Advertisement
০২ মে ২০২৪

বন্ধু পাকিস্তানের হয়ে তাল ঠুকে যাচ্ছে চিন, আমল দিচ্ছে না দিল্লি

গোয়ায় ভারত-চিন শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠক আগামী শনিবার। তারিখ যত এগিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে দ্বিপাক্ষিক উত্তাপ। বিষয়— পাকিস্তান! ‘উরি-কাণ্ড’ ও ভারতের ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’-পরবর্তী পর্যায়ে গোটা বিশ্বে পাকিস্তান কার্যত একঘরে হয়ে পড়লেও, স্পষ্টতই বুক ফুলিয়ে ইসলামাবাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বেজিং।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৪৭
Share: Save:

গোয়ায় ভারত-চিন শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠক আগামী শনিবার। তারিখ যত এগিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে দ্বিপাক্ষিক উত্তাপ। বিষয়— পাকিস্তান!

‘উরি-কাণ্ড’ ও ভারতের ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’-পরবর্তী পর্যায়ে গোটা বিশ্বে পাকিস্তান কার্যত একঘরে হয়ে পড়লেও, স্পষ্টতই বুক ফুলিয়ে ইসলামাবাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বেজিং। আজ নিজেদের অক্ষ আরও এক বার স্পষ্ট করে দিয়ে সে দেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পাক সীমান্ত সিল করে দেওয়ার ভারতীয় সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক।

বিদেশ মন্ত্রক ঘরোয়া ভাবে চিনের এই মানসিকতার তীব্র সমালোচনা করছে। মন্ত্রকের এক কর্তার মতে, এই সপ্তাহে গোয়ায় ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির সম্মেলনের আগে চাপ তৈরি করার এই চেষ্টা হাস্যকর। সেখানে নয়াদিল্লির সঙ্গে পার্শ্ববৈঠকে বেজিং অবশ্যই পাকিস্তান প্রসঙ্গ তুলবে। তার আগে নেহাতই আসর গরম করার চেষ্টা হিসেবেই একে দেখছে সাউথ ব্লক। ওই কর্তার কথায়, “বেজিং যাদের হয়ে লড়তে নেমেছে, তারা ইতিমধ্যেই গোটা বিশ্বের সামনে সন্ত্রাস প্রশ্নে উলঙ্গ হয়ে গিয়েছে। তা ছাড়া ভারত তার আন্তর্জাতিক সীমান্ত সিল করবে, কি করবে না, সেটা পুরোপুরি ভাবে নির্ধারিত হবে ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিচার করে। সেখানে কোনও অন্য দেশের নাক গলানোর কোনও প্রশ্নই আসে না।”

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে গত কালই চিনের পক্ষ থেকে ভারতকে লক্ষ করে বলা হয়েছিল, সন্ত্রাস দমনের নামে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি করা উচিত নয়। আর আজ চিনের সরকারি সংবাদপত্র ‘দ্য গ্লোবাল টাইমস’-এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ, ‘ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস অব দ্য সাংহাই অ্যাকাডেমি’র গবেষক হু ঝিয়ং বলেছেন, ‘‘ভারত অত্যন্ত অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ, উরি হামলার পর সে ভাবে কোনও তদন্ত হয়নি। ওই হামলায় পাকিস্তানের জড়িত থাকার কোনও প্রমাণও পাওয়া যায়নি। ওই আন্তর্জাতিক সীমান্ত পাকাপাকি ভাবে ‘সিল’ করে দেওয়া হলে চোরাপাচার, অবৈধ সীমান্ত বাণিজ্য আরও বাড়বে। দু’দেশের মানুষ একে অপরকে ঘৃণা করতে শুরু করবেন। দু’দেশের মধ্যে আলাপ-আলোচনার পরিবেশ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে।’’

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ গত শুক্রবার ঘোষণা করেছিলেন, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই পাকিস্তানের সঙ্গে ৩ হাজার ৩২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ আন্তর্জাতিক সীমান্ত পাকাপাকি ভাবে ‘সিল’ করে দেওয়া হবে। এই ঘোষণার সূত্রেই পাকিস্তানের হয়ে ব্যাট করতে নেমেছে বেজিং— এমনটাই মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। চিনের আর এক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ, ‘সাংহাই মিউনিসিপ্যাল সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ’-এর অধিকর্তা ওয়াং দেহুয়া বলেছেন, ‘‘ভারত-পাক আন্তর্জাতিক সীমান্ত পাকাপাকি ভাবে ‘সিল’ করে দেওয়া হলে দু’দেশের শান্তি ফেরানোর প্রয়াস বাধা পাবে। বেজিং যে-হেতু ইসলামাবাদের ‘সব সময়ের বন্ধু’, তাই এই সিদ্ধান্তের ফলে চিনের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্কে চিড় ধরবে। কারণ, চিনের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার স্বার্থেই কাশ্মীর সমস্যা শান্তিতে মেটা প্রয়োজন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

china Pakistan India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE