Advertisement
১০ মে ২০২৪

মসজিদের দেখাশোনায় ব্রাহ্মণ পণ্ডিত, জ্বালিয়ে রেখেছেন সম্প্রীতির আলো

বরেলির অলিগলি পেরিয়ে বুধওয়ালি মসজিদে প্রতি দিনই ভিড় লেগে থাকে। সকাল-সন্ধ্যায় নিয়মিত নমাজের জন্য আসেন আশপাশের এলাকার মানুষজন। আর তাঁদের সঙ্গেই আসেন ৭৯ বছরের এক বৃদ্ধ। তা আসতেই পারেন। কিন্তু সে কথা আলাদা ভাবে উল্লেখ করার তাৎপর্য কোথায়?

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৬ ১৪:০৭
Share: Save:

বরেলির অলিগলি পেরিয়ে বুধওয়ালি মসজিদে প্রতি দিনই ভিড় লেগে থাকে। সকাল-সন্ধ্যায় নিয়মিত নমাজের জন্য আসেন আশপাশের এলাকার মানুষজন। আর তাঁদের সঙ্গেই আসেন ৭৯ বছরের এক বৃদ্ধ। তা আসতেই পারেন। কিন্তু সে কথা আলাদা ভাবে উল্লেখ করার তাৎপর্য কোথায়?

বৃদ্ধের নাম পণ্ডিত রাজেন্দ্র শর্মা। তিনি হিন্দু। কিন্তু, শতাধিক বছরের পুরনো মসজিদ দেখভাল করে চলেছেন তিনিই। উত্তরপ্রদেশের বরেলিতে নয়া টোলার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বুধওয়ালি মসজিদের ‘কেয়ারটেকার’। চার পুরুষ ধরেই এ কাজ করে চলেছে তাঁর পরিবার। ধর্মকে হাতিয়ার করে বিভেদকামী শক্তি যখন দেশে-বিদেশে মাথাচাড়া দিচ্ছে, পারস্পরিক অবিশ্বাসের ধোঁয়ায় ঢেকে যাচ্ছে চরাচর, তখন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নয়া কাহিনি লিখে চলেছেন পণ্ডিত রাজেন্দ্র শর্মার মতো মানুষ।

মসজিদের গায়েই মান্ডি সমিতি এলাকায় ছিল রাজেন্দ্র শর্মার ছোট দোকান। সে সব ছেড়েছুড়ে এখন পুরোদমে মসজিদ দেখাশোনায় মন দিয়েছেন। মসজিদের গা ঘেঁষেই রয়েছে একটি মন্দির। সকাল-সন্ধ্যায় দু’বেলা সেখানে পুজো দিয়ে মসজিদের কাজে ফেরেন শর্মাজি। দৈনন্দিন কাজকর্মের সঙ্গে সঙ্গে আল্লার নামগানও করেন তিনি।

বহু বছর আগে এই মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন রাজেন্দ্র শর্মার পূর্বপুরুষ পণ্ডিত দাসি রাম। সন্তান কামনা করে মানত করেছিলেন তিনি। তা পূর্ণ হওয়ায় নয়া টোলায় বুধওয়ালি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন দাসি রাম। বুধবারে এখানে ভিড় হয় সবচেয়ে বেশি। সেই থেকেই এর নামকরণ হয়েছে বুধওয়ালি মসজিদ। রাজেন্দ্র শর্মার কথায়: “ঠিক কবে এই মসজিদ গড়ে উঠেছিল তা জানা নেই। তবে গোড়া থেকেই আমার পরিবার এর দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছে। আমার স্বগর্ত বাবা এই মসজিদেই খাতাপত্র লেখার কাজ করতেন।” মসজিদের ইমাম হাফিজ জানে আলম বলেন, “শুধু রাজেন্দ্র শর্মা বা তাঁর পরিবারই নন, সব ধর্মের মানুষই এখানে প্রার্থনা করতে আসেন।”

রাজেন্দ্র শর্মার ছেলেমেয়েরাও আসেন বুধওয়ালি মসজিদে প্রার্থনা করতে। প্রাথর্না সেরে বাবার মতোই দু’বেলা ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালিয়ে যান তাঁরা।

এ তো নিছক প্রদীপ নয়, আসলে তাঁরা জ্বালিয়ে রেখেছেন সম্প্রীতির আলো! চারিদিকের ধর্মান্ধতার অন্ধকারে সে প্রদীপের আলো দিনে দিনে উজ্জ্বল হচ্ছে!

আরও পড়ুন

ঘুমোও ইশরাত আপা, কাঁদো জন্মভূমি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

mosque Bareilly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE