—ফাইল চিত্র।
লাদাখে ভারত-চিন সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে সংসদের আসন্ন অধিবেশনে বিবৃতি দেওয়ার ইঙ্গিত দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। করোনা সংক্রমণের কারণে প্রায় ছ’মাস বন্ধ থাকার কারণে আগামিকাল থেকে শুরু হচ্ছে সংসদীয় অধিবেশনে। তার আগে আজ বিষয় পরামর্শদাতা কমিটির বৈঠকে বিরোধীরা একজোট হয়ে সরকারকে ভারত-চিন সীমান্ত বিবাদ নিয়ে মুখ খোলার জন্য চেপে ধরেন। সেখানেই সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সংসদে বিবৃতি দেওয়া হবে বলে বিরোধীদের আশ্বস্ত করা হয়।
ঘটনাচক্রে আজই কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ আসন্ন অধিবেশনে সরকারের কাছে সীমান্ত পরিস্থিতি প্রশ্নে বিবৃতি দাবি করেন। সাংবাদিক বৈঠকে রমেশ বলেন, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা টপকে ভারতের জমি চিন দখল করেনি বলে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বিবৃতি ভারতের অবস্থানকে দুর্বল করেছে। চিন সেনা ভারতীয় জমি দখল করে রেখেছে কি না তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। তাই লাদাখে এখন সীমান্তে ঠিক কী পরিস্থিতি তা দেশবাসীকে জানান প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে পিএম কেয়ার্স তহবিলকে তথ্যের অধিকার আইনের আওতায় আনার দাবি জানান রমেশ। তিনি বলেন, ‘‘কিছু চিনা সংস্থা ওই তহবিলে অনুদান দিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।’’ আজ সংসদের বিষয় পরামর্শদাতা কমিটির বৈঠকেও লাদাখ সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে সরব হন বিভিন্ন দলের সাংসদেরা। বিরোধীদের বক্তব্যের মূল নির্যাস ছিল, গত এপ্রিল-মে মাস থেকে সীমান্তের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব নীরব। কংগ্রেসের অভিযোগ, বিশেষ করে হামলাকারী চিনের নাম নেওয়ার প্রশ্নে নীরব প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিংবা চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ। চিন প্রশ্নে ওই নীরবতা ভেঙে সংসদে মুখ খোলার দাবিতে বৈঠকে সরব হন বিরোধী নেতারা।
বৈঠকে বিরোধীদের আশ্বস্ত করে শাসক শিবির জানায়, সরকার এ বিষয়ে সংসদে মুখ খুলে গোটা দেশকে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত করানোর কথা ভাবছে। তবে কবে তা এখনও ঠিক হয়নি। এ নিয়ে সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী বৈঠকের পরে বলেন, আগামী মঙ্গলবার ফের বিষয় পরামর্শদাতা কমিটির বৈঠক রয়েছে। লাদাখের স্পর্শকাতর পরিস্থিতি, ভারতীয় সেনার কৌশলগত অবস্থানের কথা মাথায় রেখে কী ভাবে কতটা বলা হবে সে নিয়ে আগামী মঙ্গলবারের বৈঠকে বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে তবেই মুখ খুলবে সরকার। বিজেপি সূত্রের মতে, লাদাখের যা পরিস্থিতি তাতে এখন জবাব না দিলে সংসদে প্রবল বিশৃঙ্খলা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যা আদৌ কাম্য নয় সরকারের কাছে। অতীতে ২০১৭ সালে ডোকলামে হওয়া ভারত-চিন অচলাবস্থা নিয়ে সরকার বক্তব্য না রাখায় গোড়ায় প্রবল হাঙ্গামা হয়েছিল সংসদে। এ বারে মুখ না খুললে সংসদে ফের সেই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে আশঙ্কা সরকারের।
আরও পড়ুন: উমর খালিদ গ্রেফতার, দিল্লি হিংসা মামলায়, দেওয়া হল ইউএপিএ
আরও পড়ুন: কো-মর্বিডিটিকে গুরুত্ব দিয়েই নয়া প্রোটোকল কেন্দ্রের
সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে দ্রুত যাতে সেনা কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক হয় সে জন্য তৎপর নয়াদিল্লি। প্রতিরক্ষা সূত্রের মতে, এই সপ্তাহে লাদাখে দুই দেশের শীর্ষ সেনাকর্তাদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। গোড়া থেকেই ভারত বলে এসেছে আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত সমস্যার সমাধান হওয়া সম্ভব। যদিও মোদী সরকারের ঘোষিত অবস্থান হল, একমাত্র চিন যদি আস্থাবর্ধক কোনও পদক্ষেপ করে তবেই লাদাখ থেকে সেনা সরানোর কথা ভাববে ভারত। তা না হলে আসন্ন শীতেও লাদাখে সীমান্তে সেনা মোতায়েন রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy