নিরাপত্তাকর্মীদের দিয়ে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে দেহ-তল্লাশি নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। রক্ষীরা সারা দেহে হাত বুলিয়ে তল্লাশি চালাবেন, অনেক যাত্রীরই এটা নাপসন্দ। তাই বিদেশের বহু বিমানবন্দরে এখন যন্ত্রের সাহায্যে দেহ-তল্লাশি হয়। ‘বডি স্ক্যানার’ নামে সেই যন্ত্র এ বার দিল্লিতে এনে পরীক্ষামূলক ভাবে তল্লাশির কাজ শুরু করেছে বিমান মন্ত্রক। পরীক্ষা সফল হলে কলকাতা-সহ দেশের সব বিমানবন্দরে সেই যন্ত্র বসানো হবে।
১ এপ্রিল থেকে কলকাতা-সহ দেশের সাতটি বিমানবন্দরে যাত্রীদের হাতব্যাগের ট্যাগে স্ট্যাম্প লাগানো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তার এক দিন পরে, রবিবার কলকাতায় এসেছিলেন সিআইএসএফ (সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিওরিটি ফোর্স)-এর ডিজি ওমপ্রকাশ সিংহ। তিনি জানান, দিল্লি বিমানবন্দরে দু’টি বডি স্ক্যানার রেখে পরীক্ষা চলছে। দেশের বেশির ভাগ বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে সিআইএসএফ-ই।
কোনও যাত্রী বোর্ডিং কার্ড নিয়ে যখন বিমানের দিকে এগিয়ে যান, তখন মাঝপথে একটি জায়গায় তাঁর দেহ এবং হাতব্যাগ তল্লাশ করে সিআইএসএফ। কেউ অস্ত্র, নিষিদ্ধ বা বিপজ্জনক বস্তু নিয়ে গেলে বডি স্ক্যানার সঙ্গে সঙ্গে তা ধরে ফেলবে। কোনও রক্ষীকে হাত দিয়ে তল্লাশি চালাতে হবে না। হাতব্যাগ পরীক্ষার পরে তাতে স্ট্যাম্প মারার প্রক্রিয়া বন্ধ করা হয়েছে সময় বাঁচানোর জন্য। বডি স্ক্যানারের ভিতর দিয়ে যাত্রীদের যাওয়ার ব্যবস্থায় যন্ত্রই দেহ তল্লাশির কাজ করে দেওয়ায় আরও বেশি সময় বাঁচবে বলে নিরাপত্তা অফিসারেরা জানাচ্ছেন। এই স্ক্যানারটি দেখতে আদতে ছোট গোল একটি স্নানঘরের মতো। এক দফায় এক জন যাত্রীই তাতে ঢুকতে পারেন। তার দেওয়াল স্বচ্ছ। তাই কেউ ভিতরে ঢুকলে বাইরে থেকে তাঁকে দেখা যায়।
ওম প্রকাশ জানান, বিদেশের সঙ্গে এ ক্ষেত্রে একটি মৌলিক তফাত রয়েছে ভারতের। এখানে মহিলারা অনেক বেশি গয়না পরেন। স্ক্যানারে ঢুকতে গেলে যাত্রীদের গয়নাও খুলে রাখতে হয়। দিল্লিতে অনেক মহিলা গয়না খুলে ঢুকতে রাজি হচ্ছেন না। অনেক ক্ষেত্রেই মহিলারা হাতের শাঁখা-পলা অথবা মঙ্গলসূত্র এক মুহূর্তের জন্যও খুলতে চান না। কারণ, শরীর থেকে ওগুলোকে বিচ্ছিন্ন করাটা তাঁদের কাছে অশুভ। ওম প্রকাশের কথায়, ‘‘আমরা তো কাউকে ওগুলো খুলতে বাধ্য করাতে পারি না। তাই স্ক্যানার রাখা হয়েছে।’’ সেই সঙ্গে যন্ত্রে দেহ-তল্লাশিও চলছে। জার্মানি ও আমেরিকা থেকে দু’টি স্ক্যানার আনা হয়েছে। অন্য কয়েকটি দেশে আরও আধুনিক যন্ত্রের খোঁজ চলছে। সবই খুব ব্যয়সাপেক্ষ। তবে যাত্রীদের ধীরে ধীরে স্ক্যানারে অভ্যস্ত করে তোলাই তাঁদের লক্ষ্য বলে জানান সিআইএসএফ-প্রধান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy