Advertisement
E-Paper

গরিবের বন্ধু হতে ওবিসির মধ্যে ৩ ভাগ

এটাকে বিজেপির রাজনৈতিক চাল বলেই মনে করছেন অনেকে। সামনেই ভোট রয়েছে হিমাচলপ্রদেশ, গুজরাতে। তার আগে কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্যে রাজ্যে পিছিয়ে পড়াদের জন্য বিশেষ কিছু সুবিধার আশ্বাস দিতে সুবিধে হবে বিজেপির।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৭ ০৪:২০
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

বিল পাশ করানো যায়নি কংগ্রেসের বিরোধিতায়। ওবিসি তথা অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির সংরক্ষণ নিয়ে এ বারে একটি কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। এবং এরই সঙ্গে বিজেপি জোর কদমে প্রচার শুরু করে দিল যে, কংগ্রেস নয়, তারাই পিছিয়ে পড়া শ্রেণির আসল বন্ধু।

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে ওবিসি-কমিশন গড়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেন, ‘‘ওবিসি-ভুক্ত সব শ্রেণির মানুষ সংরক্ষণের সুবিধা ঠিক মতো পাচ্ছেন কি না, তা খতিয়ে দেখে এই কমিশন ১২ সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দেবে সরকারকে।’’ এটাকে বিজেপির রাজনৈতিক চাল বলেই মনে করছেন অনেকে। সামনেই ভোট রয়েছে হিমাচলপ্রদেশ, গুজরাতে। তার আগে কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্যে রাজ্যে পিছিয়ে পড়াদের জন্য বিশেষ কিছু সুবিধার আশ্বাস দিতে সুবিধে হবে বিজেপির।

মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ আর একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এত দিন বছরে ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় হলে তবেই ওবিসি হিসেবে সংরক্ষণের সুবিধা পাওয়া যেত। সেই সীমা বাড়িয়ে ৮ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। এতে আগের চেয়ে বেশি মানুষ ওবিসি হিসেবে চাকরি বা শিক্ষায় সংরক্ষণের আওতায় আসবেন। মন্ত্রিসভা এই সিদ্ধান্ত নিতেই সরব হয়েছেন খোদ বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। বলেছেন, ‘‘এতে পিছিয়ে পড়া সমাজের একটা বড় অংশ লাভবান হবে।’’

রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিতে সংরক্ষণ চালু করা নিয়ে এ দিন কোনও সিদ্ধান্ত না হলেও বিষয়টি নিয়ে সরকার সক্রিয় ভাবে ভাবছে বলে জানিয়েছেন জেটলি। আর ওবিসি-কমিশন গঠনের যৌক্তিকতা বোঝাতে অর্থমন্ত্রী এ দিন জানান, জাতীয় অনগ্রসর শ্রেণি কমিশন (এনসিবিসি) মনে করে, যাযাবর, আধা-যাযাবর বা বিমুক্ত জাতির মতো খুবই পিছিয়ে পড়া শ্রেণির জন্য ওবিসি-র মধ্যেই আলাদা একটি ভাগ (উপ-বর্গ) রাখা প্রয়োজন। গত মাসে পেশ করা রিপোর্টে তারা ওবিসির মধ্যে তিনটি উপ-বর্গ (সাব-ক্যাটাগরি) তৈরির সুপারিশ করেছে। তারই সূত্রে সংবিধানের ৩৪০ ধারার ভিত্তিতে গড়া হবে ওবিসি-কমিশন।

এর কাজ হবে মূলত তিনটি। এক, কেন্দ্রীর ওবিসি তালিকভুক্ত সব জাতি বা শ্রেণির মধ্যে সুবিধার সুষম বণ্টন হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা। দুই, ওবিসি-র মধ্যেই একাধিক উপ-বর্গ তৈরির বিজ্ঞানসম্মত পথ বাতলানো। তিন, কেন্দ্রের ওবিসি তালিকাভুক্ত জাতিগোষ্ঠী বা সম্প্রদায়গুলিকে কাদের কোন উপ-বর্গে রাখা উচিত, তা সুপারিশ করা।

বিজেপি সভাপতির দাবি, ওবিসি-র মধ্যে উপ-বর্গ গড়া হলে পিছিয়ে পড়াদের মধ্যে যাঁরা খুবই গরিব তাঁরা উপকৃত হবেন। অনেক বিজেপি-শাসিত রাজ্যে এর সফল প্রয়োগ হয়েছে। অমিত শাহ শুধু বিজেপি-শাসিত রাজ্যের কথা বললেও পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, জম্মু-কাশ্মীরের জম্মু অংশ-সহ ১১টি রাজ্যে আগে থেকেই ওবিসি-র মধ্যে এমন ভাগ রয়েছে। কেন্দ্রীয় তালিকায় এমন ভাগ নেই এখনও পর্যন্ত।

কেন্দ্রও এ বার ওবিসি-কে তিন ভাগে ভাগ করলে সেটা ভোটের রাজনীতিতেও ছাপ ফেলবে। বিশেষ করে বিহার উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে। প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রে যাদব, জাঠ বা অন্য প্রভাবশালী গোষ্ঠীগুলির একচেটিয়া দাপট এতে কমে আসবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশ মতো কংগ্রেসকে আরও কোণঠাসা করতে ও বিজেপির গরিব-দরদি ভাবমূর্তি তুলে ধরতে সুবিধে হবে বিজেপির। অমিত শাহ এ দিনই বলতে শুরু করেছেন, ‘‘মোদী সরকার যে গরিবদের প্রতি সংবেদনশীল, তার প্রমাণ মিলল।’’ সন্দেহ নেই, গোটা দেশেই বিজেপি নেতা-কর্মীরা এ বার এই ধরনের প্রচার চালাবেন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি দলের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে ঠিক যেমনটি বলে রেখেছেন মোদী-অমিত জুটি।

OBC sub-categorisation Amit Shah
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy