উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী জোটের প্রার্থী প্রাক্তন বিচারপতি বি সুদর্শন রেড্ডির সালওয়া জুড়ুম রায় নিয়ে অমিত শাহ প্রশ্ন তুলেছেন। অথচ সেই রায়ের পরে গোয়ায় বিজেপি সরকারই রেড্ডিকে রাজ্যের লোকাযুক্ত নিয়োগ করেছিল। সে সময় গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন মনোহর পর্রীকর। যিনি পরে মোদী সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন।
সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি বি সুদর্শন রেড্ডির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ২০১১ সালে এক ঐতিহাসিক রায়ে সালওয়া জুড়ুম-এ ইতি টানার নির্দেশ দিয়েছিল। সালওয়া জুড়ুম প্রকল্পে ছত্তীসগঢ়ের স্থানীয় জনজাতি যুবকদের বাহিনী তৈরি করে মাওবাদী দমনে নামানো হত। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী জোট প্রাক্তন বিচারপতি রেড্ডিকে প্রার্থী করার পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রশ্ন তুলেছেন, নিজের ‘বামপন্থী মতাদর্শ’ থেকে রেড্ডি সেই রায় দিয়েছিলেন কি না? তাঁর অভিযোগ, ওই রায় না দেওয়া হলে দু’দশক আগেই মাওবাদী সমস্যা শেষ হয়ে যেত।
ইতিহাস বলছে, সুপ্রিম কোর্ট থেকে অবসরের পরে ২০১৩-র মার্চে গোয়ার পর্রীকরের বিজেপি সরকার প্রাক্তন বিচারপতি রেড্ডিকে লোকায়ুক্ত নিয়োগ করে। লোকপাল আইন অনুযায়ী দুর্নীতি দমনের জন্য কেন্দ্রে লোকপাল ও রাজ্যে লোকায়ুক্ত নিয়োগ শুরু হয়। রেড্ডি অবশ্য সাত মাস পরে ব্যক্তিগত কারণে ইস্তফা দিয়েছিলেন। পর্রীকর তাঁকে পদত্যাগ না করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু রেড্ডি নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। বিরোধীদের প্রশ্ন, সে সময় কি বিজেপির সালওয়া জুড়ুমের রায়ের কথা মনে ছিল না? কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু কাদা ছেটাতে জানেন।’’
সোমবার অমিত শাহের মন্তব্যের সমালোচনা করে ২০ জন অবসরপ্রাপ্ত সুপ্রিম কোর্ট, হাই কোর্টের বিচারপতিরা বিবৃতি দিয়েছিলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, আদালতের রায়ের মধ্যে বিচারপতির ব্যক্তিগত মত খোঁজা ঠিক নয়। আজ আবার সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-সহ ৫৬ জন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বিবৃতি দিয়ে অন্য বিচারপতিদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতি না করার পরামর্শ দিয়েছেন।
এই ‘বামপন্থী মতাদর্শ’ নিয়ে প্রশ্নের মধ্যেই রেড্ডি সমর্থন জোগাড়ের কর্মসূচিতে বুধবার দুই বাম দল, সিপিএম ও সিপিআইদফতরে যাবেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)