প্রেমিকের সঙ্গে স্ত্রীকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলাই কাল হল যুবকের। তাঁকে সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করে ফেলেন দু’জনে মিলে। আর সেই পরিকল্পনা মতো ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা ওই যুবককে হাতুড়ি দিয়ে খুন করা হয়। তার পর তাঁর দেহ লোপাটের জন্য কাঠ টুকরো করার গ্রাইন্ডার মেশিন নিয়ে আসা হয়। সেই মেশিনের সাহায্যে দেহ কয়েক টুকরো করা হয়। তার পর সেই দেহাংশ নালায় এবং গঙ্গায় ফেলে দেওয়া হয়। সম্প্রতি মুন্ডুহীন দেহ উদ্ধার হতেই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। আবার সেই উত্তরপ্রদেশ। মেরঠের পর এ বার ঘটনাস্থল সম্ভল। প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামীকে খুনের পর দেহ টুকরো করার অভিযোগ উঠল এক মহিলার বিরুদ্ধে।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত মহিলা রুবি এবং তাঁর প্রেমিক গৌরবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সুপার কেকে বিশ্নোই জানিয়েছেন, দুই অভিযুক্তকে ২০ ডিসেম্বর গ্রেফতার করা হয়েছে। চন্দৌসি এলাকার চুন্নি মহল্লার বাসিন্দা রুবি। গত ১৮ নভেম্বর তিনি একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। রুবি দাবি করেন, তাঁর স্বামী রাহুল গত কয়েক দিন ধরে নিখোঁজ। তার ঠিক এক মাসের মধ্যে গত ১৫ ডিসেম্বর ইদগা এলাকার একটি নালা থেকে ক্ষতবিক্ষত দেহাংশ উদ্ধার হয়। মাথা, হাত এবং পা উধাও ছিল। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দেহাংশ উদ্ধার করা হয়। সেটির ময়নাতদন্ত করা হয়। ফরেন্সিক পরীক্ষাও করা হয়।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, তদন্তের সময় দেখা যায়, দেহাংশের এক জায়গায় ‘রাহুল’ নাম উল্কি করা রয়েছে। দেহটি শনাক্ত করতে ওই নামের কোনও যুবক আশপাশের এলাকায় নিখোঁজ হয়েছেন কি না তা খতিয়ে দেখা হয়। তখন জানা যায়, চন্দৌসি এলাকায় এক মহিলা তাঁর স্বামীর নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন। ঘটনাচক্রে, সেই যুবকের নাম রাহুল। তার পরই রাহুলের ফোন নম্বর জোগাড় করে পুলিশ। তাঁকে ফোন করা হয়। কিন্তু পুলিশ জানতে পারে, গত ১৮ নভেম্বর থেকে রাহুলের ফোন বন্ধ। সেই সূত্র ধরে রাহুলের স্ত্রীকে তলব করে পুলিশ। এই ঘটনায় তাঁর হাত রয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ হয় পুলিশের। তার ভিত্তিতে রুবিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। পুলিশ সুপারের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময় খুনের কথা স্বীকার করেন মহিলা। তাঁর বয়ানের ভিত্তিতে প্রেমিক গৌরবকেও আটক করে পুলিশ। পরে দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়।
জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে, রাহুলকে হাতুড়ি এবং লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে খুনের পর তাঁর দেহ টুকরো করা হয়। তার পর মাথা, হাত এবং পা গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়। যাতে কেউ দেহটিকে শনাক্ত করতে না পারে। আর বাকি দেহাংশ নালায় ফেলে দেওয়া হয়। কিন্তু দেহের ওই অংশেই উল্কি করা ছিল ‘রাহুল’ নাম। আর সেই নামের সূত্র ধরেই দুই অভিযুক্তের হদিস পায় পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত মার্চে মেরঠে মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ রাজপুতকে খুনের অভিযোগ ওঠে তাঁর স্ত্রী মুস্কান রস্তোগী এবং প্রেমিক সাহিল শুক্লের বিরুদ্ধে। সৌরভের দেহ টুকরো করে ড্রামে ভরে সিমেন্ট দিয়ে মুখবন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই ঘটনা তোলপাড় ফেলেছিল গোটা দেশে। সম্ভলের ঘটনা মেরঠের সৌরভ খুনের স্মৃতি উস্কে দিল।