এক অন্য রকম বিহু পালন করল কামরূপ জেলার দদরা গ্রামের আবালবৃদ্ধবণিতা। ছবিতে, নাচে, গানে হাড়গিলা সংরক্ষণের বার্তা ছড়ালেন তাঁরা।
বিশ্বে হাড়গিলা বা গ্রেটার অ্যাডজুট্যান্ট স্টর্কের সংখ্যা ও বসত ক্রমেই কমে আসছে। বিপন্ন হাড়গিলার সংখ্যা এখন মেরেকেটে ১২০০। ভারতে হাড়গিলার মোট সংখ্যার ৮০ শতাংশই থাকে অসমে। গুয়াহাটির কাছেই দদরা গ্রামের গাছগুলিতে হাড়গিলার বিরাট বসত। হাড়গিলা বিশেষজ্ঞ পূর্ণিমা দেবী বর্মণ দীর্ঘ দিন ধরে হাড়গিলা সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করছেন। তাঁর নিরলস প্রচেষ্টায় দদরা গ্রাম হাড়গিলা সংরক্ষণের বৃহত্তম কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। সেখানকার গ্রামবাসীরাই হাড়গিলার বাসা থাকা গাছগুলি সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন। গ্রামের মেয়েরা হাড়গিলার নকশা তোলা ফুলাম গামোসা বোনেন। ১৪টি মহিলা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হাত মিলিয়ে তৈরি করেছেন ‘হাড়গিলা আর্মি’। হাড়গিলার মুখোশ পরে পথনাটিকা করেন তাঁরা। স্কুলের বাচ্চাদের ছোট থেকেই শেখানো হয় সংরক্ষণের গুরুত্ব।
এ হেন গ্রাম যে বিহুতে অভিনবত্ব আনবে সেটাই কাঙ্খিত। দদরার দুর্গা মন্দিরে রঙালি বিহু পালনের ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ‘হাড়গিলা আর্মি’। দদরা, পাচারিয়া ও শিঙিমারি গ্রামের হাড়গিলার বাসা থাকা গাছের মালিকদের একজোট করা হয়। তিনটি গ্রামের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, গাঁওবুড়া, গৃহবধূ সকলে মিলেমিশে হাড়গিলাকে কেন্দ্র করে বিহু নাচ, গান, ছবি আঁকা প্রতিযোগিতার আসর বসান দুর্গা মন্দিরের চাতালে। সব বিভাগে প্রতিযোগীদের মধ্যে থেকে ‘হাড়গিলা চ্যাম্পিয়ন’দের বেছে নেওয়া হয়। পূর্ণিমাদেবী বলেন, ‘‘চাপিয়ে দেওয়া সংরক্ষণে প্রাণের টান থাকে না। কিন্তু গ্রামবাসীরা যখন নিজেদের মনের তাগিদে সংরক্ষণের কাজকে ভালবেসে ফেলেন— তখনই এমনটা সম্ভব হয়। দদরা ও আশপাশের গ্রামের মানুষ এখন হাড়গিলা সংরক্ষণকে নিজেদের জীবনধারা ও সংস্কৃতির অঙ্গ বানিয়ে ফেলেছেন। রাজ্য তো বটেই গোটা দেশের কাছেই এই ঘটনা সংরক্ষণ ও সচেতনতা প্রকল্পে সাফল্যের এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ।’’
ছবি: পূর্ণিমা দেবী বর্মণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy