Advertisement
E-Paper

নয়া ভারতীয় প্রজাতিকে কি রুখবে টিকা?

এ যাবৎ ভারতে সংক্রমিতদের শরীরে মূলত তিনটি বিদেশি প্রজাতি পাওয়া গিয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি ব্রিটেন স্টেনের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২১ ০৭:৩৮
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

করোনাভাইরাসের বিদেশি প্রজাতির সঙ্গেই ভারতে পাওয়া গিয়েছে নতুন ধরনের ডাবল মিউটেন্ট (দু’বার চরিত্র পরিবর্তন করা) প্রজাতি। সেই নতুন প্রজাতির বিরুদ্ধে ভারতে ব্যবহৃত দুই প্রতিষেধক আদৌ কার্যকরী হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন চিকিৎসক ও গবেষকেরা।

এ যাবৎ ভারতে সংক্রমিতদের শরীরে মূলত তিনটি বিদেশি প্রজাতি পাওয়া গিয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি ব্রিটেন স্টেনের। এ ছাড়া পাওয়া গিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিল প্রজাতি। মূল ভাইরাস থেকে চরিত্র পরিবর্তন করা ওই নতুন প্রজাতিগুলিকে রুখতে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার কোভিশিল্ড প্রতিষেধক কতটা কার্যকরী, তা নিয়ে পরীক্ষা করেছিলেন ব্রিটেনের একদল বিজ্ঞানী। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, কোভিশিল্ড নেওয়ার পরেও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রজাতি আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, মহারাষ্ট্রে যে নতুন ডাবল মিউটেন্ট প্রজাতিটি পাওয়া গিয়েছে, তা রুখতে ভারতের দুই প্রতিষেধক কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন আদৌ সক্ষম কি না। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল বায়োলজির ইমিউনোলজিস্ট দীপ্যমান গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘প্রতিষেধক কি নতুন ওই প্রজাতিটিকে রুখতে সক্ষম? তা জানতে হবে সকলের আগে।’’ তাঁর মতে, ওই প্রজাতির বিরুদ্ধে দুই প্রতিষেধক কতটা কার্যকরী ভূমিকা নিচ্ছে, তা অবিলম্বে গবেষণা করে দেখা হোক। এমসের চিকিৎসক নবীন নিশ্চলও মনে করেন, ওই প্রজাতিকে রুখতে প্রতিষেধক সফল হচ্ছে কি না তা জানতে হবে, বিশেষ করে যখন সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনও প্রতিষেধক যদি ভারতীয় ডাবল মিউটেন্ট প্রজাতিকে রুখতে না-পারে, তা হলে ধরে নিতে হবে, সেই প্রতিষেধক ব্যর্থ। সে ক্ষেত্রে এই প্রজাতি আমজনতার মধ্যে ছড়াতে শুরু করলে আগের প্রতিষেধক আর দেওয়া উচিত কি না, সেই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে সরকারকে। স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, এখনও পর্যন্ত খুব সামান্য সংখ্যক নমুনায় ওই ভারতীয় প্রজাতিটি পাওয়া গিয়েছে। সেটিই একমাত্র আশার দিক। তবে যে হারে গোটা দেশে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, তাতে এই প্রজাতিও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছে কি না, সে বিষয়ে অন্ধকারে স্বাস্থ্যকর্তারা।

বিজ্ঞানীদের মতে, প্রতিটি আরএনএ ভাইরাসে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মিউটেশন হয়। ভাইরাসের জিনের সিকোয়েন্সে হঠাৎ পরিবর্তন আসে। ফলে ভাইরাসের নতুন রূপ দেখা দেয়, যা আগের ভাইরাসের থেকে অনেক সময়ে বেশি শক্তিশালী হিসেবে প্রতিপন্ন হয়। যেমন, ব্রিটেন প্রজাতিটি মূল প্রজাতি থেকে অনেক বেশি সংক্রামক। দক্ষিণ আফ্রিকা প্রজাতির ক্ষেত্রে এই ভাইরাসের রিসেপটর বাইন্ডিং ডোমেন (আরবিডি) গঠনে পরিবর্তন হয়েছে। আরবিডি গঠনে পরিবর্তন আসায় দক্ষিণ আফ্রিকা প্রজাতির ক্ষেত্রে কোভিশিল্ড আর কাজ করছে না। দীপ্যমানবাবুর মতে, আরবিডি-র গঠনে পরিবর্তন হলে আগের করোনা সংক্রমণ অথবা প্রতিষেধক দেওয়ার ফলে শরীরে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে পারে। ফলে নতুনদের সঙ্গে পুরনো রোগীরাও ফের সংক্রমণের শিকার হতে পারেন। সেই কারণেই ভারতে পাওয়া নতুন প্রজাতিটির দ্রুত জিনোম সিকোয়েন্স করে সেটির বিরুদ্ধে ভারতীয় প্রতিষেধক কতটা কার্যকর, তা খতিয়ে দেখার উপরে জোর দিতে চাইছেন গবেষকেরা।

COVID-19 New Strain
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy