E-Paper

আপ-কে সমর্থন নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত কংগ্রেস

দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের সরকারের ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে কেন্দ্র যে অধ্যাদেশ জারি করেছে, তা নিয়ে আম আদমি পার্টি (আপ)-এর পাশে দাঁড়ানো হবে কি না, এই প্রশ্নে কংগ্রেস দ্বিধাবিভক্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২৩ ০৬:৫৪
Arvind Kejriwal

অরবিন্দ কেজরীওয়াল। ফাইল চিত্র।

এক দিকে জাতীয় স্তরে বিরোধী ঐক্যের বাধ্যবাধকতা, অন্য দিকে দিল্লি ও পঞ্জাবের প্রদেশ কংগ্রেসের নেতাদের প্রবল আপত্তি। দুইয়ের মাঝে পড়ে দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের সরকারের ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে কেন্দ্র যে অধ্যাদেশ জারি করেছে, তা নিয়ে আম আদমি পার্টি (আপ)-এর পাশে দাঁড়ানো হবে কি না, এই প্রশ্নে কংগ্রেস দ্বিধাবিভক্ত।

কেজরীওয়াল চাইছেন, এই অধ্যাদেশ যখন সংসদে পাশ করানো হবে, তখন সব বিরোধী দল রাজ্যসভায় এককাট্টা হয়ে এর বিরোধিতা করুক। সংসদের উচ্চকক্ষে শাসক শিবিরের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। কাজেই সব বিরোধী দল এক হলে অধ্যাদেশ আটকানোর চেষ্টা করা যেতে পারে। কিন্তু কংগ্রেস না থাকলে তা সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে অধ্যাদেশ পাশ হয়ে গেলে পুরো দোষ কংগ্রেসের উপরেই পড়বে।

এ দিকে, অজয় মাকেন, অনিল চৌধুরী, সন্দীপ দীক্ষিতের মতো দিল্লির কংগ্রেস নেতা থেকে পঞ্জাবের প্রতাপ সিংহ বাজওয়ার মতো নেতারা কেজরীকে সমর্থনের ঘোর বিরোধী। তাঁদের বক্তব্য, এই কেজরীওয়ালই ২০১৪-র ভোটের আগে সনিয়া গান্ধীর গ্রেফতারি চেয়েছিলেন। ৩৭০ রদের প্রশ্নে তিনি বিজেপিকে সমর্থন করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের ‘ইমপিচমেন্ট’ প্রস্তাব বা রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবেও তিনি বিরোধীদের পাশে থাকেননি। এখন দুর্নীতির অভিযোগের ঠেলায় চাপে পড়ে সকলকে পাশে চাইছেন।

দিল্লিতে পরিষেবা ও আমলাতন্ত্রের উপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকার বনাম দিল্লির কেজরীওয়াল সরকারের বিবাদে সুপ্রিম কোর্ট কেজরীদের পক্ষে রায় দিয়েছিল। তার পরেই মোদী সরকার অধ্যাদেশ জারি করে ফের সেই ক্ষমতা নিজের হাতে নিয়েছে। কেজরীওয়াল তার বিরুদ্ধেই বিরোধীদের এককাট্টা করতে আজ নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছেন। এর পরে তিনি মহারাষ্ট্রে এনসিপি, উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনার সঙ্গে দেখা করবেন। অন্য বিরোধী দলগুলিরও সাহায্য চাইবেন। তৃণমূলের সমর্থন পাবে আপ। কারণ তৃণমূল মনে করছে, রাজ্যসভায় বিজেপিকে হারানো গেলে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগেই বিরোধী ঐক্যের বার্তা দেওয়া যাবে। যদিও রাজ্যসভার সমীকরণ বলছে, অধ্যাদেশ আটকাতে গেলে নবীন পট্টনায়েকের বিজু জনতা দল এবং ওয়াই এস জগন্মোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সমর্থন প্রয়োজন। কারণ রাজ্যসভায় এখন ২৩৮ জন সাংসদ রয়েছেন। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য দরকার ১১৯ জন। বিজেপির রয়েছে ৯৩ জন। আপ-এর সাংসদ ১০ জন। কংগ্রেসের ৩১ জন সাংসদকে নিয়ে বিরোধী সাংসদদের সংখ্যা ১০৮-এ পৌঁছয়। তার পরে বিজু জনতা দল এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেসের মোট ১৮ জন ভোট পেলেই অধ্যাদেশ আটকানো যায়।

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমারের সঙ্গে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে ও রাহুল গান্ধীর বৈঠকে গত কাল ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল, কংগ্রেস এ বিষয়ে ইতিবাচক। কিন্তু তার পরেই দিল্লি ও পঞ্জাবের কংগ্রেস নেতারা এর প্রবল বিরোধিতা শুরু করেছেন। চাপের মুখে কংগ্রেস নেতৃত্ব জানিয়েছেন, এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। সমমনস্ক দল ও প্রদেশ কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত হবে। কিন্তু দিল্লি-পঞ্জাবের প্রদেশ নেতাদের বক্তব্য, আপ আসলে বিজেপির বি-টিম। রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেসের ভোটে ভাঙন ধরিয়ে বিজেপির সুবিধা করেছে— ভেড়ার পোশাক পরিহিত নেকড়েকে কোনও রকম সহানুভূতি দেখানো উচিত নয়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Opposition Unity Delhi AAP Congress

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy