রাহুল গান্ধী বা তাঁর দল মানুষের মনের কথা বোঝেন না, জানেনও না এবং সেই কারণেই কংগ্রেস একের পর এক নির্বাচনে পরাস্ত হয়ে চলেছে বলে আজ মন্তব্য করলেন অমিত শাহ। তাঁর কথায়, ‘‘সরকারের সব জনমুখী সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলে কংগ্রেস জিতবে কী ভাবে!’’
শেষ বার ২০২৩ সালে তেলঙ্গনা বিধানসভায় জয়ের মুখ দেখেছিল কংগ্রেস। তার পর থেকে লোকসভা-সহ একাধিক রাজ্যের বিধানসভায় ভরাডুবি হয়ে চলেছে রাহুল গান্ধীর দলের। কংগ্রেস নিজে এই হারের পিছনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বিজেপির যোগসাজশকে দায়ী করলেও, আজ আমদাবাদের একটি সভা থেকে শাহ দাবি করেন, বিজেপি যেখানে মানুষের বিশ্বাস অর্জনের মাধ্যমে একের পর নির্বাচনে জিতছে, সেখানে কংগ্রেস এমন সব বিষয়ের বিরোধিতা করছে যাতে আমজনতার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ শাহ বলেন, ‘‘কংগ্রেস রামমন্দির নির্মাণ, পাকিস্তানের উপর বায়ুসেনার হামলা, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার, কাশীতে মন্দির নির্মাণের বিরোধিতা করে রাজনীতিকরতে চাইছে।’’
যদিও কংগ্রেসের পাল্টা বক্তব্য, বিজেপি ভুলে যাচ্ছে প্রায় ৬৪ শতাংশ মানুষ বিজেপিকে ভোট না দিয়ে বিরোধীদের ভোট দিয়েছেন। বিজেপি যাকে মানুষের সমর্থন বলতে চাইছে, তাতে দেশের অর্ধেকের বেশি মানুষের ভরসা নেই। বিপক্ষের ভোটে বিভাজনের কারণেই বিজেপি জয়ী হয়ে চলেছে।
শাহের প্রশ্ন— জনতার সমর্থন রয়েছে, এমন পদক্ষেপের বিরোধিতা করলে ভোট আসবে কোথা থেকে? বিজেপি যেখানে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করছে, সেখানে কংগ্রেস জনসমর্থন রয়েছে এমন বিষয় থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়েছে। শাহের মতে, উন্নয়নের রাজনীতির চেয়ে আইনি লড়াইকে অগ্রাধিকার দেওয়াই কংগ্রেসের বারংবার নির্বাচনে পরাজয়ের কারণ। শাহের দাবি, আসন্ন পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনেও কংগ্রেসের ভাল ফল করার কোনও আশা নেই।
রাহুল গান্ধীর অগ্রাধিকার কী, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শাহ। তাঁর মতে, রাহুল মানুষের সমস্যা নিয়ে ভাবার পরিবর্তে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে সময় নষ্ট করছেন। শাহ বলেন, ‘‘প্রশাসনিক ব্যবস্থা বা মানুষের সমস্যা জানার পরিবর্তে রাহুল গান্ধী এফআইআর বুঝতে সময় ব্যয় করছেন। যা তাঁর দায়িত্ব নয়।’’ রাহুলের এই ব্যর্থতার পিছনে রাহুল-ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস কর্মীদের দিকেও অভিযোগের আঙুল তুলেছেন শাহ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আসলে রাহুলের ঘনিষ্ঠ নেতারা রাহুলকে বাস্তব পরিস্থিতি বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছেন। বাস্তবের জমিতে মানুষ কী ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হন, তা রাহুলকে বোঝাতে পারেনি দল। মানুষের চাহিদা আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে রাহুলের কোনও ধারণাই নেই। উল্টো দিকে, উন্নয়নমুখী রাজনীতি ও মানুষের কল্যাণের কথা মাথায় রেখে বিজেপি জনমুখী প্রশাসন ও সংবেদনশীল শাসনব্যবস্থার মাধ্যমে জনাদেশ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
কংগ্রেসর তরফে জবাব দিয়ে তারিক আনোয়ার বলেছেন, ‘‘অমিতের কথা থেকে ঔদ্ধত্য ফুটে বেরোচ্ছে। কারা সরকার গড়বে, সেটা নাগরিকেরা ঠিক করেন। অন্য কেউ নয়। আপনার দাবিতে চক্রান্তের আঁচ পাওয়া যাচ্ছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)