ফাইল ছবি
সীমান্তের কাছে ফের সক্রিয়তা বাড়িয়েছে চিনা সেনা। তেমনই ইঙ্গিত মিলল উপগ্রহ চিত্রে। এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টে জানানো হয়েছে, প্যাংগং লেকের কাছে ফের একটি সেতু তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। তবে আগেরটির চেয়ে এটি আরও বৃহৎ। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সেনা ট্যাঙ্কার বা সাজোঁয়া গাড়ি পারাপারের জন্যেই সেতুটি তৈরি করা হচ্ছে।
প্যাংগং লেকটি স্থলবেষ্টিত। প্রায় ১৩৫ কিলোমিটারের লেকটির কিছুটা অংশ লাদাখে আর বাকিটা তিব্বতে। ২০২০ সালের মে মাস থেকে ভারত এবং চিনা সেনার সংঘর্ষের সাক্ষী এই অঞ্চল। সেখানে চিনের তরফে এই নতুন সেতু গড়ার খবর ছড়াতেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে। যার আঁচে সরগরম রাজনৈতিক মহলও। নয়া সেতু তৈরির ঘটনার কথা তুলে ধরে এ দিন মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা। তাঁর টুইট, ‘‘প্যাংগং লেকের উপর চিনের দ্বিতীয় সেতু তৈরি ‘জাতীয় নিরাপত্তার’ অমার্জনীয় লঙ্ঘন! চিনের এমন গুরুতর উস্কানির মুখে মোদী সরকারের নম্র আত্মসমর্পণ অত্যন্ত আতঙ্কের। কার্যত এটি শেষ পেরেক। প্রধানমন্ত্রী এবং বাকি মন্ত্রীরা কি এ বার জাগবেন এবং কিছু বলবেন?’’
ওই লেক সংলগ্ন এলাকার যে অংশটি তাদের দখলে সেখানে এর আগেও একটি সেতু তৈরি করেছে চিন। ২০২১ সালের শেষের দিকে তা নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। যা শেষ হয়েছে গত এপ্রিল মাস নাগাদ। উল্লেখ্য, প্রথম সেতুটির ঠিক পাশেই তৈরি হচ্ছে এই দ্বিতীয় সেতুটি। তবে দ্বিতীয়টি অনেক বেশি বড় এবং চওড়া। মনে করা হচ্ছে, বর্তমানে যে সেতুটি গড়ার কাজে হাত লাগিয়েছে চিনা সেনা, সেটির জন্য ক্রেন বা অন্যান্য নির্মাণ সরঞ্জাম আনা-নেওয়ার কাজে ব্যবহার হতে পারে প্রথমটি। প্রায় সপ্তাহ তিনেক আগেই দ্বিতীয় সেতুটি গড়ার কাজে হাত লাগিয়েছে চিন। বিভিন্ন রিপোর্টের দাবি এমনটাই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিরক্ষা দফতরের সূত্র জানান, মনে হয় বাহিনীর ভারী ভারী সাজোঁয়া গাড়ি ভারতের সীমান্তের কাছে আনার জন্যেই এই দ্বিতীয় সেতুটি গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিন। পাশাপাশি ভারতীয় সেনা যদি প্যাংগং লেকের দক্ষিণে কোনও অভিযান চালায় তা হলে তা তড়িঘড়ি প্রতিহত করতে একাধিক রাস্তাও থাকবে বেজিংয়ের কাছে। অর্থাৎ শুধু বাহিনীর সদস্যদের পাঠাতেই নয়, অস্ত্রভর্তি সাজোঁয়া মজুত করার পথ প্রশস্ত করতেই এতটা তৎপরতা চিনের। লাদাখে ২০২০ সালের মে থেকে শুরু হওয়া ভারত-চিন সংঘর্ষের এটি তৃতীয় বছর। অতীতে ভারতের প্যাংগং লেকের দক্ষিণাঞ্চলের কাছে পাহাড়গুলির দখল নিতে পারা অনেকটাই ব্যাকফুটে ঠেলে দেয় চিনকে। তবে ভবিষ্যতে যেন এমন পরিস্থিতি তৈরি না হয়, এখন সেই দিকেই নজর বেজিংয়ের। যে কারণে সব দিক দিয়ে নিজেদের প্রস্তুত করার দিকে মন দিয়েছে তারা।
তবে ভারতীয় প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, চিনের এই দ্বিতীয় সেতু নিয়ে আগে থেকে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। প্যাংগং সংলগ্ন অঞ্চলের পাশাপাশি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করেছে ভারতও। লাদাখ সেক্টরে উপস্থিত রয়েছে ভারতীয় বাহিনীর বড় রেজিমেন্টও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy