প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট শরীরের জন্য ভাল নয়। ছবি: সংগৃহীত।
জিমে গিয়ে ঘাম ঝরিয়ে শরীরচর্চা করলে এবং সঙ্গে প্রোটিন ‘সাপ্লিমেন্ট’ খেলেই সুঠাম চেহারা গড়ে তোলা যাবে। এমন ধারণা অনেকের মনে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে। লোহালক্কড় টেনে শরীরচর্চা করায় কোনও বাধা নেই। কিন্তু প্রোটিন ‘সাপ্লিমেন্ট’ খাওয়ার অভ্যাস ডেকে আনছে বিপদ। সম্প্রতি ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ’ (আইসিএমআর) একটি নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছে, অবিলম্বে প্রোটিন ‘সাপ্লিমেন্ট’ খাওয়া বন্ধ করা জরুরি।
প্রোটিন ‘সাপ্লিমেন্ট’ খাওয়ার প্রবণতা ইদানীং অত্যধিক বেড়ে গিয়েছে। পেশিবহুল চেহারা বানানোর সহজতম উপায় হিসাবে অনেকেই ভরসা রাখেন প্রোটিন ‘সাপ্লিমেন্টের’ উপর। অনেক ক্ষেত্রে জিমের প্রশিক্ষকদের পরামর্শ মেনেই ‘সাপ্লিমেন্ট’ বেছে নেন তাঁরা।
শরীরের ভোল পাল্টে ফেলার এই দুর্নিবার ইচ্ছে একটু একটু করে বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। শরীরের জন্য প্রোটিন অত্যন্ত জরুরি। শরীর গঠনে প্রোটিনের ভূমিকা অনবদ্য। তবে প্রোটিনের বিকল্প ‘সাপ্লিমেন্ট’ হতে পারে না। কৃত্রিম উপায়ে ফিট থাকার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসা জরুরি। এতে চেহারায় সাময়িক পরিবর্তন এলেও, আদতে হিতে বিপরীত হয়।
প্রোটিন ‘সাপ্লিমেন্ট’ খাওয়ার কি আদৌ কোনও প্রয়োজনীয়তা আছে? ‘সাপ্লিমেন্টের’ প্রতি আসক্তি শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর? পুষ্টিবিদ এবং যাপন সহায়ক অনন্যা ভৌমিক বললেন, ‘‘সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার দরকার পড়ে তখনই, যখন শরীরে কোনও উপাদানের ঘাটতি তৈরি হয়। কিন্তু শরীরে সেই উপাদানের ঘাটতি আছে কিনা কিংবা থাকলেও সেটা কতটা, তা বুঝবেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দক্ষ কারও পরামর্শ ছাড়াই প্রোটিন ‘সাপ্লিমেন্ট’ খাওয়া হয়। ফলে শারীরিক নানা ক্ষতি হয় তাতে। শুধু প্রোটিন বলে নয়, যে কোনও ‘সাপ্লিমেন্ট’ বেশি খাওয়ার ক্ষতিকর দিক আছে। প্রোটিন ‘সাপ্লিমেন্ট’ খাওয়ার ঝোঁক বেশি ২০-৪০ বছর বয়সিদের মধ্যে। পেশিবহুল চেহারার জন্য এই ‘সাপ্লিমেন্ট’ খাওয়ার অভ্যাস একেবারেই ভাল নয়। এর ফলে হজমের সমস্যা দেখা দেয়। অত্যধিক প্রোটিন শরীরে যাওয়ার কারণে কিডনির উপর চাপ পড়ে। ‘লিভার’ কিছুটা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই ‘সাপ্লিমেন্ট’ নয়, প্রোটিন পেতে হলে সব সময় খাবারের উপর ভরসা রাখা জরুরি।’’
‘আইসিএমআর’ এবং ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউট্রিশন’-এর প্রকাশিত গবেষণাপত্রে উঠে এসেছে এ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য। একটানা প্রোটিন ‘সাপ্লিমেন্ট’ খাওয়ার ফলে হাড়ের ক্ষয় হয়। মূত্রাশয় সংক্রান্ত নানা সমস্যা দেখা দেয়। ঝুঁকি এড়াতে ‘সাপ্লিমেন্ট’ খাওয়া বন্ধ করতে বলা হয়েছে। ‘সাপ্লিমেন্ট’ না খেয়েও ফিট থাকার অন্য উপায় আছে। তার মধ্যে অন্যতম প্রোটিন যুক্ত খাবার বেশি করে খাওয়া। সময়ে খাবার খাওয়া। প্রোটিনের পাশাপাশি কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy