Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Monsoon Session of Parliament

অনাস্থা সত্ত্বেও বিল পাশ, ফের সরব বিরোধীরা

গত কাল সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায় স্বচ্ছতার সঙ্গে খনন বরাত দেওয়ার প্রশ্নে আনা ‘অফশোর এরিয়া মিনারেল’ বিলটি পেশ করেছিল সরকার। আজ তা পাশ করিয়ে নেয় সরকার।

Parliament

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৩ ০৮:২৪
Share: Save:

গত দু’দিনের পুনরাবৃত্তি ঘটল আজও। বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব আনা সত্ত্বেও লোকসভায় আজও তিনটে বিল পাশ করিয়ে নেয় শাসক শিবির। অনাস্থা প্রস্তাব আনা সত্ত্বেও সরকার যে ভাবে বিল পাশ করিয়ে যাচ্ছে তা সংসদীয় প্রথা-বিরোধী বলে আজও সরব হন বিরোধী সাংসদেরা।

আজ লোকসভার অধিবেশন শুরু হতেই ওই কক্ষে কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার দাবিতে সরব হন। গত বুধবার সরকারের বিরুদ্ধে কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন। সে দিনই তা গৃহীত হয়। তার পরে দু’দিন কেটে যাওয়া সত্ত্বেও কেন তা নিয়ে আলোচনা শুরু হল না তা জানতে চেয়ে সরব হন অধীর। তিনি বলেন, ‘‘১৯৭৮ সালের ১০ মে তৎকালীন (মোরারজি দেশাই) সরকারের বিরুদ্ধে বিপক্ষ অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল। সে দিনই আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। এখন কেন দেরি হচ্ছে?’’ জবাবে সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী স্পিকার ওম বিড়লাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘‘নিয়ম অনুযায়ী দশ দিন সময় রয়েছে। আপনি যবে সিদ্ধান্ত নেবেন সেই দিন থেকেই আলোচনার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। আমাদের কাছে সংখ্যা রয়েছে। এর পরেও যদি বিরোধীদের মনে কোনও সংশয় থাকে তাহলে কোনও বিলের ভোটাভুটি করলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে সংখ্যা কাদের সঙ্গে রয়েছে।’’ এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাদানুবাদ শুরু হলে অধিবেশন বেলা বারোটা পর্যন্ত মুলতুবি করে দেন স্পিকার। অনাস্থা প্রস্তাব আনা সত্ত্বেও সরকার কী ভাবে একের পর এক বিল পাশ করিয়ে যাচ্ছে তা নিয়ে সংসদের বাইরে সরব হন কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি। তিনি বলেন, ‘‘১৯৬৬ সালের ২৬ জুলাই তৎকালীন সংসদীয় মন্ত্রী সত্যেন্দ্রনারায়ণ সিন্‌হা জানিয়েছিলেন, যদি অনাস্থা প্রস্তাব আসে তাহলে ভোটাভুটি না হওয়া পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি বিল পাশ করানো যায় না। অথচ এখন সংসদীয় প্রথাকে এড়িয়ে গিয়ে একের পর এক বিল পাশ করিয়ে নিচ্ছে সরকার।’’ শাসক শিবির সূত্রের মতে, প্রধানমন্ত্রী গত দু’দিন ধরে দিল্লির বাইরে। তাই অনাস্থা প্রস্তাব এ সপ্তাহে না আসলেও, আগামী সপ্তাহের শুরুতে আসতে চলছে বলে দাবি করেছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।

বিরোধীদের আপত্তি সত্ত্বেও বেলা বারোটায় অধিবেশন শুরু হলে হট্টগোলের মধ্যেই তিনটি বিল পাশ করিয়ে নেয় সরকার। গত কাল সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায় স্বচ্ছতার সঙ্গে খনন বরাত দেওয়ার প্রশ্নে আনা ‘অফশোর এরিয়া মিনারেল’ বিলটি পেশ করেছিল সরকার। আজ তা পাশ করিয়ে নেয় সরকার। এ ছাড়া আজ ‘ইন্ডিয়ান নার্সিং কাউন্সিল আইন’-এর পরিবর্তে ‘ন্যাশনাল নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কমিশন’ গঠন সংক্রান্ত বিলটি প্রথমে পেশ ও তার পরে হট্টগোলের মধ্যে পাশ করিয়ে নেয় সরকার। একই ভাবে দন্ত চিকিৎসা সংক্রান্ত ‘জাতীয় ডেন্টাল কমিশন বিল’ আজ পাশ হয়েছে। মূলত নার্সিং ও দাঁতের চিকিৎসা সংক্রান্ত পাঠ্যক্রমের খোলনলচে বদলে ফেলার লক্ষ্যে ওই বিল দু’টি আনা হয়েছে। ওই তিনটি বিল পাশ করানো সত্ত্বেও আজ পেশ হয়েছে আইআইএম সংশোধনী বিলটি। তারপরেই দিনের মতো অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যায়।

মণিপুর নিয়ে আলোচনার দাবিতে আজ দফায় দফায় ভেস্তে যায় রাজ্যসভার অধিবেশন। আজ সবর্দলীয় বৈঠকেও সংসদের অচলাবস্থা কাটার প্রশ্নে কোনও সমাধান সূত্র পাওয়া যায়নি। বৈঠকের পরে রাজ্যসভার দলনেতা পীযূষ গয়াল বলেন, ‘‘একমাত্র আলোচনার মাধ্যমেই অচলাবস্থা কাটা সম্ভব।’’ তিনি দাবি করেন, ‘‘সরকার সব বিষয়ে আলোচনায় প্রস্তুত। রাজ্যসভার নিয়মাবলীর ১৭৬ ধারায় মণিপুর নিয়েও আলোচনা করতে রাজি সরকার। তবে কেবল মণিপুরই নয়, অনেক সাংসদ রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ, ছত্তীসগঢ়ে মহিলাদের উপরে হওয়া অত্যাচার নিয়েও আলোচনার দাবি করেছেন। সরকার চায় বিরোধীরা সকলেই যেন ওই আলোচনায় যোগ দেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE