Advertisement
E-Paper

এ বার নজরদারি হোয়াটসঅ্যাপেও!

‘ঢালাও নজরদারি’ নিয়ে সরকারের সাম্প্রতিক বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে এ দিন সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছেন দুই আইনজীবী এম এল শর্মা ও অমিত সাহনি। তবে এম এল শর্মার আর্জির দ্রুত শুনানিতে রাজি হয়নি সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:০১
Share
Save

এর আগে প্রয়োজনে যে কোনও কম্পিউটারে নজরদারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। এ বার কে কোথায় কার সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় কী কথা চালাচালি করছেন তার উপরে নজরদারি রাখার খসড়া প্রস্তাব তৈরি করেছে কেন্দ্র। যা দেখে কংগ্রেসের কটাক্ষ, এটাই মোদী মডেল। কারণ বিশ্বের সবচেয়ে বড় গোয়েন্দা হলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী, নরেন্দ্র মোদী। অন্য দিকে ‘ঢালাও নজরদারি’ নিয়ে সরকারের সাম্প্রতিক বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে এ দিন সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছেন দুই আইনজীবী এম এল শর্মা ও অমিত সাহনি। তবে এম এল শর্মার আর্জির দ্রুত শুনানিতে রাজি হয়নি সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রি।

কম্পিউটারের পরে এ বার গুগল, হোয়াটসঅ্যাপের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘বেআইনি’ তথ্য খুঁজতে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। বিশেষ করে কোনও মেসেজ বা বার্তার উৎসস্থল কোন মোবাইল ফোন বা কোথা থেকে সেটি প্রথম ফরোয়ার্ড হয়েছে তা চিহ্নিত করতে তথ্যপ্রযুক্তি আইন সংশোধনের কথা বলা হয়েছে একটি খসড়ায়। আর ওই চিহ্নিতকরণের প্রশ্নে ‘আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে কী ভাবে গোটা নজরদারি প্রক্রিয়া চালানো হবে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির সঙ্গে এক দফা আলোচনা সেরেছে কেন্দ্র। সব মিলিয়ে ভোট বাজারে নজরদারি প্রশ্নে কোনও ছাড় দিতে রাজি নয় মোদী সরকার।

সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তিতে ১০টি গোয়েন্দা সংস্থাকে যে কোনও কম্পিউটারে আসা বা তা থেকে যাওয়া বার্তা খতিয়ে দেখার অধিকার দেয় কেন্দ্র। সাংকেতিক কোড ভেঙে (ডিক্রিপশন) কম্পিউটার থেকে তথ্য সংগ্রহের অধিকারও দেওয়া হয়েছে তাদের। তার পরেই ব্যক্তিপরিসরে হস্তক্ষেপের অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা। তারপরে যে ভাবে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে তথ্য সংগ্রহে সরকার নেমেছে তাতে আগামী দিনে কোনও নাগরিকের ব্যক্তিপরিসরের স্বাধীনতা বলে কিছু থাকবে না বলেই মত কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির। সরকারও স্বীকার করে নিয়েছে সংশোধিত তথ্যপ্রযুক্তি বিধির খসড়া নিয়ে গুগল, হোয়াটসঅ্যাপ, আমাজন, ইয়াহু, টুইটার, শেয়ারচ্যাট, সেবি ও ইন্টারনেট পরিষেবা সংস্থাগুলির সংগঠনের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ৭ জানুয়ারির মধ্যে এ নিয়ে মত জানাবে ওই সংস্থাগুলি। ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রক্রিয়াটি শেষ করতে চাইছে সরকার।

সংশোধিত তথ্যপ্রযুক্তি আইনের খসড়া অনুযায়ী ‘বেআইনি’ বিষয়বস্তু খুঁজে বার করে সেগুলি তিন দিনের মধ্যে সরানোর ব্যবস্থা করতে হবে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে। তা না হলে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে সরকার। হোয়াটসঅ্যাপের মতো বার্তা আদানপ্রদান পরিষেবায় যে কোনও কথোপকথন সাংকেতিক কোডের মাধ্যমে সুরক্ষিত থাকে (এনক্রিপশন)। সংশোধিত আইন চালু হলে সেই এনক্রিপশন ভাঙতে হবে। এ নিয়ে আপত্তি রয়েছে হোয়াটসঅ্যাপের মতো সংস্থাগুলির। তবে সরকারের দাবি, হোয়াটসঅ্যাপকে এনক্রিপশন ভেঙে বার্তা পড়তে বলা হচ্ছে না। কেবল কোনও ‘বেআইনি’ বার্তার উৎস জানতে বলা হচ্ছে। সরকারের যুক্তি, এতে ভবিষ্যতে গুজব ছড়ানো বন্ধ করতে সুবিধে হবে। কারণ, অপরাধী ও রাষ্ট্রদ্রোহীরা নেতিবাচক ভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করায় প্রশাসনের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। তাই নিরাপত্তার খাতিরেই ওই পদক্ষেপ করতে বাধ্য হচ্ছে সরকার। যদিও ওই যুক্তি মানতে রাজি নন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। তাঁর মতে, ‘‘এটি আসলে গুজরাত মডেল। মোদী-অমিত শাহেরা মনে করেন সকলেই চোর। সকলেই খারাপ। তাই আম জনতার উপর নজরদারি চালাতেই এ ধরনের পদক্ষেপ করা হচ্ছে। আসলে বিগ ব্রাদার নরেন্দ্র মোদী সবাইকে ভয়ে রাখতে চান।’’

Surveillance WhatsApp Google Twitter Central Govt

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}