বিধ্বস্ত: মাকে জড়িয়ে কান্না কাফিলের। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া
জামিন পেয়ে গিয়েছিলেন বুধবারই। ইলাহাবাদ হাইকোর্ট জানিয়েছিল, গোরক্ষপুর শিশুমৃত্যুতে ধৃত বিআরডি মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক কাফিল খানের বিরুদ্ধে কোনও তথ্যপ্রমাণ নেই। যদিও কিছু প্রশাসনিক নিয়মকানুনে আটকে মুক্তি পেতে পেতে আরও তিনটে দিন কেটে গেল। শনিবার জেল থেকে বেরিয়েই কাফিল জড়িয়ে ধরলেন স্ত্রী-মেয়েকে। বাচ্চাদের মতোই কেঁদে ফেললেন মাকে দেখে।
সংবাদমাধ্যমের কাছে বললেন, ‘‘আমি মানসিক ভাবে ক্লান্ত, বিপর্যস্ত, শারীরিক ভাবে অসুস্থ। তবু কিছুটা নিশ্চিন্ত লাগছে এতগুলো মাস পরে পরিবারকে কাছে পেয়ে।’’
গত বছর ২ সেপ্টেম্বর বিআরডি মেডিক্যাল কলেজ থেকে বরখাস্ত করা হয় কাফিলকে। এবং গ্রেফতার করা হয়। গত অগস্টে ওই হাসপাতালে এক রাতে ২৩টি শিশুর অক্সিজেনের অভাবে মারা যাওয়ার ঘটনায় ‘খুনের চেষ্টা’র অভিযোগ আনা হয়েছিল কাফিলের বিরুদ্ধে। যদিও ঘটনার দিন তিনি ছুটিতে ছিলেন। তার মধ্যেও হাসপাতালের অবস্থার কথা শুনে নিজেই অন্য হাসপাতাল, অক্সিজেন সরবরাহকারী সংস্থাগুলি থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড় করেন। এ দিনও তিনি বলেন, ‘‘জেলে বসে ভাবতাম, কী অন্যায় করেছি আমি, যার জন্য জেলে থাকতে হচ্ছে।’’
কাফিলের কাছে আজ ফের জানতে চাওয়া হয়, দোষী কারা? জবাবে তিনি বলেন, ‘‘এর উত্তর আমি চিঠিতে দিয়েছিলাম।’’ কিছু দিন আগে তাঁর জেলে বসে লেখা একটি চিঠি প্রকাশ্যে আসে। সেই চিঠিতে কাফিল প্রশ্ন তুলেছিলেন, পুষ্পা সেলস (অক্সিজেন সরবরাহকারী সংস্থা) বারবার নোটিস পাঠানো সত্ত্বেও কেন জেলাশাসক, মেডিক্যাল এডুকেশনের ডিজি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সচিব বকেয়া ৬৮ লাখ টাকা মেটায়নি?
কাফিল বলেন, ‘‘এক জন বাবা, চিকিৎসক, দেশের নাগরিক হিসেবে যা যা করা উচিত, সে দিন সেটাই করেছিলাম। বরং বাড়তি উদ্যোগ নিয়ে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করেছিলাম।’’ কিন্তু তাতে রাতারাতি ‘হিরো’ হয়ে ওঠা কাফিলকে প্রশাসনের কোপের মুখে পড়তে হয়েছিল। চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে তাঁকে বলেছিলেন, ‘‘এ সব করে হিরো হবেন ভেবেছেন!’’ এখনও কাফিলের ভবিতব্য যোগীর হাতে। বললেন, ‘‘ভবিষ্যতে কী করব, না করব, সবটাই মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছে। আমার সাসপেনশন যদি তুলে নেওয়া হয়, তা হলে আবার হাসপাতালে যোগ দেব। মানুষের চিকিৎসা করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy