Advertisement
১৮ মে ২০২৪
coronavirus

মহারাষ্ট্রে আক্রান্ত ৪০ হাজার, দেশে ফের সক্রিয় রোগী ৫ লক্ষের গণ্ডি ছাড়াল

১০ নভেম্বর শেষবারের জন্য সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৫ লক্ষের বেশি ছিল। তার পর থেকে তা কমেছিল। সোমবার আবার তা ৫ লক্ষ ছাড়াল।

দেশের কোভিড পরিসংখ্যান।

দেশের কোভিড পরিসংখ্যান। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২১ ১১:১৪
Share: Save:

দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আছড়ে পড়া অব্যাহত। যার জেরে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। সোমবার দেশে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৮ হাজার ২০ জন। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই আক্রান্ত ৪০ হাজার ৪১৪ জন। অর্থাৎ দেশের মোট নতুন আক্রান্তের প্রায় ৬০ শতাংশ এসেছে এই রাজ্য থেকে। অতিমারি শুরুর পর থেকে এক দিনে এত সংখ্যক মানুষ কখনও আক্রান্ত হননি মহারাষ্ট্রে। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে এই লাগামছাড়া পরিস্থিতি নতুন করে চিন্তায় ফেলেছে সে রাজ্যের প্রশাসনকে। সঙ্গে দেশের সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৫ লক্ষ ছাড়িয়েছে।

করোনা সংক্রমণ রুখতে মহারাষ্ট্রে রবিবার থেকে জারি হয়েছে রাত্রিকালীন কার্ফু। সে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ইতিমধ্যেই জারি হয়েছে লকডাউনের বিধিনিষেধ। কিন্তু এত কিছু করেও বাগে আনা যায়নি সংক্রমণ। তাই এ বার দ্বিতীয় বারের জন্য পূর্ণ লকডাউনের কথা চিন্তা করছে মহারাষ্ট্র সরকার। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে ইতিমধ্যেই অফিসারদের লকডাউন জারির জন্য বিস্তারিত পরিকল্পনা করার নির্দেশ দিয়েছেন। কোভিডের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে মন্ত্রীদের নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্ধব একটি বৈঠক করেছেন বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। মুম্বই শহরেও আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শুধুমাত্র মুম্বইতেই নতুন আক্রান্ত ৬ হাজার ৯২৩ জন যা এখনও অবধি সর্বোচ্চ। মুম্বইয়ের মেয়র জানিয়েছেন, সে শহরের কোনও আবাসনে ৫ বা তার বেশি সংখ্যক মানুষ কোভিড আক্রান্ত হলেই সেই আবাসন সিল করে দেওয়া হবে।

মহারাষ্ট্রের পাশাপাশি চিন্তা বাড়াচ্ছে দেশের আরও কয়েকটি রাজ্য। যেমন কর্নাটক। সেখানে দৈনিক আক্রান্ত ৩ হাজার ছাড়িয়েছে। পঞ্জাবে তা ২ হাজার ৮৭০। গুজরাত, মধ্যপ্রদেশে, ছত্তীসগঢ় এবং তামিলনাড়ুতেও দৈনিক আক্রান্ত ২ হাজারের বেশি। হরিয়ানা, রাজস্থান, অন্ধ্রপ্রদেশেও তা এক হাজার ছাড়িয়ে বাড়ছে। দিল্লি এবং উত্তরপ্রদেশেও গত এক সপ্তাহ বেড়েছে আক্রান্ত। তুলনায় কেরলের আক্রান্ত গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দু’হাজারের আশপাশেই রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গেও গত কয়েক দিনে সংক্রমণ বৃদ্ধি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। এক সময় ২০০-র আশপাশে নেমেছিল এ রাজ্যের দৈনিক আক্রান্ত। গত ২৪ ঘণ্টায় তা ৮২৭।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন আক্রান্ত ৬৮ হাজার ২০ জন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন ১ কোটি ২০ লক্ষ ৩৯ হাজার ৬৪৪ জন। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ২৯১ জনের। মোট ১ লক্ষ ৬১ হাজার ৮৪৩ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনাভাইরাস। দেশে মৃত্যুর হার ১.৩৪ শতাংশ। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৯ লক্ষ ১৩ হাজার ৩১৯ জনের। যা গত ৫ দিনের তুলনায় কম। আক্রান্ত বৃদ্ধির জেরে বেড়েছে সংক্রমণ হারও। গত ২৪ ঘণ্টায় তা ৭.৪৫ শতাংশ। দৈনিক আক্রান্তের বৃদ্ধির জেরে দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা রোজদিন বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩৫ হাজার বেড়েছে। এখন দেশে মোট সক্রিয় রোগীর সংখ্যা হল ৫ লক্ষ ২১ হাজার ৮০৮ জন। ১০ নভেম্বর শেষবারের জন্য সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৫ লক্ষের বেশি ছিল। তার পর থেকে তা কমেছিল। সোমবার আবার তা ৫ লক্ষ ছাড়াল।

এক দিকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বেসামাল করছে পরিস্থিতি। বিশেষজ্ঞদের মতে, টিকাকরণের পাশাপাশি এ সময় সবথেকে বেশি জরুরি জনসাধারণের সতর্কতা। মুখে মাস্ক এবং ভিড় এড়িয়ে চলার জন্য বারবার অনুরোধ করা হচ্ছে। কিন্তু ‘কা কস্য পরিবেদনা’। বাস্তবে দৈনন্দিন জীবনে রাস্তাঘাটে দেখা মিলছে ঠিক এর উল্টো চিত্রের। ভিড় ট্রেনে-বাসে অধিকাংশের মুখে নেই মাস্ক। কারও কারও মাস্ক থাকলেও, তা দিয়ে ঢাকা নয় নাক-মুখ। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও উত্তর ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে দোল উৎসব পালনের জন্য গাদাগাদি ভিড়। একে কোভিডের বাড়বাড়ন্ত। তার পর উপর জনগণ যদি সজাগ না হন, তা হলে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশের অবস্থা গত বছরের থেকেও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

COVID-19 coronavirus Coronavirus in India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE