Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
RSS

বিনা ওষুধে মারা গেলেন সঙ্ঘকর্মী

কিন্তু করোনার সময়ে অমিত এবং তাঁর পরিবার যখন ওষুধের জন্য হাহাকার করে মোদী এবং যোগীর উদ্দেশে টুইট করেন, কোনও নড়াচড়া দেখতে পাওয়া যায়নি কোনও সরকারি দফতর থেকে

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২১ ০৫:৪১
Share: Save:

খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে ‘ফলো’ করেন! নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট নিয়ে তাই গর্বের অন্ত ছিল না আগরার নিবেদিত প্রাণ আরএসএস কর্মী অমিত জায়সবালের। মোদী বা তাঁর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সম্পর্কে কোনও সমালোচনা সহ্য করতে পারতেন না বিলবোর্ড এবং ব্যানার তৈরির এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। ডিসেম্বরে অযোধ্যায় গিয়ে পুজোপাঠও করে আসেন প্রস্তাবিত রামমন্দিরের চত্বরে।

কিন্তু করোনার সময়ে অমিত এবং তাঁর পরিবার যখন ওষুধের জন্য হাহাকার করে মোদী এবং যোগীর উদ্দেশে টুইট করেন, কোনও নড়াচড়া দেখতে পাওয়া যায়নি কোনও সরকারি দফতর থেকে। সাড়া দেয়নি প্রধানমন্ত্রী বা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দফতর। ১৯ এপ্রিল অমিত এবং তাঁর মা দুজনেই কোভিড আক্রান্ত হন। শেষ পর্যন্ত সময়মতো চিকিৎসার অভাবেই মারা গেলেন অমিত।

আগরায় কোনও হাসপাতালে বেড না-পেয়ে তাঁদের ভর্তি করা হয়েছিল মথুরায়। এক সপ্তাহ পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতাল জানায়, অবিলম্বে রেমডেসিভিয়ারের ব্যবস্থা করতে হবে। তন্নতন্ন করে খুঁজে না-পেয়ে তাঁর বোন সোনু অমিতের টুইটার থেকে আবেদন জানান মোদী, যোগীকে। কিন্তু কারও সাড়া মেলেনি। মথুরার সেই হাসপাতালে মারা গেলেন আরএসএসের এই একনিষ্ঠ কর্মী। “যদি ওর সামনে কেউ মোদী বা যোগীর সমালোচনা করত, তেড়ে মারতে যেত। গোটা জীবনটাই মোদীর প্রচারে কাটিয়ে দিয়েছে অমিত। আমি টুইটারে ভিক্ষা করেছিলাম, শুধু ওই ওষুধটুকু চেয়ে,” জানাচ্ছেন সোনু। অমিত জায়সবালের মৃত্যুর পরে তাঁর গাড়ি থেকে মোদীর পোস্টার টেনে ছিঁড়ে ফেলেছে ক্ষুব্ধ পরিবার।

এমন ঘটনা প্রথম নয়, এবং শেষও নয় বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। কোভিড কোনও দল বা ধর্মের বাছবিচার করছে না। বিজেপি-আরএসএসের ভিতরেও অক্সিজেন এবং বেড নিয়ে হাহাকার দিল্লি এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায়। আরএসএস-এর মুখপাত্রের প্রাক্তন সম্পাদক তরুন বিজয় পর্যন্ত অসহায় হয়ে টুইট করেছেন সম্প্রতি। ফরিদাবাদ হ্যাশট্যাগ দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘আমার বড় ভাইয়ের ৯১ বছর বয়স। প্লাজমা নেই, অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই। হাসপাতালের ডাক্তাররা বলছেন, বাড়ি নিয়ে যান। আমরা কোন দিকে এগিয়ে চলেছি? যাদের কোনও যোগাযোগ নেই, যাদের উঁচুতলায় জানাশোনা নেই, যাঁরা সাধারণ মানুষ….।’ তাঁর এই টুইটের পরে অবশ্য কাজ হয়। মোদী সরকারকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু সবাই তো আর তাঁর মতো প্রবাবশালী নন। দল ও সঙ্ঘের কর্মীদের আতঙ্ক এবং হতাশাকে তাই আড়াল করা যাচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP RSS COVID19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE