পুরসভা গঠনের পর মাত্র ২৫ দিন পার হয়েছে। তার মধ্যেই শাসক দলের পুর সদস্যদের মধ্যে কোঁদল তুঙ্গে উঠেছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে খোদ জেলা কংগ্রেস সভাপতিকে প্রকাশ্যেই দলীয় সদস্যদের সতর্ক করতে হচ্ছে। সতর্ক করতে হচ্ছে, কারণ তাঁর কাছে খবর রয়েছে, পুরপ্রধান ও উপ-প্রধানের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের পুরসদস্যদের একাংশ তলায় তলায় চক্রান্ত শুরু করেছেন।
করিমগঞ্জ পুরসভার ২৭টি আসনের মধ্যে ১৭টিতে জিতে কংগ্রেস পুরবোর্ড দখল করেছে। কংগ্রেস পুরবোর্ডের প্রধান পদে বসানো হয়েছে শিখা সূত্রধরকে। উপ-প্রধান হয়েছেন পার্থসারথি দাস। আজ নির্বাচিত সব কংগ্রেস সদস্যকে সম্বর্ধনা দিতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল জেলা কংগ্রেস কমিটি। জেলা কংগ্রেসের দফতর ‘ইন্দিরা ভবন’-এর এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেলা সভাপতি সতু রায় সদস্যদের উদ্দেশে সতর্কতা জারি করেন। তিনি বলেন, ‘‘করিমগঞ্জ পুরসভার কাজকর্ম খুব একটা ভাল ভাবে চলছে না। পুরবোর্ড গঠনের পর এক মাসও অতিক্রান্ত হয়নি। কিন্তু পুরপ্রধান, উপ-প্রধানের আসনকে ঘিরে শুরু হয়েছে খেয়োখেয়ি। কংগ্রেস সদস্যদেরই একাংশ নিজেদের দলের পুরপ্রধান, উপ-প্রধানের বিরুদ্ধাচরণ শুরু করেছেন।’’ তাঁর বক্তব্য, এর ফলে নব-নির্বাচিত পদাধিকারীরা কাজ করতে পারছেন না।
জেলা কংগ্রেস সভাপতি তাঁর বক্তব্যে অভিযোগ করেন, পুর সদস্যরা কংগ্রেসের টিকিটে নির্বাচিত হয়েও দলের কার্যালয়ে আসছেন না। এমনকী তাঁদের আমন্ত্রণ জানালেও অনেকে গরহাজির থাকছেন। এই জিনিস যে কংগ্রেস নেতৃত্ব বরদাস্ত করবেন না এ কথা স্পষ্ট করেই জানিয়ে দেন সতুবাবু। সভাপতি জানান, ‘‘দলের বিরুদ্ধাচরণ করলে কাউকেই রেহাই দেওয়া হবে না।’’ কংগ্রেস পরিচালিত করিমগঞ্জ পুরসভায় যে সব সদস্য সমস্যার সৃষ্টি করছেন, তাঁদের সতর্ক করে দেওয়া হয় এই সংবর্ধনা সভায়। পুরবোর্ড ভাঙার চক্রান্ত অবিলম্বে বিনষ্ট না করলে দলের বিপদ হবে বলে জানান সভাপতি। সে ক্ষেত্রে বিরোধী বিজেপি ফায়দা লুটতে পারে বলেও জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের অশঙ্কা।
করিমগঞ্জ পুরসভাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য দলীয় স্তরে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয় এই সভায়। পুরবোর্ডের মাসিক বৈঠকের আগে সেই কমিটি কংগ্রেসের সকল পুর সদস্যদের নিয়ে আগাম আলোচনা করে বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে বলেও ঠিক হয়েছে। আর সেই সিদ্ধান্তই পুরসভার বৈঠকে গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য, এই করিমগঞ্জেই পুরসভায় পুরপ্রধান নির্বাচনের আগে কংগ্রেস দফতরে ভোটাভুটি করে ১৭ জন পুর সদস্যের মধ্যে কে পুরপ্রধান হবেন তা ঠিক করা হয়। এবং সেখানে বর্তমান পুরপ্রধান শিখা সূত্রধরকে জিতে আসতে হয়। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে শিখা দেবীর ভোটের ফারাক ছিন মাত্র এক ভোট। ৯-৮ ভোটে জিতে তিনি পুরপ্রধান পদে শপথ নেন। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, দলীয় কোন্দলের বীজ তো ওই দিনই বপন হয়েছে। তার ফল তো ধীরে ধীরে ফলবেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy