জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বিএসএফ ডিজি।—নিজস্ব চিত্র।
করিমগঞ্জে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পরিদর্শন করলেন সীমা সুরক্ষা বাহিনীর (বিএসএফ) ডিরেক্টর জেনারেল দেবেন্দ্রকুমার পাঠক।
আজ সকালে শহরের সরকারি স্কুলের খেলার মাঠে তাঁর হেলিকপ্টার অবতরণ করে। তাঁকে স্বাগত জানান জেলাশাসক সঞ্জীব গোঁহাই বরুয়া, পুলিশ সুপার বিষ্ণুপ্রসাদ রাভা। হেলিপ্যাড থেকে দেবেন্দ্রকুমার যান স্টিমারঘাট রোডের বিএসএফ ছাউনিতে। সেখানে কাছাড় এবং করিমগঞ্জ জেলায় মোতায়েন সীমা সুরক্ষা বাহিনীর আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে লঞ্চে কুশিয়ারা নদীর তেসুয়া থেকে সরিষা পর্যন্ত কাঁটাতারের বেড়া-বিহীন সাড়ে তিন কিলোমিটার সীমান্ত পরিদর্শন করেন।
করিমগঞ্জ শহরের একেবারে লাগোয়া বাংলাদেশ সীমান্ত। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে, সীমান্ত থেকে ১৫০ মিটার দূরত্বে কাঁটাতারের বেড়া বসাতে হয়। কিন্তু করিমগঞ্জে তা করা হলে জেলা দায়রা জজের আদালত, প্রধান ডাকঘর, কালীবাড়ি, সন্তরবাজারের পাশাপাশি কয়েকশো বাড়ি কাঁটাতারের বাইরে চলে যেত। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা তাই এ নিয়ে আপত্তি তোলেন। পরে সেই নিয়ম কিছুটা শিথিল করা হয়। কিন্তু তার পরও দ্বিস্তরীয় কাঁটাতার বসানোর ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। উচ্ছেদের আশঙ্কায় পড়েন কয়েকশো পরিবার। রাজনৈতিক দলগুলি তা নিয়ে সরব হয়। সে সবের দিকে তাকিয়ে করিমগঞ্জ শহরের লাগোয়া সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া বসানো নিয়ে ভারত সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করে। বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক সীমান্তে নদীতীরের ৫ মিটার ছেড়ে কাঁটাতারের বেড়া বসানোয় কোনও আপত্তি নেই বলে জানায়। এ বার সেই সাড়ে তিন কিলোমিটার উন্মুক্ত সীমান্তে এক স্তরের কাঁটাতার বসানো হবে। তারই নজরদারিতে এ দিন শহরে পৌঁছন সীমা সুরক্ষা বাহিনীর ডিজি। লঞ্চে নদী-তীরবর্তী এলাকা ঘুরে দেখলেও, করিমগঞ্জের জারাপাতা, জগন্নাথি, লাফাশাইল এলাকায় নামেননি তিনি। কিন্তু নিজেদের সমস্যার কথা তাঁকে জানাতে সেই সব গ্রামের বাসিন্দারা অপেক্ষা করছিলেন।
জগন্নাথি, লাফাশাইল, জারাপাতার বাসিন্দারা জানান, ভারতের নাগরিকত্ব পেলেও প্রতি দিন রাতে তাঁদের নাগরিকত্ব হারান। কারণ কাঁটাতারের বেড়ার বাইরে থাকেন তাঁরা। নির্দিষ্ট সময়ে সীমান্তের গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাতে তাই কোনও বিপদে পড়লে স্বভূমির কোনও প্রশাসনিক সাহায্য সহজে তাঁরা পান না। কাঁটাতারের বেড়ার বাইরে থাকা ওই সব গ্রামের বাসিন্দারা এ সব কথাই বিএসএফ ডিজি-কে বলতে চেয়েছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy