দলিত, অন্য অনগ্রসর শ্রেণি ও সংখ্যালঘু ভোটের ঘুঁটি সাজিয়েছে অখিলেশ যাদব-মায়াবতী জোট। এরপর কংগ্রেস উচ্চবর্ণের ভোট কাটলে বিজেপির সমূহ বিপদ। তাই জাতপাতের অঙ্ক ভুলতে বলছেন নরেন্দ্র মোদী। আরএসএসের কায়দায় সব হিন্দু ভোটদাতাকে ‘হিন্দু ছাতা’র তলায় নিয়ে আসার বার্তা দিলেন তিনি। কিন্তু মোদীর অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে রাহুলের এই রাজনৈতিক চালকে আজ স্বাগত জানিয়েছে অখিলেশ এবং মায়াবতীর দল। প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার সক্রিয় রাজনীতিতে আসার কথা ঘোষণা হওয়ার পরে এই প্রথম সপা-বিএসপি জোটের পক্ষ থেকে এই নিয়ে মুখ খোলা হল।
জাতপাতের ঘুঁটি সাজিয়ে মায়াবতী-অখিলেশ যে আগেই উত্তরপ্রদেশে জাঁকিয়ে বসে আছেন, তা ভাল মতোই জানেন মোদী। তার পর প্রিয়ঙ্কাকে নামিয়ে বিজেপির বাকি সম্বলটুকুও কেড়ে নেওয়ার ছক কষছেন রাহুল গাঁধী। দিশেহারা নরেন্দ্র মোদী তাই জাতপাতের অঙ্ক মুছে সবাইকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।
কুম্ভস্নান, রোড-শো, জনসভা, সাংবাদিক সম্মেলন— উত্তরপ্রদেশে প্রিয়ঙ্কার অভিষেকের জন্য জোরকদমে প্রস্তুতি চলছে। প্রিয়ঙ্কা মাঠে নামার আগেই অতীতে তাঁর দেওয়া বক্তৃতাগুলি ছড়িয়ে দিয়ে সনিয়া-কন্যার ব্র্যান্ডে শান দিচ্ছে কংগ্রেস। প্রিয়ঙ্কার অভিষেকের সিদ্ধান্তে অভিনন্দন জানাচ্ছে অন্য বিরোধীরাও। অখিলেশ যাদব আজ রাহুলকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, এটি সঠিক সিদ্ধান্ত। রাহুল-প্রিয়ঙ্কার আগে আজ অখিলেশও পৌঁছে যান প্রয়াগরাজে কুম্ভস্নানে। আর বিএসপির রাজ্য সভাপতি আর এস কুশাওয়াহা তো আরও স্পষ্ট করে বলে দেন, প্রিয়ঙ্কায় আসায় সপা-বিএসপি জোটের সুবিধেই হবে।
এমন এক পরিস্থিতিতে উত্তরপ্রদেশের কৌশল নতুন করে রচনায় হিমশিম খাচ্ছে বিজেপি। প্রিয়ঙ্কাকে নিয়ে দলের নেতারা কখনও কুকথা বলছেন। কৈলাস বিজয়বর্গীয়ও বলিউডের তারকাদের পাশাপাশি প্রিয়ঙ্কার নাম করে ‘চকলেট’ মুখ বলেন। যোগী আদিত্যনাথ গোটা মন্ত্রিসভা নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন কুম্ভে। সেখানে করবেন মন্ত্রিসভার বৈঠক। সাধুদের জন্য পেনশন ব্যবস্থার ঘোষণাও করতে পারেন। হিন্দুত্বের হাওয়া তুলে আরএসএসের পথে জাতের অঙ্ক মুছে দিতে চাইছেন তিনি।
এমন এক পরিস্থিতিতে আজ সন্ত রবিদাসের দোহা আউড়ে জাতপাতের অঙ্ক মুছে দেওয়ার কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী। লক্ষ্য আরএসএসের কায়দায় জাতের সমীকরণ ভুলে হিন্দু-ছাতার তলায় সবাইকে নিয়ে আসা।
আরও পড়ুন: নেতাজি না মোদী, আগে কে? ‘মন কি বাত’ নিয়ে বিস্মিত অনেকেই
বিজেপি নেতারাই বলছেন, সব বিরোধী যদি এককাট্টা হয়ে যায়, দলের বৈতরণী পার হওয়ার একটাই রাস্তা। সব আসনে পঞ্চাশ শতাংশের বেশি ভোট পাওয়া। যেটি খুবই কঠিন কাজ। ব্রিগেডের সভাতেই বিরোধীরা পণ করেছে, বিজেপির বিরুদ্ধে এক জনই প্রার্থী হবে। এই পরিস্থিতিতে ৫০ শতাংশ ভোট না পেলে বিজেপির সমূহ বিপদ। আর উত্তরপ্রদেশের মতো গো-বলয়ের সব থেকে বড় রাজ্য হাতছাড়া হয়ে গেলে দিল্লি দূর অস্ত্।