Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Cheetah

এ বার উত্তর আফ্রিকায় চিতার খোঁজ

জন্মভূমি থেকে শিকড় উপড়ে তাদের উড়িয়ে নিয়ে আসা হয়েছিল এ দেশের বনাঞ্চলে। বছর ঘোরার আগেই, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নামিবিয়ার আদি বাসিন্দা, সেই ২০টি চিতার মধ্যে ৮’টি মারা গিয়েছে।

cheetah

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৬:৫১
Share: Save:

চিতার খোঁজে এ বার দক্ষিণ ছেড়ে উত্তর আফ্রিকায় নজর ঘোরাল দেশের বনমন্ত্রক।

প্রধানমন্ত্রীর সাধের ‘চিতা পুনঃস্থাপন প্রকল্প’-এর অধিকর্তা তথা কেন্দ্রীয় বনমন্ত্রকের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল এসপি যাদবের দাবি, ‘‘দক্ষিণ আফ্রিকার চিতাদের পশমের আধিক্য বড় বেশি। ভারতের উষ্ণ-আর্দ্র আবহাওয়ায় বৃষ্টিতে ভিজে তাদের চামড়ায় ক্ষত তৈরি হচ্ছে। যা বিষিয়ে দিচ্ছে বনাঞ্চলের মাছি। তাই এ বার উত্তর আফ্রিকা থেকে চিতা আমদানির কথা ভাবা হচ্ছে।’’

কিন্তু আদৌ কি সমস্যার সুরাহা হবে তাতে? ব্যাঘ্র বিশেষজ্ঞ কেএস চেরিয়ান বলছেন, ‘‘আফ্রিকার চিতাদের ‘গিনিপিগ’ ঠাওরে এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা এ বার বন্ধ হোক। এর ফলে দেশে চিতা পুনঃস্থাপন বিশেষ সফল হবে বলে মনে হয় না।’’

জন্মভূমি থেকে শিকড় উপড়ে তাদের উড়িয়ে নিয়ে আসা হয়েছিল এ দেশের বনাঞ্চলে। বছর ঘোরার আগেই, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নামিবিয়ার আদি বাসিন্দা, সেই ২০টি চিতার মধ্যে ৮’টি মারা গিয়েছে। অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে আরও অন্তত ৩টি। চিতা পুনঃস্থাপন প্রকল্প ঘিরে সন্দিহান বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞদের কথায় অবশ্য বিশেষ আমল দিতে রাজি নয় কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের কর্তারা। চিতাদের মৃত্যু-মিছিল এবং বৈরী পরিবেশে ক্রমান্বয়ে অসুস্থতার মধ্যেই সম্প্রতি ওই প্রকল্পের তরফে জানানো হয়েছে, ফের আমদানি করা হবে চিতা।

মধ্যপ্রদেশের কুনোয়, ‘চিতা রিলোকেশন প্রজেক্ট’-এর এক শীর্ষ কর্তা জানান, এ দেশের পরিবেশের সঙ্গে আফ্রিকার উত্তাঞ্চলের চিতাদের খাপ খাইয়ে নিতে সুবিধা হবে বলেই বিশেষজ্ঞরা তাঁদের জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এ বার তাই আলজেরিয়া, বুরকিনোফাসো, মালি— উত্তর আফ্রিকার যে সব দেশে চিতাদের দেখা মেলে, সেই সব দেশের সঙ্গে আলাপ আলোচনা শুরু হয়েছে। আগামী মাস কয়েকের মধ্যেই এই দেশগুলির কোনও একটি থেকে চিতা আমদানি করা হবে।’’ প্রকল্প কর্তাদের আশা, উত্তর আফ্রিকার চিতা এ দেশের আবহাওয়ায় দ্রুত মানিয়ে নিতে পারবে। ফলে প্রকল্পের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত হবে। প্রকল্প কর্তাদের দাবি, ইউরোপ কিংবা আমেরিকার যে সব চিড়িয়াখানায় আফ্রিকার চিতা রয়েছে, তাদের সিংহভাগেরই আদি ভূমি উত্তর আফ্রিকার আলজিরিয়া কিংবা মালি। ফলে এ দেশেও সে পথ অনুসরণ করলে সাফল্য মিলবে।

তবে, সেই সংশয়ের ভিড়ে প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে, ‘প্রজেক্ট চিতা’ স্থায়ী হবে তো? দেশের বনমন্ত্রকের এক কর্তা বলছেন— ‘‘উত্তর আফ্রিকার অতিথিরা মানিয়ে নিলে ভাল, না হলে নিছক সাফারি পার্ক করে সেখানেই রেখে দিতে হবে চিতাদের!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE