বাদ পড়লেন ‘কলির কুম্ভকর্ণ’, ‘ক্যাপ্টেন সাহেব’। কিন্তু তালিকায় থাকলেন ‘রাজাবাবু’।
অসমে বিধানসভা নির্বাচনে মোট ১২২টি আসনে লড়বে কংগ্রেস। আজ সে কথা জানিয়ে দলের দ্বিতীয় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করলেন প্রদেশ সভাপতি অঞ্জন দত্ত। বর্তমান বিধায়কদের মধ্যে বাদ পড়লেন রবীন বরদলৈ, হেমন্ত তালুকদার ও ভূমিধর বর্মণ। কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া পাঁচ বিধায়কের বদলে নতুন মুখ আনা হয়েছে। পূর্ব ও পশ্চিম গুয়াহাটি এবং দিসপুর— এই তিন গুরুত্বপূর্ণ আসনই কংগ্রেসের হাতে আছে। তিনটিতেই বর্তমান বিধায়কদের টিকিট দেওয়া নিয়ে দলে তীব্র আপত্তি ছিল। শেষ পর্যন্ত পূর্ব গুয়াহাটিতে রবীন বরদলৈ আর পশ্চিমে হেমন্ত তালুকদারকে বদল করা হলেও থেকে গেলেন অকণ। তিন বারের বিধায়ক রবীনবাবু কর্মজীবনের শুরুতে সেনাবাহিনীতে ছিলেন। ক্যাপ্টেন হয়ে স্বেচ্ছাবসর নেওয়া রবীনবাবু এখনও তাঁর মেজাজ-মর্জির জন্য ‘ক্যাপ্টেন সাহেব’ নামেই পরিচিত। তাঁর বদলে এ বার প্রার্থী হলেন অভিনেত্রী ও ব্যবসায়ী ববিতা শর্মা। গগৈ ঘনিষ্ঠ ববিতাদেবী রাজ্যে ফিল্ম ফিনান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের সাম্মানিক চেয়ারম্যান। পূর্ব গুয়াহাটিতে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য। পশ্চিম গুয়াহাটির দু’বারের বিধায়ক হেমন্ত তালুকদার বিধানসভায় ঘুমোনোর জন্যেই স্বনামধন্য। প্রায় সব বিধানসভা অধিবেশনে ক্যামেরায় ধরা পড়েছে প্রশ্নোত্তর-পর্বে ঘুমন্ত তালুকদারের মুখ। বিভিন্ন সভাতেও একই ছবি। এ জন্য বিরোধীরা তাঁকে ‘কলির কুম্ভকর্ণ’ নাম দেন। এ বার তাঁর বদলে প্রার্থী হচ্ছেন গগৈ ঘনিষ্ঠ মহিলা নেত্রী জুরি শর্মা বরদলৈ। গত বিধানসভা নির্বাচন ও লোকসভা নির্বাচনেও জুরিদেবীকে প্রার্থী করার চেষ্টা হয়েছিল। জুরিদেবীর বিরুদ্ধে অগপর প্রার্থী প্রাক্তন বিধায়ক রামেন্দ্র নারায়ণ কলিতা।
দিসপুরে প্রাক্তন মন্ত্রী অকণ বরা যখন রাস্তায় বেরোন, দেহরক্ষীরা তাঁর মাথায় বিরাট সোনালি ছাতা ধরেন। মিনারেল ওয়াটারে স্নান করা অকণবাবু ‘রাজাবাবু’ নামেই পরিচিত। সম্প্রতি ‘পাঁচ টাকায় মাছ-মাংস দিয়ে ভাত খাওয়া সম্ভব’ বলে বিতর্ক বাড়ান তিনি। বিস্তর শিলান্যাস করলেও এলাকার তেমন উন্নয়নও করতে পারেননি তিনি। জনসভায় তাঁর উক্তি, ‘‘বিএ পাশ করলেই হবে না, গ্র্যাজুয়েট হতে হবে’’— এখনও লোকের মুখে মুখে ফেরে। তাই, এ বার তাঁর জায়গায় প্রার্থী হিসেবে গোপীনাথ বরদলৈয়ের পুত্র তথা পূর্ব গুয়াহাটির বিধায়ক রবীন বরদলৈয়ের ভাই বলিন বরদলৈকে প্রার্থী করার কথা উঠেছিল। কিন্তু এ দিন অকণের নামই প্রার্থী হিসেবে ঘোষণার পরে তিনি বলেন, ‘‘হাইকম্যান্ড যা করেন ভেবেচিন্তেই করেন।’’ বর্ষীয়ান কংগ্রেস বিধায়ক ভূমিধর বর্মণ বয়স ও অসুস্থতার কারণে নিজেই আর ভোটে লড়ার ধকল নিতে চাননি, তাই বরক্ষেত্রীতে প্রার্থী হয়েছেন দিগন্ত বর্মণ।
গোলকগঞ্জে আবু তাহের বেপারি হিমন্তকে অনুসরণ করে দলবদল করেছিলেন। সেখানে কংগ্রেস আবদুল সোভন আলি সরকারকে প্রার্থী করে। বাঘবরে এআইইউডিএফের টিকিটে গত বার জেতা শেরমান আলি আহমেদ কংগ্রেসে যোগ দিয়ে একই আসনে দাঁড়িয়েছেন। আসুর প্রাক্তন সভাপতি শঙ্করপ্রসাদ রায় বিজেপিতে যোগ দিয়ে টিকিট না পেয়ে কংগ্রেসে আসেন। তাঁকে বঙাইগাঁওতে প্রার্থী করেছে কংগ্রেস। তাঁর বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী অগপ বিধায়ক ফণীভূষণ চৌধুরি। আক্রাসুর সভাপতি পদ ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেওয়া বিশ্বজিৎ রায়কে বিজনিতে প্রার্থী করেছে কংগ্রেস।
জালুকবাড়িতে হিমন্তবিশ্ব শর্মার জায়গায় কংগ্রেসের প্রার্থী হলেন নীরেণ ডেকা। নলবাড়িয়ে দলত্যাগী জয়ন্তমল্ল বরুয়ার বদলে প্রদ্যোৎকুমার ভুঁইঞা, সিপাঝার বিনন্দ শইকিয়ার বদলে প্রার্থী হয়েছেন কংগ্রেসে যোগ দেওয়া প্রাক্তন অগপ মন্ত্রী জয়নাথ শর্মা। রহায় প্রাক্তন কংগ্রেসী পীযুষ হাজরিকার বিরুদ্ধে এ বার কংগ্রেসের হয়ে লড়বেন শশীকান্ত দাস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy