ফাইল চিত্র।
এক সময়ে বিজেপিই আওয়াজ তুলেছিল ‘এক দেশ এক ভাষা’-র পক্ষে। খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ২০১৯ সালে দাবি করেছিলেন, হিন্দি ভাষার মাধ্যমেই দেশের ঐক্য বজায় রাখা সম্ভব। হিন্দুত্ব ও হিন্দি ভাষা দেশবাসীর উপরে চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে নতুন নয় বিরোধীদের। বিশেষ করে দক্ষিণের দলগুলি গোড়া থেকেই হিন্দি ভাষার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সরব। আজ হিন্দি দিবস অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অবশ্য নিজের অতীত অবস্থান থেকে সরে এসে বলেছেন, প্রশাসনিক কাজের ভাষা হিসেবে হিন্দি ব্যবহার হলেও অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষার মেলবন্ধনই হিন্দি ভাষার অস্তিত্বকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে।
হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে বিজেপির বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরেই সরব পূর্ব ও দক্ষিণ ভারতের রাজনৈতিক দলগুলি। বিশেষ করে সর্বভারতীয় পরীক্ষাগুলি কেন শুধু ইংরেজি ও হিন্দি ভাষাতেই হবে, তা নিয়ে এক সময়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল বিভিন্ন আঞ্চলিক দল ও রাজ্যগুলি। চাপের মুখে পড়ে পরবর্তী সময়ে নিটের মতো সর্বভারতীয় পরীক্ষায় আঞ্চলিক ভাষাকে অন্তর্ভুক্ত করতে বাধ্য হয় কেন্দ্র। সম্প্রতি মাদ্রাজ হাই কোর্ট একটি রায়ে জানিয়েছে, কোনও ভাবেই হিন্দি ভাষাকে চাপিয়ে দেওয়া চলবে না। যদিও গত সাত বছরে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার প্রশ্নে একাধিকবার সুপারিশ শোনা গিয়েছে বিজেপি নেতাদের মুখে। বিশেষ করে ‘এক দেশ এক রেশন কার্ড’, ‘এক দেশ এক ভোট’-এর মতো, ‘এক দেশ এক ভাষা’-র পক্ষেও সওয়াল করেছিলেন অমিত শাহের মতো নেতারা। ২০১৯ সালের হিন্দি দিবসের অনুষ্ঠানে অমিত শাহ বলেছিলেন, দেশের ঐক্যসাধন একমাত্র হিন্দি ভাষার মাধ্যমেই সম্ভব। কিন্তু আজ দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে হিন্দি দিবসের অনুষ্ঠানে অতীত অবস্থান থেকে কিছুটা সরে আসার ইঙ্গিত দেন শাহ। বলেন, ‘‘আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই হিন্দি ভাষা অন্য কোনও ভাষার সঙ্গে লড়াইয়ে নেই। হিন্দি ভাষা সব আঞ্চলিক ভাষার বন্ধু এবং সমস্ত ভাষার সঙ্গে সহবস্থানেই হিন্দি ভাষা টিকে থাকতে পারবে।’’
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আজ আঞ্চলিক ভাষার পক্ষেও সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে অমিত শাহকে। তিনি বলেন, ‘‘জাতীয় শিক্ষা নীতিতে মাতৃভাষায় শিক্ষার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। অনেকে মনে করেন, মাতৃভাষায় শিক্ষা পেলে শিশুর মানসিক বিকাশ কম হয়। সেটা ঠিক নয়। খোদ মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী মাতৃভাষায় শিক্ষার উপরে জোর দিয়েছিলেন।’’ তবে বিরোধীদের মতে, এখনও কেন্দ্রের একাধিক সরকারি পরীক্ষায় হিন্দি ও ইংরেজিকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়ে থাকে। সরকারের উচিত সেগুলিতেও আঞ্চলিক ভাষার মাধ্যমে পরীক্ষার সুযোগ করে দেওয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy