জুনেদ চৌধুরী। ছবি: টুইটার।
দাউদের হাবভাব তাকে বরাবরই রোমাঞ্চিত করত। ছোটা শাকিলের হয়ে অনেক খুন, অপহরণের সুপারি নিয়েছে। তবে এইসব ‘ছোটখাটো’ কাজ করে ঠিক দাউদের নজরে আসতে পারছিল না সে। তাই ছক কষতে থাকে এককালে দাউদের ডানহাত ছোট রাজনকে খুন করার। ছোটা রাজনকে খুন করতে পারলেই তো কেল্লাফতে! খুব সহজেই দাউদের নজরে আসা যাবে আর দাউদের সঙ্গে কাজ করে তাঁর মতোই ডন হয়ে ওঠা যাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভেস্তে গেল সেই প্ল্যান। দিল্লির ওয়াজিরাবাদ থেকে একেবারে শেষ মুহূর্তে ধরা পড়ে গেল জুনেদ।
জুনেদ অর্থাৎ জুনেদ চৌধুরি। ২১ বছরের জুনেদের বাড়ি উত্তর-পূর্ব দিল্লির ভাগীরথি বিহারে। তাঁর বাবা একজন দুধ ব্যবসায়ী। পড়াশোনায় কোনও দিনই মন ছিল না জুনেদের। স্কুলছুট জুনেদ ছোট থেকেই নাম লিখিয়েছিল ছোটা শাকিলের দলে। তখন থেকেই তার অসামাজিক কাজকর্মে হাতেঘড়ি। কিন্তু সে সব কাজ করে যে দাউদের প্রশংসা কুড়ানো যাবে না তা বেশ ভাল করেই বুঝেছিল জুনেদ। তাই ছক কষে ফেলে ছোটা রাজনকে খুন করার।
কিন্তু ভাবনাটা যতটা সহজ, কাজটা ততটা নয়। যাঁকে খুনের পরিকল্পনা, সেই ছোটা রাজন বহু দিন ধরেই দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি। পুলিশি ঘেরাটোপ পেরিয়ে তাঁর কাছে পৌঁছনটা সহজ নয়। কিন্তু ইচ্ছা তো আর জলাঞ্জলি দেওয়া যায় না! সুযোগও এসে যায় তার কাছে। ইতিমধ্যে জুনেদের হাতে আরও একটি কাজের অফার আসে। পাক-কানাডীয় লেখক তারেক ফাতাহ্কে খুনের দায়িত্ব আসে তার উপর।
আরও পড়ুন: ‘চতুর বানিয়া’ গাঁধী! তোপের মুখে অমিত
দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (স্পেশ্যাল সেল) পি এস কুশওয়াহা জানান, তারেক একজন বিতর্কিত লেখক। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লেখালেখি করায় দীর্ঘদিন ধরেই তাঁকে খুনের পরিকল্পনা ছিল শাকিলের। শাকিলের দলের কর্মী জুনেদের ভাবনাটা ছিল আরও কয়েক পা এগিয়ে। তারেক দিল্লিতে এলে তাঁকে খুন করে পুলিশের হাতে ধরা পড়লেই তো ছোটা রাজনের কাছে পৌঁছনোর একটা দরজা খুলে যাবে তার সামনে!
লেখক তারেক এখন দিল্লিতে নেই। তবে খুব তাড়াতাড়ি দিল্লিতে আসার কথা রয়েছে তাঁর। সেইমতো দিল্লিতে রেকি করতে শুরু করে জুনেদ। আর তখনই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় সে। ভেস্তে যায় পরিকল্পনা।
লেখক তারেক অবশ্য এ সব নিয়ে এতটুকু বিচলিত নন। ৬৮ বছরের লেখক বলেন, “আমাকে খুন করলেও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মুসলিমদের লড়াই থামানো যাবে না।”
ডিএসপি কুশওয়াহ্ জানান, তারেককে খুনের জন্য শাকিল আগাম দেড় লক্ষ টাকা দিয়েছিল জুনেদকে। তার সঙ্গে হোয়াটস্অ্যাপে যোগাযোগও রাখছিল। পুলিশ তার কাছ থেকে একটি পিস্তল এবং চার রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, এর আগেও গত বছরের জুন মাসে একবার ধরা পড়েছিল জুনেদ। তখনও সে ছোটা রাজন এবং হিন্দু মহাসভা চিফ স্বামী চক্রপানিকে খুনের পরিকল্পনা করেছিসল। কিন্তু চার মাসের মধ্যেই জামিনে ছাড়া পেয়ে গিয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy