Advertisement
E-Paper

উপজাতিদের এডিসি তুলে রাজ্য পরিষদ দিতে চায় বিজেপি

সিপিএমকে হারাতে গেলে রাজ্যে উপজাতি সংগঠনের সমর্থন চাই। দু’কূল রক্ষা করতে চেয়ে ত্রিপুরায় এ বার উপজাতিদের জন্য স্বশাসিত জেলা পরিষদ (এডিসি) তুলে দিয়ে শক্তিশালী রাজ্য পরিষদ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিতে চলেছে বিজেপি।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:৪৫

নীতিগত ভাবে তারা ছোট রাজ্যের পক্ষে। কিন্তু ত্রিপুরা ভেঙে উপজাতিদের জন্য পৃথক রাজ্য আর সম্ভব নয়। আবার সিপিএমকে হারাতে গেলে রাজ্যে উপজাতি সংগঠনের সমর্থন চাই। দু’কূল রক্ষা করতে চেয়ে ত্রিপুরায় এ বার উপজাতিদের জন্য স্বশাসিত জেলা পরিষদ (এডিসি) তুলে দিয়ে শক্তিশালী রাজ্য পরিষদ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিতে চলেছে বিজেপি।

সিপিএমের উপজাতি সমর্থনে ধাক্কা দেওয়ার লক্ষ্যে বিধানসভা ভোটে এ বার আইপিএফটি-র সঙ্গে জোট করেছে নরেন্দ্র মোদীর দল। ওই জোটকে নিশানা করে পাল্টা আক্রমণে যাচ্ছে সিপিএম। দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির প্রশ্ন, ‘‘বিজেপি এবং আরএসএস সব সময় অখণ্ড ভারতের কথা বলে। অথচ তারা ত্রিপুরায় জোট করেছে এমন দলের সঙ্গে, যারা বিচ্ছিন্নতাবাদী দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছে! এ আবার কেমন জোট?’’ ত্রিপুরা জুড়ে ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাট, মানিক সরকারেরা এই অস্ত্রে বিঁধতে চাইছেন গেরুয়া শিবিরকে। আক্রমণ মোকাবিলায় রক্ষাকবচ খাড়া করতে হচ্ছে বিজেপি-কেও।

আইপিএফটি-র নেতা এন সি দেববর্মা, মেবার কুমার জামাতিয়াদের নিয়ে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে দেখা করিয়েছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক উপজাতি নেতাদের আর্থ-সামাজিক দাবি খতিয়ে দেখার জন্য একটি মধ্যস্থতাকারী কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যারা ত্রিপুরায় গিয়ে উপজাতি প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবে। ত্রিপুরায় প্রচারে গিয়ে স্বয়ং রাজনাথও যাতে সেই আশ্বাস দেন, তেমন আর্জি জানিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। পাশাপাশি আইপিএফটি-কে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পৃথক উপজাতি রাজ্যের দাবি নিয়ে বিজেপি-র পক্ষে এগোনো সম্ভব নয়।

উপজাতিদের মন পেতেই বিজেপি-র পরবর্তী সিদ্ধান্ত, তাঁদের জন্য শক্তিশালী রাজ্য পরিষদ তৈরি করা। দলের নির্বাচনী ইস্তাহারে বিজেপি প্রতিশ্রুতি দিতে চলেছে যে, তারা ক্ষমতায় এলে এডিসি তুলে দিয়ে তৈরি হবে রাজ্য পরিষদ। ত্রিপুরার ভারপ্রাপ্ত বিজেপি-র পর্যবেক্ষক সুনীল দেওধরের বক্তব্য, ‘‘শুধু নাম বদলে কিছু হয় না, আমরাও জানি। এডিসি-র হাতে এখন নিচু তলায় তহবিল খরচের অধিকার দেয় না বামফ্রন্ট সরকার। রাজ্য পরিষদ উপজাতিদের উন্নয়নে নিজেরাই অর্থ বরাদ্দ এবং খরচ করতে পারবে।’’ মেঘালয়ে জেলাভিত্তিক আলাদা উপজাতি থাকায় সেখানে যে জেলা পরিষদ সম্ভব, ত্রিপুরার মিশ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে সেই মডেল সম্ভব নয় বলে বিজেপি নেতৃত্বের যুক্তি।

সিপিএম নেতৃত্ব অবশ্য বিজেপি-র উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন। মানিকবাবুদের বক্তব্য, পৃথক রাজ্যের দাবিতে যে এনএলএফটি ত্রিপুরায় হিংসা ছড়িয়েছে, তাদেরই রাজনৈতিক শাখা আইপিএফটি-র হাত ধরেছে বিজেপি। এখন অন্য প্রতিশ্রুতি দিলেও ক্ষমতা পেলে তারা স্বমূর্তি ধারণ করবে! তাই রাজ্যে শান্তি রাখার স্বার্থে বিজেপি-কে রোখার ডাক দিচ্ছেন তারা। প্রচারে মানিকবাবু বলছেন, ‘‘এই রাজ্যে সব ধরনের মানুষের মধ্যে যে সংহতি, তাকে বিনষ্ট করার নানা অপচেষ্টা আগেও হয়েছে। এখন শিকারি মোরগের মতো আইপিএফটি-কে ধরেছে বিজেপি!’’ বামফ্রন্ট তাদের ইস্তাহার প্রকাশ করেছে মঙ্গলবারই।

BJP Tripura Tribal Parties ADC Rajya Parishad
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy