দলের প্রতীক! তাই প্রায় একশোটা নতুন ব্র্যান্ডের ঝাঁটা কিনে ফেলা হয়েছিল গতকালই। তোরণ সাজানো নানা রঙিন বেলুনে। বিশাল মঞ্চে রেডি স্ক্রিন, হোলির রং। সব আয়োজনই ছিল দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরীবালের সিভিল লাইনসের সরকারি বাসভবনে। সকাল থেকে পঞ্জাবের জয়ের ছবিটা স্পষ্ট হলেই দু’দিন আগেই হোলির রঙে মেতে উঠতেন আম আদমি কর্মীরা। কিন্তু ভোটের ফলাফলের ছবিটা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হতেই, ভিড়ই আর জুটল না।
ঝাঁটা পড়ে রইল অনাদরে। স্ক্রিনটি এক ঘণ্টা চালিয়ে বন্ধ করে দিতে হল। তার পরে প্রত্যাশিত কর্মীদের থেকে দিনভর পুলিশকর্মীদের ভিড়ই বেশি রইল মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে। সকালে পঞ্জাবে তৃতীয় হয়ে দৌড় শুরু করলেও, পরে অবশ্য কোনও ভাবে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে কেজরীবালের দল। একই অবস্থা গোয়াতেও। সেখানেও জেতার বিষয়ে দল আশাবাদী হলেও, এ দিন দুপুর পর্যন্ত খাতাও খুলতে পারেনি আপ। দু’রাজ্যেই অন্তত দুপুর পর্যন্ত কেজরীবালের দলকে টপকে বাজিমাত করে বেরিয়ে গিয়েছে কংগ্রেস।
দিল্লি সংলগ্ন উত্তরপ্রদেশ ও পঞ্জাবে নির্বাচন থাকলেও, আপ নেতৃত্ব পঞ্জাবে ভাল ফল করার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। গত ছ’মাস ধরে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের নেতৃত্বে গোটা মন্ত্রিসভা পঞ্জাবে ঘাঁটি গেড়ে থাকলেও, সাধারণ লোক কিন্তু মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে আপ থেকে। প্রাথমিক ভাবে ময়নাতদন্তে যে বিষয়গুলি উঠে আসছে, সেগুলি হল প্রথমত, বহিরাগত তকমা: স্থানীয় নেতৃত্বকে গুরুত্ব না দিয়ে দিল্লি থেকে লোক চাপিয়ে দেওয়া। শুরু থেকেই পঞ্জাবে আপের কাজকর্ম দেখে আসছিলেন সে রাজ্যের আহ্বায়ক সুচা সিংহ ছত্তেপুর। কিন্তু ভোটের ঠিক ছ’মাস তাঁকে সরিয়ে দিল্লি থেকে যাওয়া সঞ্জয় সিংহকে মাথায় বসিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় শিখ নেতৃত্বকে গুরুত্ব না দেওয়া ও যথেষ্ট সম্মান না দেখানোয় মুখ পোড়ে দলের। বসে যান স্থানীয় আপ নেতারা। এইচ এস ফুলকা বা জার্নাল সিংহের মতো নেতাদের দিল্লি থেকে পাঠানো হলেও, তাঁরা মূলত দিল্লির বাসিন্দা। সেখানে কংগ্রেস ও শিরোমণি আকালি দল শুরু থেকেই স্থানীয় নেতৃত্বের উপর ভরসা রাখে।
আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সির দাবিদার কে, জমছে লড়াই