Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Nirmala Sitharaman

ভারতে মুসলিমেরা সমস্যায় নেই, নির্মলার মন্তব্যে বিতর্ক

অর্থমন্ত্রীর মুখে এমন যুক্তি শুনে বিরোধীদের মন্তব্য, মুসলিমদের জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে বিপদ হিসেবে দেখিয়ে সঙ্ঘ পরিবার যে প্রচার চালায়, অর্থমন্ত্রীর কথায় তারই প্রতিফলন ফুটে উঠেছে।

Nirmala Sitharaman.

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:৫৬
Share: Save:

মুসলিমদের উপরে ভারতে হিংসা হলে তাদের জনসংখ্যা বাড়ছে কী ভাবে!

ওয়াশিংটন ডিসি-তে বসে আজ এমনই যুক্তি দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। মোদী জমানায় মুসলিমদের জীবনযাপন কঠিন হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ নিয়ে প্রশ্নের মুখে সীতারামনের উত্তর, ‘‘গোটা বিশ্বে মুসলিমদের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠী ভারতে রয়েছে। তাঁদের জনসংখ্যাও বাড়ছে।’’ এ বিষয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে নিজেই ভারতের তুলনা টেনেছেন অর্থমন্ত্রী। যুক্তি দিয়েছেন, ১৯৪৭-এর তুলনায় ভারতের মুসলিম জনসংখ্যা বেড়ে চললেও, পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা কমেছে।

অর্থমন্ত্রীর মুখে এমন যুক্তি শুনে বিরোধীদের মন্তব্য, মুসলিমদের জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে বিপদ হিসেবে দেখিয়ে সঙ্ঘ পরিবার যে প্রচার চালায়, অর্থমন্ত্রীর কথায় তারই প্রতিফলন ফুটে উঠেছে। সীতারামন শুধু মুসলিমদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির কথাই বলছেন। মোদী জমানায় সংসদ থেকে বিজেপি শাসিত রাজ্যের বিধানসভাগুলিতে যে মুসলিমদের উপস্থিতি প্রবল হারে কমেছে, সে কথা বলেননি। কারণ বিজেপি কোনও মুসলিমকে প্রার্থীই করে না। ওয়াশিংটনে পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকনমিক্স-এ ভারতের অর্থনীতি নিয়ে এক আলোচনায় অর্থমন্ত্রীকে ভারতের মুসলিমদের হাল নিয়ে নেতিবাচক আন্তর্জাতিক রিপোর্ট ও সাংসদ পদ খারিজ হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে বিরোধীদের অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তখনই অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘‘যদি এই ধারণা সত্যি হয়, বা বাস্তবেই রাষ্ট্রের মদতে মুসলিমদের জীবনযাপন কঠিন হয়ে উঠে থাকে, তা হলে কি ১৯৪৭-এর তুলনায় মুসলিমদের জনসংখ্যা বাড়ত? ১৯৪৭-এ একই সময় তৈরি হওয়া পাকিস্তানে সমস্ত সংখ্যালঘুর সংখ্যা কমছে। মুসলিমদের মধ্যে শিয়া, মোহাজিরদের সংখ্যা কমছে। ভারতে সব সম্প্রদায়ের মুসলিমেরা ব্যবসা করছেন, তাঁদের ছেলেমেয়েরা শিক্ষা পাচ্ছে, বৃত্তি পাচ্ছে।’’ অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ থেকে কোনও সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা কমছে বা তাঁদর উপরে বেশি মাত্রায় ঋণের বোঝা চেপেছে, এমন নয়। যাঁরা ভারত সম্পর্কে নেতিবাচক রিপোর্ট তৈরি করেন, তাঁদের বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই।

কংগ্রেস সাংসদ প্রদ্যুৎ বরদলৈ বলেন, ‘‘কোনও বিশেষ জনগোষ্ঠীর জনসংখ্যা চড়া হারে বৃদ্ধি পেলে তা থেকে মানব উন্নয়ন প্রমাণিত হয় না। বরঞ্চ বোঝা যায় ওই সম্প্রদায় মানব উন্নয়নের সমস্ত সূচকে পিছিয়ে রয়েছে।’’ এমআইএম নেতা আসাদুদ্দিন ওয়াইসি বলেন, ‘‘বিশ্বগুরুর অর্থমন্ত্রীর কাছে পাকিস্তানই মাপকাঠি। আর কত দিন মুসলিমদের পাকিস্তানের সঙ্গে জুড়ে দেখা হবে। লোকসভায় বিজেপির এক জনও মুসলিম সাংসদ নেই। তারা এই বিষয়টিকেই পদক হিসেবে বুকে ঝুলিয়ে ঘুরছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nirmala Sitharaman controversy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE