Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Ahmedabad

Ahmedabad Blast: আমদাবাদ বিস্ফোরণে তদন্তের মোড় ঘুরিয়েছিলেন দুই কনস্টেবল

ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন বিস্ফোরণের দায় নিলেও কে বা কারা এত বড় ঘটনা ঘটাল, তাদের সাহায্যই বা করল কারা, তা খুঁজে বার করাই ছিল তদন্তকারী সংস্থার সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
আমদাবাদ শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৯:১০
Share: Save:

প্রায় ১৪ বছর আগে আমদাবাদে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের মামলায় দোষী সাব্যস্ত ৪৯ জনের মধ্যে ৩৮ জনকে গত কাল মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল বিশেষ আদালত। বাকি ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

নাশকতার মূল চক্রী-সহ গোটা ঘটনায় কারা জড়িত, তদন্তকারী অফিসারদের সেই অনুসন্ধান পর্ব কিন্তু টানটান থ্রিলারের যে কোনও প্লটকে টক্কর দিতে পারে। তদন্তের দায়িত্বে দোর্দণ্ডপ্রতাপ অফিসারেরা থাকলেও দু’জন কনস্টেবলই বদলে দিয়েছিল তদন্তের গতিপথ।

ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন বিস্ফোরণের দায় নিলেও কে বা কারা এত বড় ঘটনা ঘটাল, তাদের সাহায্যই বা করল কারা, তা খুঁজে বার করাই ছিল তদন্তকারী সংস্থার সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ। সেই মামলায় গুজরাত পুলিশের অপরাধদমন শাখার নেতৃত্বে ছিলেন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আশিস ভাটিয়া এবং ডেপুটি কমিশনার অভয় চূড়াসমা।

প্রচণ্ড চাপের মধ্যে কাজ শুরু করেছিলেন তদন্তকারী অফিসারেরা। হামলার নেপথ্যে কে বা কারা, তার কোনও সূত্রই পাচ্ছিলেন না তাঁরা।

এল জি হাসপাতালে বিস্ফোরণে বাইসাইকেল বোমা ব্যবহার করা হয়। অন্য দিকে সিভিল হাসপাতালে গাড়ির ভিতরে গ্যাস সিলিন্ডার রাখা হয়েছিল। এই সাইকেল কিংবা গাড়িটি কার, কোথা থেকে আনা হয়েছিল, কোনও তথ্যই ছিল না পুলিশের সামনে। যখন মনে হচ্ছিল, এই ঘটনার সমাধান অধরা ঠিক সেই সময়েই ডিসিপি চুড়াসমা ইয়াকুব আলি নামে ভারুচের এক কনস্টেবলের ফোন পান। ইয়াকুব প্রথমেই চুড়াসমাকে জিজ্ঞেস করেন, এই নাশকতায় ব্যবহৃত গাড়ির সম্পর্কে কোনও তথ্য পেয়েছেন কি না। চুড়াসমা শুরুতে কোনও তথ্য আদানপ্রদানে আগ্রহী ছিলেন না। কিন্তু এর পরেই বদলে যায় পরিস্থিতি। ইয়াকুব বলেন, ‘‘হাসপাতালে বিস্ফোরণে যে গাড়িটি ব্যবহার করা হয়েছিল, সেটি আমি ভারুচে দেখেছিলাম।’’ ইয়াকুবের কথা শুনে কার্যত হতবাক হয়ে যান চুড়াসমা। ইয়াকুব বলতে থাকেন, ‘‘গাড়ি ও বাইসাইকেল দু’টিই ভারুচে গুলাম ভাইয়ের পার্কিং লটে দেখেছি।’’

এর পরেই চুড়াসমা ইয়াকুবকে বলেন, গাড়ি দু’টি কার সেই সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে। সঙ্গে সঙ্গেই ইয়াকুব গুলাম ভাইয়ের বাড়ি যান। সংবাদপত্রে প্রকাশিত নাশকতায় ব্যবহৃত গাড়ির ছবি দেখিয়ে জানতে চান, চিনতে পারছেন কি না। গুলাম জানান, কিছু দিনের জন্য তাঁর বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন কয়েক জন। ওই গাড়িটি তাঁদেরই। এর পরেই দ্রুত থানায় পৌঁছে ইয়াকুব সমস্ত ঘটনা জানান চুড়াসমাকে। তখনও ইয়াকুব জানতেন না, কী মুল্যবান তথ্য তিনি সংগ্রহ করেছেন, যা মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল তদন্তের।

ইয়াকুবের পাশাপাশি আরও এক কনস্টেবলও এই তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। কনস্টেবল দিলীপ ঠাকুরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, আমদাবাদে বিস্ফোরণের সময়ে যে সমস্ত ফোন নম্বরে কথা হয়েছিল সেগুলির উপরে নজরদারি করা।

দিলীপ লাখখানেক ফোন নম্বর খতিয়ে দেখে সন্দেহভাজন কয়েকটি নম্বর তদন্তকারী অফিসারদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। তার মাধ্যমেই লখনউয়ে আবু বাশারের খোঁজ পান তদন্তকারীরা। পরে জানা যায়, সেই আবুই এই বিস্ফোরণের মূল চক্রী।

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ২৬ জুলাই আমদাবাদ শহরে ৭৫ মিনিটের মধ্যে পর পর ২২টি বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল আমদাবাদ শহর। নিহত হয়েছিলেন ৫৬ জন। আহত হন
২৪০ জন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ahmedabad Police constable
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE