখতে পারল না আপ। সেই ফল থেকে দলের মধ্যে হতাশা তৈরি হলেও তাদের অবশ্য কিছুটা ভরসা দিয়েছে পঞ্জাব। সেখানে ১৩টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৪টিতে জয়ের মুখ দেখেছে আম আদমি পার্টি। গোটা দেশে ৪৪৩টি আসনে প্রার্থী দিলেও এই ভোটে আপের সাফল্য বলতে এইটুকুই।

জনলোকপাল বিল নিয়ে বিতর্কের জেরে মাত্র ৪৯ দিনের মাথায় মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন কেজরীবাল। তার পর থেকেই জনমানসে আম আদমি পার্টির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। লোকসভা ভোটে তারই প্রতিফলন ঘটেছে বলে মনে করছে আপ। যার জেরে মোদী-ঢেউয়ে ভেসে গিয়েছে দিল্লির ৭টি আসনই। দ্বিতীয় স্থান বজায় রাখতে পারলেও দলের প্রথম সারির মুখ আশুতোষ, রাখি বিড়লা বা রাজমোহন গাঁধী প্রত্যেকেই আম আদমি পার্টির জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন।

বারাণসীতে দলের প্রধান কেজরীবালের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদীর লড়াইয়ে প্রথম থেকেই প্রশ্নচিহ্ন ঝুলে ছিল। মোদী-ঝড়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি কেজরী। চণ্ডীগড়ে আপ প্রার্থী বলিউড অভিনেত্রী গুল পানাগের কাছ থেকেও অনেকটাই প্রত্যাশা ছিল দলের। তবে সেখানেও বিজেপি হাওয়ায় জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন কিরণ খের।

কুমার বিশ্বাস এমনও বলেছিলেন, তিনি নাকি অমেঠীতে জিতবেন। কিন্তু তাঁর খোয়াবে জল ঢেলে দিয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী এবং বিজেপি প্রার্থী স্মৃতি ইরানির মধ্যে। দেশজুড়ে খারাপ ফলের মধ্যেও সেখানে শেষমেশ জিতেছেন রাহুলই।

দিল্লির আশপাশে গুড়গাঁও, গৌতম বুদ্ধ নগর, গাজিয়াবাদ এবং ফরিদাবাদেও আম আদমি পার্টির শুধুই হারের ছবি। গুড়গাঁওয়ে আপের অন্যতম মাথা যোগেন্দ্র যাদবও দাগ কাটতে পারেননি। এই নির্বাচনের ফল নিয়ে তাঁর কী প্রতিক্রিয়া?

“দিল্লিতে আমরা কোনও আসন পাব না ভাবিনি। অমেঠী বা বারাণসীতেও হারের ব্যবধান এত বেশি হবে ভাবা যায়নি,” মানছেন যোগেন্দ্র। কিন্তু এর মধ্যেই ইতিবাচক দিক খুঁজে পেয়েছেন তিনি। তাঁর মন্তব্য, “দলের প্রথম লোকসভা ভোটে দেশের প্রতিটি কোণে আমাদের উপস্থিতি জানান দিতে পেরেছি। পঞ্জাবে আমরা যথেষ্ট ভাল করেছি।” তিনি মনে করেন বিকল্প রাজনীতির লড়াইটা অনেক দীর্ঘ। প্রথম বারের ভোট হারার জন্য, দ্বিতীয় বার অন্যদের হারানোর জন্য আর তৃতীয় বার জেতার জন্য। বিজেপির ফল নিয়ে আপ নেতার প্রতিক্রিয়া, “মানুষ কংগ্রেসের উপরে এতটাই ক্ষুব্ধ যে তারা অন্য যে কাউকে ভোট দিতে রাজি ছিল। মোদীর নেতৃত্বে তারা বিশ্বাস খুঁজে পেয়েছেন। তাই মোদীজিকে অভিনন্দন।”

প্রথম লোকসভা ভোটে দলের ভরাডুবি নিয়ে বিচলিত নন আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীবালও। তাঁর কথায়, “এটা ভাল শুরু। যদিও দিল্লির ফল নিয়ে আমাদের একটু খারাপ লাগছে। আরও ভাল করতে পারতাম।” তিনি বরাবরই এটা বিশ্বাস করেন যে এটা জনতার ভোট। তাঁর দলের কোনও টাকা নেই। তাঁরা শুধু জনতার জন্য লড়াইয়ে নেমেছিলেন। দিল্লির জন্য দুঃখ হলেও পঞ্জাবের ফল দেখে বিস্মিত অরবিন্দ। আগামী তিন-চার দিন তাঁরা ভোটের ফল নিয়েই আলোচনা চালাবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

aap arvind kejriwal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE