Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Rigzin Spalbar

সরেনি চিনা সেনা, কিছুই বদলায়নি পরিস্থিতি, দাবি লাদাখি ধর্মগুরুর

লাদাখের অধিকাংশ বাসিন্দা বৌদ্ধ। জম্মু ও কাশ্মীর থেকে আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ার পরে গোটা লাদাখ উৎসবে মেতে উঠেছিল।

রিজগিন স্পালবার

রিজগিন স্পালবার

সাবির ইবন ইউসুফ
শ্রীনগর শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২০ ০৫:৩৪
Share: Save:

লাদাখের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষুব্ধ সেখানকার অন্যতম প্রধান বৌদ্ধ ধর্মগুরু রিজগিন স্পালবার। তাঁর স্পষ্ট কথা, পূর্ব লাদাখের পরিস্থিতি নিয়ে সরকার অকারণ লুকোছাপা করছে। চিন আদৌ তাদের সেনা সরায়নি। ভারতের ভূখণ্ড ছেড়ে এক পা-ও সরেনি তারা। সংঘর্ষের সময়ে এই এলাকার ছবিটা যা ছিল, এখনও ঠিক তেমনই রয়েছে। কেবল দু’দেশের সেনাদের হাতাহাতিটা বন্ধ হয়েছে। আর এ সবের মধ্যে সব চেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছেন বহু কাল ধরে এই এলাকায় বসবাস করা যাযাবরেরা। তাদের এক মাত্র জীবিকা পশুচারণ বন্ধ হয়েছে।

লাদাখের অধিকাংশ বাসিন্দা বৌদ্ধ। জম্মু ও কাশ্মীর থেকে আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ার পরে গোটা লাদাখ উৎসবে মেতে উঠেছিল। কিন্তু দিল্লির নরেন্দ্র মোদী সরকার পূর্ব লাদাখে চিন সীমান্তের পরিস্থিতি যে ভাবে মোকাবিলা করছে, তা নিয়ে নতুন এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। ধর্মগুরু রিজগিন বলছেন, ‘‘আমাদের সরকার যে চিনকে কড়া বার্তা দিতে পারেনি সেটা পরিষ্কার। সেই জন্যই চিন এত কিছুর পরেও ভারতের ভূখণ্ড ছেড়ে নড়েনি। এখন তারা সেই ভূখণ্ড তাদের বলে দাবি করছে। হাজার হাজার চিনা সেনাও এই এলাকায় রয়ে গিয়েছে।’’ ধর্মগুরুর প্রশ্ন— এর পরেও কী ভাবে কেন্দ্র বলছে যে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে?

ধর্মগুরুর কথায়, এই এলাকার মানুষের প্রশ্ন— দখলদারদের প্রতি ভারত সরকারের মনোভাব কেন এত নরম? তারা শক্ত অবস্থান নিতে কেন পিছপা হচ্ছে? তিনি বলেন, ‘‘এলাকার বাসিন্দারা সরকারের এই মনোভাবে উদ্বিগ্ন। চিনা সেনারা যখন খুশি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ঢুকে আসছে। এখন আবার একটা বিস্তীর্ণ ভূখণ্ড নিজেদের বলে দাবি করছে তারা। বাসিন্দাদের উদ্বেগ স্বাভাবিক।’’ ধর্মগুরু রিগজিন জানান, এই বার অন্তত চিনকে সরকারের এমন বার্তা দেওয়া উচিত, যাতে এর পরে আর ভারতের ভূখণ্ডে পা-রাখার কথা তারা না-ভাবে। তাঁর কথা, ভারতের মনোভাব পরিবর্তন করা উচিত। নীতি বদলানো উচিত। চিনের সীমান্ত জুড়ে প্রতি নিয়ত টহলদারি চালানো দরকার। প্রয়োজনে সেনারা যাতে সেখানে দ্রুত পৌঁছে যেতে পারে, সীমান্তে তার উপযোগী পরিকাঠামো তৈরির কাজ শেষ করতেই হবে। ধর্মগুরু বলেন, ‘‘আর উচিত লুকোছাপা না-করা। আমাদের সরকার চিনকে স্পষ্ট বলুক, দখলদারির চেষ্টা আর সহ্য করা হবে না।’’

ধর্মগুরু জানান, গালওয়ান অঞ্চলে চিনারা ঢুকে বসে পড়ায় সব চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এলাকার যাযাবরেরা। এই অঞ্চলে যাযাবরেরা তাদের পশু চরাত। স্থায়ী আস্তানা ছিল তাদের। চিনা সেনারা সেগুলো দখল করে যাযাবরদের তাড়িয়ে দিয়েছে। যাযাবরদের একমাত্র পেশা পশু চরানো। কিন্তু দু’দেশের সেনাদের আস্ফালনে সে সব মাথায় উঠেছে। মাথায় হাতে এলাকার মানুষের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rigzin Spalbar Ladakh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE