Advertisement
২৬ মার্চ ২০২৩
Juboti Conference

‘যুবতী সম্মেলন’ করবে বিজেপি, লোকসভা ভোটে নবীনাদের পাশে টানতে গেরুয়া শিবিরের ‘নব’ পথ

আগামী লোকসভা নির্বাচনে অবিবাহিত মহিলাদের ভোট নিশ্চিত করতে ‘যুবতী সম্মেলন’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই সম্মেলনে বাংলা থেকে ১৪০ জনের প্রতিনিধি দলের হাজির থাকার কথা।

লোকসভা নির্বাচনে অবিবাহিত মহিলাদের ভোট নিশ্চিত করতে ‘যুবতী সম্মেলন’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব।

লোকসভা নির্বাচনে অবিবাহিত মহিলাদের ভোট নিশ্চিত করতে ‘যুবতী সম্মেলন’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২৩:৪০
Share: Save:

লক্ষ্য কেন্দ্রে তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় আসা। তা মাথায় রেখে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য ইতিমধ্যেই ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ‘পাখির চোখ’ করা হয়েছে সংখ্যালঘু ভোটকেও। এরই পাশাপাশি গেরুয়া শিবিরের নজরে রয়েছে ‘যুবতী ভোট’। আগামী লোকসভা নির্বাচনে অবিবাহিত মহিলাদের ভোট নিশ্চিত করতে ‘যুবতী সম্মেলন’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই সম্মেলনে বাংলার প্রতিনিধি দলও যাতে হাজির থাকে, সেই মর্মে চিঠি দেওয়া হয়েছে রাজ্য বিজেপিকে।

Advertisement

বিজেপি সূত্রে খবর, গত লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর দলের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, দেশ জুড়ে অবিবাহিত মহিলাদের ভোট দলের ঝুলিতে খুব একটা পড়েনি। সময় থাকতে থাকতে এ বার সেই ফাঁকও পূরণ করে ফেলতে চাইছে দল। সেই লক্ষ্যেই এই সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে। দলীয় সূত্রেরই দাবি, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি ফেব্রুয়ারি মাসেই দিল্লিতে এই সম্মেলন হওয়ার কথা। এই সম্মেলনকে ‘কুশলী’ করে তুলতে রাজ্যে রাজ্যে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে। চিঠি পৌঁছেছে বাংলাতেও। শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ, সম্মেলনে ১৪০ জন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল পাঠাতে হবে রাজ্য বিজেপিকে।

পাশাপাশি, বঙ্গ বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, রাজ্যে দলের যুব মোর্চার ভিতরে ‘যুবতী’দের নিয়ে একটি কমিটি গড়ারও নির্দেশ দিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। বাংলায় দলের যুব মোর্চার সভাপতি ইন্দ্রনীল খাঁকে ওই কমিটি গড়তে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে নির্দেশ, ওই কমিটির সদস্যরা বছরভর কাজ করবেন। রাজ্যে যুবতী সম্মেলন আয়োজন করার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন তাঁরা।

জাতীয় রাজনীতির বৃত্তে যাঁরা ঘোরাফেরা করেন, তাঁদের অনেকেরই দাবি, কাঠামোগত দিক থেকে বিজেপি আদতে ‘পুরুষতান্ত্রিক’ দল। তাঁদের যুক্তি, বিজেপিতে কখনও কোনও মহিলাকে সভাপতি পদে বসানো হয়নি। সংগঠনের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ পদ ‘দখল’ করে রেখেছেন পুরু‌ষেরা। দলে ‘মহিলা মোর্চা’ রয়েছে ঠিকই, কিন্তু নিয়মরক্ষার খাতিরে কিছু পদ বাদ দিয়ে যুব মোর্চার গুরুত্বপূর্ণ পদেও পুরুষদেরই ‘দাপট’। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে যুব মোর্চার অন্দরে যুবতীদের নিয়ে এমন কমিটি গড়ার নির্দেশকে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করছেন দলের একাংশ।

Advertisement

কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এই নির্দেশকে ‘বিচক্ষণ’ সিদ্ধান্ত বলে দাবি করে বিজেপির এক রাজ্য নেতা জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের ‘স্বচ্ছ’ ভাবমূর্তি তুলে ধরে এবং সরকারি প্রকল্পের প্রচার করে গত লোকসভায় শহরাঞ্চলের যুবতীদের ভোট টানতে খানিক সক্ষম হলেও গ্রামাঞ্চলের অবিবাহিত মহিলাদের ভোট একেবারেই পায়নি দল। ওই নেতার কথায়, ‘‘পুরুষকর্মীদের কাছে অনেক মহিলাই স্বচ্ছন্দ নন। তাঁরা মন খুলে কথা বলতে পারেন না। তাই, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চাইছেন, দলের মহিলা কর্মীরা যাতে বাড়ি বাড়়ি গিয়ে একেবারে হেঁসেলে ঢুকে যান। মেয়েদের সুখ-দুঃখের কথা শোনেন। এতে যুবতীরাও লজ্জা ভেঙে সাবলীল ভাবে তাঁদের কাছে অভাব-অভিযোগ জানাবেন।’’

শুধু লোকসভা নির্বাচনই নয়, যুবতীদের ভোট এক বার নিশ্চিত করতে পারলে রাজ্যে রাজ্যে তা বিধানসভা নির্বাচনেও দলকে বাড়তি অক্সিজেন জোগাবে বলে মত দলের একটি বড় অংশের। তাঁদের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মহিলা ভোটের সুফল প্রায় পুরোটাই পেয়েছে শাসকদল তৃণমূল। সেই ভোটে ভাগ বসাতে না পারলে বাংলাতেও ক্ষমতা দখল অধরাই থেকে যাবে। এক পদ্মনেতার কথায়, ‘‘তৃণমূল জমানায় এ রাজ্যে প্রায়ই মহিলাদের উপর আক্রমণ, নির্যাতন হচ্ছে। এই বিষয়গুলো তরুণীদের কাছে তুলে ধরা দরকার। তাঁদের বোঝানো দরকার। আর সেই কাজ দলের যুবতীরা খুব সহজেই করতে পারবে বলে মনে হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.