প্রতীকী ছবি।
গত দুই দশকে দেশের মোট অরণ্য ধ্বংসের ১৪ শতাংশই ঘটেছে অসমে। আরও উদ্বেগজনক তথ্য, ২০২০ সালে উত্তর-পূর্বে প্রায় ৭৯ শতাংশ সবুজ কমেছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, মারাত্মক হারে সবুজ ধ্বংসের ফলেই এ বছর অসম-সহ উত্তর-পূর্বে তেমন বৃষ্টি হয়নি। পুজোর মাসেও চলছে নজিরবিহীন দাবদাহ।
এ বারের পুজোয় গুয়াহাটির তাপমাত্রা প্রায় ৩৮ ছুঁয়েছে, যা রেকর্ড। বৃষ্টিপাতের সব পূর্বাভাস মিথ্যে প্রমাণিত করে গরমের কামড় অব্যাহত। আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, জুনের গোড়ায় উত্তর-পূর্বে
প্রবেশ করা মৌসুমী বায়ু প্রায় সাড়ে চার মাস পরে, দুর্গাপুজোর সপ্তমীর দিন উত্তর-পূর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে।
এই সময়কালের মধ্যে অসমে বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল ১৪৮৬.২ মিলিমিটার। কিন্তু বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ১১৫১.৯ মিলিমিটার অর্থাৎ ২২ শতাংশ কম। গুয়াহাটিতে বৃষ্টির পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় আরও অনেকটাই কম ছিল। এ বছর তেমন বন্যাই হয়নি কাজিরাঙায়। উত্তর-পূর্বে মণিপুরে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি ছিল সর্বাধিক ৬০ শতাংশ। অরুণাচলে ২৮, নাগাল্যান্ডে ২৬, মিজোরামে ২২, মেঘালয়ে ২১ শতাংশ ও ত্রিপুরায় প্রায় ১৫ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে।
পরিবেশবিদদের মতে, ব্যাপক হারে পাহাড় ও গাছ কাটার ফলেই উত্তর-পূর্বের আবহাওয়া ও বৃষ্টিপাতে এমন প্রভাব পড়েছে। মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিভাগ ২০০১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব ভারতের কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে পাওয়া কয়েক লক্ষ ছবি ও অন্যান্য তথ্য পর্যালোচনা করে জানিয়েছে, ২০২০ সালে উত্তর-পূর্ব মোট ৭৯ শতাংশ সবুজ হারিয়েছে। যা দেশের ইতিহাসে সর্বাধিক।
গত বছর সারা দেশ মিলিয়ে ১,৪৩,০০০ হেক্টর হেক্টর এলাকা বৃক্ষহীন হয়েছে। তার মধ্যে উত্তর-পূর্বেই সবুজ ধ্বংস হয়েছে ১,১০,০০০ হেক্টর এলাকায়। সবুজ ধ্বংসের ক্ষেত্রে অসমের হার ১৪.১ শতাংশ, নাগাল্যান্ডের ১১.৯
শতাংশ, অরুণাচলের হার ১১.৬ শতাংশ, মেঘালয় ও মণিপুরের হার যথাক্রমে ১০.৩ শতাংশ ও মিজোরামের ১৩ শতাংশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০০১-২০২০ সালের মধ্যে সারা দেশে যে পরিমাণ সবুজ ধ্বংস হয়েছে তার মধ্যে অসমের ভাগই ১৪.১ শতাংশ। যা উত্তর-পূর্বে সর্বাধিক। আবার সবচেয়ে দ্রুত হারে অরণ্য ধ্বংস হচ্ছে নাগাল্যান্ড ও ত্রিপুরায়। বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য, উত্তর-পূর্বের ভূ-পৃষ্ঠ থেকে সবুজের চাঁদোয়া কার্যত সরে যাচ্ছে। ফলে কমতে বাধ্য বৃষ্টিপাত, বাড়তেই থাকবে তাপমাত্রা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy